অনলাইন
বৃটেনে নতুন অভিবাসন নীতি
নিজ দলের এমপিদের তোপের মুখে স্টারমার
আরিফ মাহফুজ, লন্ডন থেকে
(৫ ঘন্টা আগে) ১৪ মে ২০২৫, বুধবার, ৭:৫৮ অপরাহ্ন

নতুম অভিবাসন নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের পর কঠিন সমালোচনায় পড়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। অভিবাসন আইন পরবর্তন সংক্রান্ত ভাষণ ও শ্বেতপত্র প্রনয়ণে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। নিজ দলের এমপিরাও ছাড়ছেন না তাঁকে নিয়ে সমালোচনা করতে। সামাজিক মাধ্যম এক্স -এ এমপি সহ অনেকেই স্টারমারের নতুন ইমিগ্রেশন নীতির কঠোর সমালোচনা করে পোস্ট করেছেন।
অভিবাসন আইন পরবর্তন সংক্রান্ত ভাষণে নেট মাইগ্রেশন নিয়ন্ত্রণে কঠোর পরিকল্পনার পক্ষে কথা বলেছেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কঠোর অভিবাসন নীতি ছাড়া যুক্তরাজ্য অচেনা মানুষদের দ্বীপে পরিণত হতে পারে। তার বক্তব্যের পর নিজ দলের এমপি ও বিভিন্ন শিল্পখাতের ব্যবসায়ীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ও এর কড়া সমালোচনা করছেন। অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে নোংরা মানসিকতার লোক বলে মন্তব্য করেছেন, তাঁর বক্তব্যকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন স্টারমার। এসময় তিনি বলেন অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে বিশাল অবদান রাখে, আমি তা কখনোই অস্বীকার করবো না। তবে যারা বৃটেনে আসবেন, তাদের ভাষা শিখতে ও সমাজে মিশে যেতে হবে। জাতি পরিচালিত হয় নিয়মের মাধ্যমে, সেগুলো লেখা হোক বা অলিখিত যা আমাদের মূল্যবোধ ও পারস্পরিক দায়িত্ব নির্ধারণ করে। বৈচিত্র্যপূর্ণ এক জাতি হিসেবে, আমরা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছি।
এসময় স্টারমার তার নির্বাচনী ইশতেহারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আমরা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা পূরণ করতে এগিয়ে যাচ্ছি। অভিবাসন কমানো, দক্ষতা বাড়ানো, ব্রিটিশ শ্রমিকদের সুরক্ষা এবং মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা আমাদের দায়িত্ব।
লেবার এমপি জারাহ সুলতানা স্টারমারকে নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন। প্রতিক্রিয়ায় জারাহ বলেন, স্টারমার পাওয়েলের বক্তব্য অনুকরণকারী। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে জারাহ তাঁর এক্সে লেখেন "ঐ বক্তব্য (পাওয়েলের বক্তব্য) ঘৃণা ও বিভাজনের সূচনা করেছিল। এখন তা পুনরাবৃত্তি করা লজ্জার।"
গ্রিন পার্টির নেতা হতে আগ্রহী জ্যাক পোলানস্কি ব্লুস্কাইতে লেখেন, স্টারমারের শব্দচয়ন সুবোধ্যভাবে পাওয়েলীয়।
লেবার এমপি সারাহ ওয়েন বলেন, ডানপন্থার পেছনে ছুটতে গিয়ে আমরা অন্ধকার পথে হাঁটছি। ‘অচেনা দ্বীপ’ এ পরিণত না হতে হলে আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে, মানুষের জীবনে, সমাজে।
নাদিয়া উইটোম, লেবার এমপি বলেন- অভিবাসন নিয়ে এমন ভীতিকর বক্তব্য কেবল বিভাজনই বাড়ায়, এটা বিপজ্জনক।
সরকারের নতুন ইমিগ্রেশন শ্বেতপত্রে ভিসা নিয়ন্ত্রণ, ইংরেজি ভাষার পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত নানা পরিকল্পনা উঠে এসেছে। হোম অফিসের এক মূল্যায়নে দেখা গেছে, এসব পরিবর্তনের ফলে বছরে প্রায় ১ লক্ষ অভিবাসী কম আসবে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ১২ মাসে যুক্তরাজ্যে নেট মাইগ্রেশন ছিল ৭,২৮,০০০। পূর্ববর্তী কনজারভেটিভ সরকারের সময় তা ৯,০০,০০০ ছাড়িয়ে যায়।
স্টারমার বলেন, বর্তমান ব্যবস্থা ব্যবসায়ীদের কম মজুরির বিদেশি কর্মী আনতে উৎসাহিত করছে, যা দেশের তরুণদের অবমূল্যায়ন করে। বিভিন্ন খাতে অবদান রাখা অভিবাসীরা—যেমন এন এইচ এস, প্রকৌশল খাত, স্বেচ্ছাসেবীদের দ্রুত স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দেওয়া হবে। যদিও নাগরিকত্ব পাওয়ার সময়সীমাও ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করার প্রস্তাব রয়েছে হোয়াইট পেপারে।