খেলা
‘বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মানে পুরো দেশেরই অধিনায়ক’
স্পোর্টস রিপোর্টার
১২ মে ২০২৫, সোমবার
আসন্ন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হবে লিটন কুমার দাসের। টি-টোয়েন্টি দলে নাজমুল হোসেন শান্তর স্থলাভিষিক্ত হলেন তিনি। কয়েকদিন আগে শান্ত বলেছিলেন বাংলাদেশের চেয়ে অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কত্ব করা সহজ। গতকাল জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারি কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও একই কথা বললেন। অধিনায়ককে সহযোগিতা করার কথা মনে করিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মানে পুরো দেশেরই অধিনায়ক। সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের আগে হোম অফ ক্রিকেট মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ক্যাম্প করছে টাইগাররা। গতকাল অনুশীলনের আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন সালাউদ্দিন। সেখানে বাংলাদেশ দলে অধিনায়কত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মানে পুরো দেশেরই অধিনায়ক, এটা মানতে হবে। খুবই কঠিন কাজ। ওকে সাপোর্ট করতে হবে সবার। অধিনায়কই দলকে চালাবে। তাই পূর্ণ সমর্থন দিতে হবে। স্বাধীনতা দিলে সে ভালো করবে। বাইরে থেকে মনে হতে পারে অধিনায়কত্ব করা সহজ। আসলে তা নয়।’ লিটনের ক্রিকেট ব্রেইন নিয়ে মুগ্ধ সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘লিটন খুব ভালো ট্যাকটিশিয়ান। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে খুব ভালোভাবে এনালাইসিস করে। দুর্বলতা বলা যায়, সামপ্রতিক অফফর্ম। লিটনকে আমরা সবসময় অন্যভাবে দেখি। আমরা মনে করি সে কথা কম বলে। তবে কাজ থেকে যারা মিশে, তাদের সঙ্গে সবকিছুই করে। একসময় সাকিবকে নিয়ে এই ভুল ধারণাটা ছিল। বাইরে থেকে মনে হতে পারে যে, তারা হয়তো অনেক কিছুই ঠিক মতো করে না। তবে একজন সতীর্থ ও অধিনায়ক হিসেবে যা কিছু করার, তার চেয়ে বেশিই সে করে।’ লিটনের জন্য অধিনায়কত্বে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে নিজের ফর্ম। তবে সালাউদ্দিন শুধু লিটন নয়, দলের সবাইকে নিয়েই চিন্তিত। তিনি বলেন, ‘দুর্বলতার কথা যদি বলেন, এখন যেহেতু কিছু দিন সে রান করেনি। এটা হয়তো আপাতত তার দুর্বলতা আছে। তবে আমি মনে করি সে এটা থেকে বেরিয়ে আসবে। তবে সবারই উন্নতি করার অনেক জায়গা আছে। ব্যাটসম্যান হিসেবে, মানুষ হিসেবে। লিটনকে আগে যা দেখেছি, এর সঙ্গে সবশেষ সিরিজে আকাশপাতাল পার্থক্য দেখেছি। সে নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।’
অধিনায়ক হিসেবে চাপ নিতেই হবে, তবে লিটনের কাজ সহজ করার উপায় বাকিদের পারফর্ম করা। সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে পারফর্ম করি না। ভালো পারফর্ম করলে অধিনায়কত্ব করা সহজ হতো। একইসঙ্গে আমরা অনেক ইমোশনাল। তবে অধিনায়ক হিসেবে সব চাপই নিতে হবে। সব কিছু হ্যান্ডেল করতে হবে। পারফরম্যান্সের গ্রাফ ওপরে উঠলে সহজ হবে তার জন্য।’ লিটনকে সমালোচনা সামলানো শেখাচ্ছেন সালাউদ্দিন, ‘একটা জিনিস শেখানোর চেষ্টা করছি। এখানে দায়িত্ব নেওয়ার সময় সুনামের সঙ্গে সমালোচনাও নিয়ে এসেছি। এটা হ্যান্ডেল করাও শিখতে হবে। তার এসব শিখতে হবে।’ টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং পজিশন ম্যাটার করে না বলে মনে করেন সালাউদ্দিন। এসব নিয়েও কাজ করছেন তারা। টাইগারদের এই সহকারী কোচ বলেন, সমস্যা আসলে মাথায়, সেটা কীভাবে উন্নত করা যায়, তা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি করতে হবে। কে আগে কোথায় ব্যাটিং করেছে সেটা ম্যাটার করে না। দলের জন্য যেটা হেল্পফুল, সেটাই করতে হবে। সেটা ভালো না লাগলে আপনার এখানে খেলার দরকার নেই।’ সাকিব আল হাসান অবসর নিয়েছেন, দলে নেই মেহেদী হাসান মিরাজও। জেনুইন কোনো অলরাউন্ডার না থাকায় একাদশ সাজাতে ভুগতে হবে বলে মনে করেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জেনুইন অলরাউন্ডার না থাকায় কম্বিনেশন নিয়ে আমাদের আরও কিছু দিন ভুগতে হবে। অলরাউন্ডার যারা আছে, তাদের ওপরে নিয়ে আসতে হবে। কমবেশি ব্যাটিং যারা পারে, তাদের ওপর ফোকাস আছে আমাদের। তাহলে ব্যালেন্সটা হয়তো ভবিষ্যতে ভালো হবে। হোয়াইট বলে অলরাউন্ডার না থাকলে দল সাজানো খুব কঠিন।’ মিরাজের না থাকা নিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘মিরাজ বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন। সে খেলতে পারলে ভালো হতো। কখনও কখনও কম্বিনেশনের কারণে হয়তো সেরা ক্রিকেটারকেও বাদ দিতে হয়। আমাদের তো বোলিংও দরকার আছে। সে হয়তো দ্রুতই ব্যাক করবে।’