বাংলারজমিন
চিকিৎসক সংকটে ভোলাহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
(চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি
১০ মে ২০২৫, শনিবার
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস থাকলেও তাদের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালটি ৫০ শয্যার হলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাবে উন্নত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, কর্মকর্তা মোট ১৫টি পদে ২৫ জনের মধ্যে কর্মরত পদে আছেন সবমিলিয়ে ৯ জন। তার মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট আছেন ২ জন, তারা সপ্তাহে দু’দিন চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। জুনিয়র কনসালটেন্ট, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল অফিসার, সহকারী সার্জনসহ ১৬টি পদ শূন্য আছে। নেই নার্সিং সুপারভাইজার। প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, পরিসংখ্যানবিদ, স্টোর কিপার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, হেলথ এডুকেটর, কম্পিউটার অপারেটর, স্যাকমো, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফিজিও), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই), স্বাস্থ্য সহকারীসহ মোট ৬১টি পদের মধ্যে ১৬টি পদ শূন্য। এ ছাড়া চতুর্থ শ্রেণির নিরাপত্তা কর্মী, এমএলএসএস, মালি, ওয়ার্ডবয়, কুক, আয়া, ঝাড়ুদারসহ ২০ পদের ১৩টি শূন্য।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হলেও তারা বেশি দিন এখানে থাকেন না। পোস্টিং পাওয়ার পর পরই বেশির ভাগ চিকিৎসক উপর মহলে তদবির করে বদলি হয়ে যান। ফলে শূন্যপদ সহজে পূরণ হয় না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় রোগী সঠিক সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। হাসপাতালটিতে কিছু আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে সেগুলো কার্যকরভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রশিক্ষিত চিকিৎসক না থাকায় কেউ সেগুলো চালানোর দায়িত্ব নিতে পারছেন না। ফলে রোগীরা আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন এবং বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক বা শহরের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে হচ্ছে। বহির্বিভাগে সরকার কর্তৃক সরবরাহকৃত প্রয়োজনীয় ওষুধও নেই এখানে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাবুব হাসান বলেন, ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকট একটি বড় সমস্যা। চিকিৎসকদের এখানে পোস্টিং দেয়া হলেও তারা এখানে আসে না। যারা আসেন তারা বদলি হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেক পদ শূন্য থাকায় আমাদেরকে সীমিত জনবল দিয়েই প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। আমি নিজে প্রতিদিন রোগী দেখি যাতে কেউ সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়। আমাদের এখানে কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে সেগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আমরা সরকারের সরবরাহ অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করতে।