ঢাকা, ১৪ মে ২০২৫, বুধবার, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

পাকেরহাট সরকারি কলেজ

দীর্ঘদিন অনুপসি'ত থেকেও বেতন তুলছেন অধ্যক্ষ

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
১৪ মে ২০২৫, বুধবার

দিনাজপুরের খানসামায় পাকেরহাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সাহাদাত আলী সবুজ দীর্ঘদিন ধরে কর্মস'লে অনুপসি'ত রয়েছেন। এতে কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স'বিরতা, ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কর্মস'লে অনুপসি'ত থাকলেও নিয়মিত উত্তোলন করছেন বেতন-ভাতা। ফলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, সাহাদাত পূর্বে উপজেলার টংগুয়া হাসনাবাগ দ্বি-মুখী ফাযিল মাদ্রাসায় প্রভাষক পদে চাকরি করতেন। তিনি ২০১৬ সালের ১লা ডিসেম্বর পাকেরহাট কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। কলেজটি ২০১৮ সালের ২৫শে আগস্ট সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সরকারি উন্নয়ন বরাদ্দ বণ্টন, শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কাজে জড়িত ছিলেন। ২০০৯ সালে তার মামা এএইচ মাহমুদ আলী নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হলে তিনি সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন এবং পরবর্তী সময়ে ভেড়ভেড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি চাকরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও তিনি একাধিক জাতীয় ও স'ানীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা পালন করেছেন। ২০২৪ সালের ২৩শে অক্টোবর বিএনপি’র কার্যালয় ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির অভিযোগে থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সাহাদাত আলী সবুজ। এ মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকে তিনি কলেজে অনুপসি'ত। তবে নিয়মিত বেতন উত্তোলনসহ গোপনে কার্যক্রম, আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আরও জানা গেছে, অধ্যক্ষের অনুপসি'তিতে অন্তত দেড় হাজার শিক্ষার্থীর কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
কলেজের বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ই আগস্টের পর থেকে অধ্যক্ষ স্যারকে আর কলেজে দেখিনি। ক্লাস না হওয়ায় কলেজে এসে সময় নষ্ট হয়। পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি ভর্তি কমিটি, ফরম পূরণ, অভ্যন্তরীণ ও ইনকোর্স পরীক্ষা এবং শৃঙ্খলাসহ সার্বিক প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে অধ্যক্ষ না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকে, জরুরি কাগজে স্বাক্ষরের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কেউ কেউ গোপনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্বাক্ষর নিচ্ছেন।
শিক্ষক ও কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়মিত কলেজে না আসায় শ্রেণিতে পাঠদান ও দাপ্তরিক কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সারাক্ষণ মোবাইলে নির্দেশনা নিতে হয়।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মুঠোফোনে বলেন, আমি বাইরে আছি। তবে দাপ্তরিক কাজ তো চলমান রয়েছে। এতদিন কলেজে অনুপসি'ত থাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ছুটিতে আছি। তবে আগস্টের পর এত দীর্ঘ সময় ছুটিতে থাকার বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা না দিয়ে ফোন কেটে দেন। খানসামা থানার ওসি নজমুল হক বলেন, ওই অধ্যক্ষ একজন এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক আমির আলী বলেন, কলেজ পরিদর্শন ও তদন্ত করে তারপর পরবর্তী ব্যবস'া গ্রহণ করা হবে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status