বাংলারজমিন
নিয়ম ভেঙে প্রকৌশলী ও উপ-সহকারীর কক্ষে এসি-সাজসজ্জা
তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবারসরকারি বিধি অনুযায়ী উপজেলা প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাদের অফিস কক্ষে কোনো ধরনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে বরগুনার তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন ও উপ-সহকারী গালিফ ছত্তার এর ব্যতিক্রম। তারা সরকারি নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইচ্ছামতো অফিস সংস্কার ও সাজসজ্জা করে অফিস কক্ষে এসি লাগিয়েছেন। এ ছাড়াও উপজেলা পরিষদ ভবনের অন্য রুমের ডিজাইন পরিবর্তন করে রুম সংস্কার করেছেন।
জানা যায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদের ভবন ও ডরমেটরি ভবনের সংস্কারের জন্য ১৮ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩৭ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এই প্রকল্পের কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মহিউদ্দিন আহম্মেদ। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকেন উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বিধি অমান্য করে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে প্রাক্কলন ব্যতীত ঠিকাদার কর্তৃক নিজ দপ্তরের দু’জন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর রুমের ডিজাইন পরিবর্তন করে থাই-গ্লাস দিয়ে ওয়াল পার্টিশন দিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) স্থাপন করেন। এই দপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকতার জন্য আলাদা পার্টিশন করে রুম ও টয়লেট স্থাপন করে দেয়া হয়। এতে তৎকালীন সময়ে অন্য দপ্তরের কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পড়ে এসি’র বিল ওই প্রকল্পের টাকা দিয়ে পরিশোধ করতে পারেননি।
উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেনের ভাষ্যমতে, দুই উপ-সহকারী প্রকৌশলী’র এসি বিলাসের জন্য নিজ দপ্তরের বিভিন্ন খাতের খরচ দেখিয়ে এসি স্থাপন করেন। কিন্তু অদ্যবধি প্রাক্কলন অনুযায়ী ওই প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় এখনো ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করতে পারেননি। এদিকে, উপজেলা পরিষদের ভবন ও ডরমেটরি ভবনের সংস্কারের বেশির ভাগ কাজ উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর এবং নিজ ডরমেটরির রুমে করানো হয়। যা প্রাক্কলনে ছিল না বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর নিজের রুমে একটি এসি স্থাপন করা রয়েছে। এ ছাড়াও ওই দপ্তরে দুইটি এসিসহ সকল বিদ্যুৎ বিলও পরিশোধ করেন সরকারি টাকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তা হয়ে ইচ্ছমতো এসি ব্যবহার করে যাচ্ছেন। যা সরকারি বিধিবহির্ভূত। এই দপ্তরের লোকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকল্পের টাকা দিয়ে নিজেদের বিলাসিতার জন্য তাদের রুম ইচ্ছামতো সংস্কার করেছেন। উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এক রুমে তিনজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী বসেন। তাই তাদের টিএ বিল ও সরকারিভাবে অফিস খরচের বিল দিয়ে এসি স্থাপন করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথমে উপজেলা পরিষদের ভবন ও ডরমেটরি ভবনের সংস্কারের টাকা দিয়ে এসি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের থেকে প্রশ্ন ওঠায় এভাবে এসি স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। ওই দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাতে পারবো। জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান খান বলেন, প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা এসি ব্যবহার করতে পারবেন না। তারা যেহেতু উপজেলা পরিষদ ভবনে থাকেন বিষয়টি সেখানের কর্তৃপক্ষ দেখবেন।