বাংলারজমিন
লালমোহনে ফিরেছে স্বস্তি
লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
১০ মে ২০২৫, শনিবারভোলার লালমোহন পৌরসভা কয়েক মাস আগেও কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল প্রথম শ্রেণিতে। বেহাল সড়ক, অপ্রতুল ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন এই পৌরসভার নাগরিকরা। তবে, বর্তমানে সে চিত্র বদলে যাচ্ছে। এখন শুরু হয়েছে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। বিশেষ করে পৌরসভার সড়কগুলো ছিল নাগরিকদের গলার কাঁটা। এখন একে একে সেই সড়কগুলোতে লাগছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এতে স্থানীয় নাগরিক, পথচারী ও যানবাহন চালকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে স্বস্তি।
জানা গেছে, পৌর এলাকায় প্রায় ৪৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। যার মধ্যে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল অন্তত ২৭ কিলোমিটার সড়ক। তবে, এরইমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ১৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে। এ ছাড়া, বাকি ১০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সমাজকল্যাণ সমিতি সড়ক, আব্দুস শহিদ হাওলাদার সড়কসহ আরও কয়েকটি ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি সড়ক ইতিমধ্যেই সংস্কার শেষ হয়েছে। এ ছাড়া, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোবারক আলী হাওলাদার সড়ক, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পাটওয়ারী সড়কসহ পৌর এলাকার আরও কয়েকটি সড়কের সংস্কার কাজ চলমান। অপেক্ষমাণ রয়েছে দীর্ঘদিনের বেহাল লঞ্চঘাট সড়ক ও করিমরোড থেকে নয়ানীগ্রামের শেষ সীমানা বদ্দি বাড়ি সংলগ্ন ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটিসহ আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কারের কাজ। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের ভেতরই পৌর এলাকার অধিকাংশ বেহাল সড়কের সংস্কার শেষ হবে।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোবারক আলী হাওলাদার সড়ক এলাকার বাসিন্দা মো. আকবর হোসেন বলেন, এ সড়কটি পৌরশহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কের ভেতর একটি। এখান দিয়ে প্রতিনিয়ত পার্শ্ববর্তী কালমা ইউনিয়নসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কয়েকশ’ মানুষ ও যানবাহন যাতায়াত করছে। বর্তমানে সড়কটির সংস্কার কাজ চলছে। মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে বর্তমান পৌর প্রশাসক এই সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়ায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সম্পন্ন হওয়া সমাজকল্যাণ সমিতি সড়কের অটোরিকশাচালক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, এই সড়কটিতে আগে বৃষ্টি হলেই পানি জমে টইটম্বুর হয়ে থাকতো। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো আমাদের মতো চালকসহ স্থানীয়দের। তবে, সম্প্রতি এই সড়কটি মেরামত করা হয়েছে। যার ফলে এখান দিয়ে যাতায়াত করতে সুবিধা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. শাহ আজিজ বলেন, আমি পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণের পর যেসব বেহাল সড়ক রয়েছে সেগুলোর উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে চিঠি লিখেছি। ওই চিঠির ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় থেকেও বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই গুণগতমান নিশ্চিতের মাধ্যমে এসব সড়কের কাজ শেষ হবে। এ ছাড়া, অন্যান্য যেসব বেহাল সড়ক রয়েছে সেগুলোর উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ওই প্রস্তাবনাগুলো পাস হলেই বাকি সড়কেরও উন্নয়ন কাজ শুরু করা হবে। আশা করছি, এরপর আর পৌরসভার ভেতর বেহাল কোনো সড়ক থাকবে না।