ঢাকা, ১৭ মে ২০২৫, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

টেস্টে ‘অস্তিত্ত্ব’ রক্ষার লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
mzamin

সিলেট টেস্টে চতুর্থ দিনেই বাংলাদেশের হার। ঘরের মাঠে একদিন বাকি থাকতেই পরাজয়ের লজ্জায় ডোবে টাইগাররা। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতা, ক্রিকেটারদের লক্ষ্যহীন খেলাই মূল কারণ। যে কারণে ২৫ বছরেও সাদা পোশাকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি টাইগাররা। দুই যুগ পেরিয়ে গেছে এর মধ্যে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই ফরম্যাটে এখনো জয়ের মুখ দেখেনি। বাকি দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮ জয়ের রেকর্ড জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। তাই এই দলের বিপক্ষে হার মেনে নেয়া বেশ কঠিন। একটা সময় টেস্ট থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে চলে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। পরে আবার ফিরেছে, ধীরে ধীরে আবারো তারা ঘাড় সোজা করে দাঁড়াচ্ছে। তাদের নতুন যুগের ক্রিকেটাররা টাইগারদের হারিয়ে সেই ইঙ্গিতও দিলো। সিরিজের প্রথম ম্যাচ হারের পর নাজমুল হোসেন শান্তর দলের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রামে মাঠে নামার আগে পরিস্থিতি এখন টেস্টে নিজেদের অস্তিত্ত্ব রক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। হারলে শুধু প্রশ্ন নয়, সত্যি সত্যিই সামর্থ্যহীন তার প্রমাণ মিলবে। এমন পরিস্থিতিতে দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের ধৈর্য ধরতে বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন হঠাৎ হঠাৎ জিতে চমক নয়, ধারাবাহিক হতে হবে দলকে। এটি তার শিষ্যদের জন্য কড়া বার্তাও।  তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়দের কাছে বার্তাটি হলো, সামনে এগোতে আমাদের উন্নতি অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা প্রতিবার দুই-তিনটি টেস্টে একটানা ভালো পারফরম্যান্স করতে পারি না। আমাদের ধারাবাহিকতা দরকার।’ প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে টিম ম্যানেজম্যান্টের নানা সিদ্ধান্ত নিয়েও। বিশেষ হারের পর বা বাজে খেলে তারা তৈরি করেন নতুন নতুন অজুহাত। যেমন দলের সহকারি কোচ সালাউদ্দিন বলেছেন সংবাদ মাধ্যমের লেখার উন্নতি হয়নি বলে দলের ক্রিকেটেও তার প্রভাব পড়ছে না। আবার দেশের ক্রিকেটে অবকাঠামো অপ্রতুল এটাও তার দাবি যে কারণে উন্নতি হচ্ছে না। তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে জিম্বাবুয়ের অবকাঠমো কি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো! চট্টগ্রাম টেস্টের আগে টিম ম্যানেজম্যান্ট আরো একবার প্রশ্নবিদ্ধ। ওপেনারদের ব্যর্থতায় দলে ডাকা হয়েছে এনামুল হক বিজয়কে! যে কিনা টানা দেড়মাস ধরে খেলছেন সাদা বলে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগের ওয়ানডে ফরম্যাটে। 
সাদা বল থেকে তিনি খেলবেন লাল বলে তাও তিন দিনের প্রস্তুতিতে। গুঞ্জন আছে তাকে খেলানো হবে চট্টগ্রাম টেস্টে। কিন্ত গতকাল প্রধান কোচ বললেন বিজয়ের এই মুহূর্তে আসাকে আদর্শই মনে করছেন না। তাহলে ওপেনিং করবে কারা। যতটা জানা গেছে ব্যর্থ সাদমান ইসলাম অনিকের পরিবর্তে একাদশে আসতে পারেন তিনি। তবে কোচের কথা শুনে সেটি মনে হচ্ছে না। তাহলে ওপেনিংয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে খেলবেন সাদমানই । এই টেস্টেও খেলবেন মুশফিকুর রহীম অনেকটা নিশ্চিত। তাই মাহিদুল ইসলাম অংকনের খেলা হচ্ছে না ধারণা করা যায়। তবে দলে পরিবর্তন আসবে,  পেসার নাহিদ রানার পরিবর্তে খেলতে পারেন তানজিম হাসান সাকিব। দলের বোলিং আক্রমণ কেমন হবে তা নিয়ে প্রধান কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা হতে পারে তিনজন সীমার বোলার এবং দুইজন স্পিনার, অথবা দুইজন সীমার বোলার এবং তিনজন স্পিনার। আমাদের একটা ধারণা আছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ (গতকাল) নেওয়া হবে।’

প্রধান কোচের বিশ্বাস দলের সক্ষমতা আছে তারা নিজেদের ফের প্রমাণ করতে পারবেন। সিমন্স বলেন, ‘আমি বিশেষ করে বাংলাদেশি জনগণের কাছে ধৈর্যের আবেদন করছি। তাদের ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা অনন্য। আমরা সঠিক প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে চেষ্টা করছি যাতে দীর্ঘমেয়াদে উন্নতি নিশ্চিত হয়।’ টেস্ট ক্রিকেটের অভিষেকে ২৫ বছর  কেটেছে সেখানে ১৫১ ম্যাচে হারের পাল্লাই ভারি। ১১০ ম্যাচে হেরেছে দল। তাই কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকেই যায় কবে টেস্টে পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পাবে বাংলাদেশ। সিরিজটি শুরুর আগে দেশে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ার লক্ষ্যে নতুন কিছু করে দেখানোর কথা বলেছিলেন অধিনায়ক শান্ত। কিন্তু সিলেট টেস্টের প্রথম দিন থেকে দেখা যায় সেই পুরোনো বাংলাদেশকেই। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৯১ রানে অলআউট হওয়ার পর সিমন্স বলেছিলেন, নতুনের খোঁজে আর আগের মতো টেস্টে জবুথবু হয়ে থাকবে না দল। নতুন ম্যাচ শুরুর আগেও সেই একই বার্তা দিলেন তিনি। সিমন্স বলেন, ‘আমরা জানি, প্রথম ম্যাচে দল হিসেবে ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি এবং নিজেদের সমস্যায় ফেলেছি। এখন আমাদের ভাবনা হলো, ইতিবাচক ব্র্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাই। এমন না যে, সারা দিন ব্যাটিং করে ২০০ রান করব।’  

খেলা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status