বাংলারজমিন
নোয়াখালীতে যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
১৪ মে ২০২৫, বুধবারনোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় যুবলীগ কর্মী জাকির হোসেন (৪০) কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাকির সোনাইমুড়ী উপজেলা ৮নং সোনাপুর ইউনিয়নের তিনতেড়ী এলাকার হাসানপুর গ্রামের দূর্গা পাটোয়ারী বাড়ির রফিক মিয়ার ছেলে। তিনি একই ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় কর্মি ছিলেন।
পুলিশ ও স'ানীয় সূত্রে জানা যায়, জাকির আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আমলে প্রভাবশালী যুবলীগ কর্মি ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। তাবলিগ শেষে মুখে দাঁড়ি রেখে কয়েক মাস আগে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এলাকায় ঢোকেন। এরপর তিনি এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন। জাকির প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করে ১২শত টাকা। একই এলাকার ল্যাংড়া নজরুল, তুহিন, সাদ্দামসহ ১০-১২ জন প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করেন ১৬শ’ টাকা। এ নিয়ে ৮-১০ দিন আগে প্রতিপক্ষের লোকজনের সাথে তার বিরোধ তুমুল আকার ধারণ করে। গত দুদিন আগে জাকিরের মাটি কাটার ভেকু মেশিন পুলিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর সোমবার দুপুরের দিকে মাটির দাম নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে তাকে তুলে নিয়ে যায় উপজেলার কোটবাড়িয়া এলাকায়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেখান থেকে পাঁচ জন ব্যক্তি সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে লাশ পাশ্ববর্তী বেগমগঞ্জ উপজেলার পলোয়ান পোল এলাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে খাল পাড়ে সিএনজি থেকে লাশ ফেলে পালানোর সময় স'ানীয়রা ধাওয়া দিয়ে ২জনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের লোকজন তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। বিএনপির বাবু নামে একজনকে স'ানীয়রা আটক করে। খবর পেয়ে ঘটনাস'লে গিয়ে জানতে পারি আমার স্বামী মারা গেছে। জানতে চাইলে অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, বিএনপি কোন নির্যাতন, হত্যাকান্ডকে সমর্থন করেনা। তবে এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইসহাক খন্দকারের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সোনাইমুড়ি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার রুহুল আমিনকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিলে তিনি বলেন জামাত, বিএনপি পরিকল্পিতভাবে যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনকে নির্মম, নৃশংস ও বর্বোরোচিতভাবে খুন করে। বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.হাবিবুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ রেখে পালানোর সময় স'ানীয়রা দুজনকে আটক করে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি করে। মরদেহ একই হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম মানবজমিনকে বলেন, জাকির একজন চিহিৃত সন্ত্রাসী ছিল। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় ডাকাতি, নারী শিশু নির্যাতনসহ ১১টি মামলা রয়েছে। এছাড়া বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ডাকাতি, ছিনতাইসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে।