বাংলারজমিন
তোতা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ’র মহতী উদ্যোগ
প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবারতোতা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ। অন্য ১০ কারখানার মতোই কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি হয় সেখানে। কিন্তু ব্যতিক্রম হচ্ছে পলিটেকনিক্যাল থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে যন্ত্র তৈরির সুযোগ দিয়ে থাকেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক তোতা মণ্ডল। ফলে একাডেমিক শিক্ষা শেষ করেই সেই শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারছেন শিক্ষার্থীরা এবং খণ্ডকালীন চাকরি হিসেবে টাকাও আয় করতে পারছেন তারা। তোতা মণ্ডলের এমন মহতী উদ্যোগে এলাকাবাসী, স্থানীয় পলিটেকনিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ভূয়সী প্রশংসা করেন। তোতা মণ্ডলের এমন কর্মকাণ্ড দেখে অন্যান্য ওয়ার্কশপের মালিকরা শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এতে উৎপাদিত যন্ত্রগুলোর মান যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমননি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষ জনশক্তিও বৃদ্ধি পাবে।
তোতা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের চেয়ারম্যান ও স্বত্বাধিকারী তোতা মণ্ডল। আমরা দেখে দেখে এসব কৃষি যন্ত্র তৈরি করা শিখেছি। আমাদের বেশির ভাগের একাডেমিক শিক্ষা নেই। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক শিক্ষা আর আমাদের বাস্তবিক শিক্ষার সমন্বয়ে দারুণভাবে আমাদের কাজগুলো এগিয়ে নিতে পারছি। এতে শিক্ষার্থীরা অভিজ্ঞ হয়ে উঠছেন আর আমরাও তাদের অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করতে পারছি। গেল দুইদিন আগে এক বছর আগে যুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের বিদায় এবং নতুন করে অন্য শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ দান অনুষ্ঠান করেন তোতা মণ্ডল। সেখানে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন- বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকতা এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জেলা কৃষি অফিসার আব্দুর রহিম এবং বাংলাদেশ এগ্রিকালচার মেশিনারি মার্চেন্ট এসোসিয়েশন (বামম) বগুড়া জেলার সাধারণ সম্পাদক রাজেদুর রহমান রাজু। এসব অতিথিরা বলেন, তোতা মণ্ডল যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে অল্প দিনের মধ্যেই এই সেক্টরে বিপ্লব হয়ে যাবে। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উৎপাদন করতে হলে অবশ্যই প্রকৃত শিক্ষা থাকতে হবে। এখানে যেসব শিক্ষার্থী কাজের সুযোগ পাচ্ছেন, তারা যেমন নিজেদের মান উন্নয়নের সুযোগ পাচ্ছেন তেমনি দেশের একটি উল্লেখযোগ্য খাতকে আরও উন্নয়নশীল করতে সহযোগিতা করছেন। এর ফল দেশের সবাই পাবে বলে মনে করেন অতিথিরা। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মেজবাউল করিম। তিনি বিষয়টি দেখে বেশ অভিভূত হয়েছেন। তিনি মনে করেন, বগুড়ায় যেসব কৃষি যন্ত্র উৎপাদনের কারখানা আছে তাদের প্রত্যেক মালিকগণ তোতা মণ্ডলের মতো মহৎ মন নিয়ে এগিয়ে এলে দেশে একটি দক্ষ জনশক্তি পাবে। সেইসঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপগুলোর মাধ্যমে বেকারত্ব অনেকাংশে কমে যাবে। অনুষ্ঠানে তোতা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের সেরা কর্মী হিসেবে জাহিদুলকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।