বাংলারজমিন
নোয়াখালীতে পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রীর নগ্ন ছবি ছড়ানোর অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
১৪ মে ২০২৫, বুধবারনোয়াখালীর সদর উপজেলার একটি গ্রামে যৌতুকের মামলা না তোলায় পুলিশ কনস্টেবল স্বামী তার স্ত্রীর বিবস্ত্র ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই গৃহবধূ লজ্জায়-অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। অভিযুক্ত হাসান মাসুদ (২৭) জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার মুজাহিদপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। মাসুদ বর্তমানে লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইনে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
জানা যায়, ২০২২ সালে তারা ভালোবেসে বিয়ে করে। মাসুদ বিয়ের পর স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে মারমুখী আচরণ করতো স্বামীর পরিবারের সদস্যরা। তাই বাধ্য হয়ে সে বাবার বাড়িতে থাকতো। মাসুদ চাকরিতে পদোন্নতি ও পুলিশ ক্যান্টিনে ব্যবসা করার নাম করে কৌশলে কয়েক ধাপে ৬ লাখ টাকা স্ত্রীর থেকে হাতিয়ে নেয়।
টাকা দেয়ার স্থিরচিত্রও সংরক্ষিত রয়েছে। এরপর আরও ৩ লাখ টাকা দাবি করে। স্বামী কর্মস্থলে থাকায় স্ত্রীকে ইমু, মেসেঞ্জারে কল করে আপত্তিকর অবস্থায় ভিডিও কলে আসতে বাধ্য করতো। এরপর স্ত্রীর বিশেষ মুহূর্তের ছবি, ভিডিও নিজের মুঠোফোনে ধারণ করে রাখে।
ভুক্তভোগী জানান, একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ২০২৩ সালের ৩রা অক্টোবর ৩নং আমলী আদালত নোয়াখালীতে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মাসুদ ও তার বোন নাজমা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা আদালত থেকে মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি দেয়। মামলা তুলে না নেয়ায় মাসুদ, তার বোন ফেরদৌসী বেগম ও ভাই জহিরুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন ফেক টিকটক, ফেসবুক আইডি থেকে তার বিবস্ত্র ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিকার চেয়েও পাননি। একপর্যায়ে সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে স্বামীসহ চারজনকে আসামি করে মামলা দেন। আদালত নোয়াখালী সিআইডিকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেয়। নোয়াখালী সিআইডি’র তাৎকালীন উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম উল্টো ভুক্তভোগী নারীর প্রতিকূলে প্রতিবেদন দেয়। এ ছাড়া ভুক্তভোগীর পরিবার ও তার মামলার সাক্ষীদেরসহ ১৪ জনকে আসামি করে পুলিশ সদস্যের বোন বাদি হয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাসান মাহমুদ বলেন, এ নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না। যা হবার আদালতে হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন বলে জানান। লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকতার হোসেন মানবজমিনকে বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। হাসান মাহমুদ নামে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে লক্ষ্মীপুরে কর্মরত রয়েছে বলে জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।