অনলাইন
চার হাজার কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশনের নিন্দা
স্টাফ রিপোর্টার
(৪ ঘন্টা আগে) ১৪ মে ২০২৫, বুধবার, ৮:০৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:২৫ অপরাহ্ন

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে গত চার মাসে প্রায় চার সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতি, বদলি সংযুক্তিসহ হয়রানিমূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভুক্তভোগী কর্মকর্তা কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশন-বাপবিএ। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি দাবি করে, শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো জরুরিসেবা খাতের সংস্কার চাওয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড- বিআরইবি কর্তৃক বিনা নোটিশে ২৯ জনকে চাকরিচ্যুত, মামলা-রিমান্ড-গ্রেপ্তার, বরখাস্ত ও সংযুক্তির পাশাপাশি গত চার মাসে প্রায় চার হাজার সহকর্মীকে শাস্তিমূলকভাবে নিজে জেলা হতে কয়েকশত কিলোমিটার দূরত্বে বদলি করা হয়েছে। এরমধ্যে হয়রানিমূলক বদলির শিকার লাইন ক্রু প্রায় ৬৭৩ জন, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ৫৮৯ জন, ইসি ২৯০ জন, পিউসি ১২১ জন, বিলিং সুপারভাইজার ৩০৮ জন, এজিএম ৫৮০ জন , ডিজিএম ১৭৯ জন, সিনিয়র জিএম/জিএম ৩৬ জন, অন্যান্য ৯০৭ জনসহ সর্বমোট ৩৬৮৩ জন। তাদের দাবি, সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই আন্দোলনের অজুহাতে বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে শাস্তিমূলকভাবে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে এই বদলি করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাপবিএ নেতারা অভিযোগ করেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)’র বিদ্যমান দীর্ঘদিনের সংকট সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত/ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সমিতির জনবলের ওপর আরইবির দমনপীড়ন ও নির্যাতন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তারা বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ও অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন এবং সকল অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণের দাবিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারী মাস থেকে বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, স্মারকলিপি প্রদানসহ, আন্দোলন করে আসছে সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরইবি’র অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধেও তদন্ত দাবি করেন তারা। দাবির প্রেক্ষিতে সরকারও বিভিন্ন সময় কমিটি গঠনসহ নানা পদেক্ষেপ নেয়। কিন্তু সরকারের নেওয়া সংস্কার পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করতে আরইইবি বরাবরই নানা প্রহসনমুল পদক্ষেপ গ্রহন করে আসছে।
তাদের অভিযোগ সবশেষ গত ১২ই মে তারিখেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক ৯০ জন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (আইটি) সহ আরও ৩৯৫ জন লাইনক্রুকে হয়রানিমূলক বদলি আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে কর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে এবং ঝড় বৃষ্টির মৌসুমে বিদ্যুৎকর্মীদের এমন গণবদলি নজিরবিহীন এবং চরম অমানবিক দাবি করে পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ব্যাপক জনবলের ঘাটতি রয়েছে, স্বল্প জনবল দিয়ে বর্তমানে কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম ও তীব্র তাপদাহে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা চালু রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, সেখানে এই ধরনের গণ-বদলির কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রাহকসেবা চরমভাবে বিঘ্নিত হওয়ার সমূহসম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। প্রহসনমূলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত গণবদলির কারণে নতুন লাইনম্যানদের মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এমতাবস্থায়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মীর যৌক্তিক দাবিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল, সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্তদের স্বপদে বহালসহ বিশেষজ্ঞ কমিটির পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারের রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানান তারা। একইসাথে সকল চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণসহ বর্তমান ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে লাইনক্রুদের বদলি আদেশ বাতিল করে সমিতির সুষ্ঠু ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বাপবিবোর্ডের চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বিদ্যুৎ উপদেষ্টাসহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভুক্তভোগী এজিএম মনির হোসেন, ভুক্তভোগী কর্মী গোলাম মোস্তফা (এমআরসিএম), মইনুল ইসলাম (লাইন টেকনিশিয়ান), হাসানুজ্জামান (জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার) প্রমুখ।
পাঠকের মতামত
REB কে বিলুপ্ত করে টেকসই বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা করা উচিত ।
কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা তো উল্লেখ নেই! নিশ্চয়ই কোন ঝামেলার ফলাফল।