বাংলারজমিন
সারিয়াকান্দিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, অন্তঃসত্ত্বা
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
১২ আগস্ট ২০২২, শুক্রবার
বগুড়ার সারিয়াকান্দির দুর্গম চরে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় এক বখাটে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। এর ফলে ক্ষুদে ওই শিক্ষার্থী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয়রা একাধিকবার দেন-দরবার করে তার সঙ্গে বিয়ে পড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলেও, ধর্ষক বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বুধবার সকালে বগুড়ার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে চর এলাকার বিভিন্ন মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটিয়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দির কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের শোনপচা চরের গুচ্ছ গ্রামে মৃত জালাল প্রামাণিকের ছেলে বখাটে শাহাদত হোসেন (২১)। স্থানীয়রা জানান, ওই শিক্ষার্থী বিয়ের প্রলোভনে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর সুযোগ বুঝে শিক্ষার্থীকে বখাটে শাহাদত ধর্ষণ করতে থাকে। সবার অগোচরে বখাটে শাহাদতের বিয়ে ঠিক হয় ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার তার এক আত্মীয়ের সঙ্গে। বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী টের পেয়ে স্থানীয়দের কাছে শাহাদতের ধর্ষণের কথা প্রকাশ করে দেয়। শিক্ষার্থীটি স্থানীয়দের কাছে এও বলে, ধর্ষণের ফলে সে বর্তমানে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি বর্তমানে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শাহাদতের পরিবার নানা ধরনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে তারা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ওই শিক্ষার্থীর জ্যেঠাতো বড় বোন বলেন, শাহাদত এর সঙ্গে তার প্রেমের নামে দৈহিক সম্পর্ক করায় সে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি আমার কাছে নিশ্চিত করেছে। অন্তঃসত্ত্বা ওই শিক্ষার্থী বলেন, শাহাদত এর সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। তার মাধ্যমে আমি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছি। এখন শাহাদত আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছে না। শাহাদত অন্য মেয়েকে বিয়ে করার জন্য বিয়েও ঠিক করেছিল। আমি সেই মেয়ের নানাকে আমাদের সম্পর্কের বিষয়টি বলে দেই। পরে ওই বিয়েটি স্থগিত হয়। এখন শাহাদত আমাকে বিয়ের নামে নানা ধরনের তালবাহানা করছে। আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোনো পথ খোলা নেই। বাড়িতে গিয়ে এবং মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও শাহাদতকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বড় ভাই শাহার আলী বলেছেন, আমার ভাই শাহাদত ও রকম কোনো ঘটনা ঘটায়নি। সে চরে ভাড়ায় মোটরসাইকেল এবং জমিতে পাওয়ার টিলার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। শাহাদতের মা সালেহা বেওয়া বলেন, আমার ছেলে এ রকম ঘটনা ঘটাতে পারে না। খোঁজ খবর নিয়ে যতদূর জানতে পেরেছি মেয়েটির অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা কাল্পনিক। তাকে ফাঁসানোর জন্য এ রকম একটি ঘটনা সাজানো হয়েছে। ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীর দুলাভাই বলেন, শাহাদত ধর্ষণ মামলা হতে বাঁচতে আমার শালীকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। বিয়ে করার জন্য সে নাকফুল ছাড়া আর কিছুই কিনেনি। যেহেতু শাহাদত বিয়ের নামে নানা ধরনের তালবাহানা শুরু করেছে, তাই আইনের আশ্রয় নিয়েছি। শাহাদত এর নামে বগুড়া নারী-শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বুধবার সকালে মামলা দায়ের করেছি। সংশ্লিষ্ট কর্ণিবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন দিপন বলেন, যেহেতু বিষয়টি এখন আদালতে গিয়েছে, তাই আদালতের মাধ্যমেই এর একটা সমাধান হবে।