ঢাকা, ১০ মে ২০২৫, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

সোনাদিয়ায় ঝাউগাছ নিধন করে একাধিক কটেজ নির্মাণ

মহেশখালী (কক্সবাজার) সংবাদদাতা
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্যের লীলাভূমিতে পরিণত হওয়া কক্সবাজার জেলার সোনাদিয়া দ্বীপ। যেটা কিনা বর্তমানে ভয়াবহ পরিবেশগত হুমকির মুখে পড়েছে।  দ্বীপটিতে সম্প্রতি হাজার হাজার ঝাউগাছ কেটে পর্যটকদের জন্য  সম্পুর্ন অবৈধভাবে কটেজ নির্মাণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দ্বীপের অভ্যন্তরে গড়ে উঠছে বেশ কয়েকটি  মহিষের খামার। যার প্রভাব পড়ছে দ্বীপের মাটি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের উপর।
সূত্র জানায়, ঝাউগাছ নিধন করে গড়ে উঠা ওইসব অবৈধ কটেজে সারাবছর পর্যটকদের আগমন চোখে পরার মতো। তারা এসে সোনাদিয়াতে রাত্রী যাপন করেন। এমন অবস্থায় আগত সকল পর্যটকদের জন্য নেই কোন নূন্যতম নিরাপত্তা ব্যাবস্থা ও চিকিৎসা সেবা।
অপরদিকে আগত সকল পর্যটকদের ভিড়ে ঘুরতে আসার নামে অনেকেই আসেন মাদক কারবারীদের সাথে দেখা সাক্ষাত ও মাদক আদান প্রদান করতে- এমনটাই বহুবার জানা যায় স্থানীয়দের বরাত দিয়ে।
স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা আবু নাসের মোহাম্মদ হাসান বলেন- সোনাদিয়া ঝাউবনের গভীরে একাধিক কটেজ নির্মাণ করা হচ্ছে বিগত কয়েক বছর ধরে যা কোনো পূর্বানুমতি ছাড়াই গড়ে তোলা হয়েছে। দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিণ অংশে কটেজ তৈরির জন্য বেপরোয়া ঝাউগাছ কাটা হচ্ছে, যার ফলে প্রাকৃতিক ঝুঁকি বেড়েই যাচ্ছে। ঝাউগাছ মূলত ভূমিক্ষয় রোধ ও ঘূর্ণিঝড় থেকে দ্বীপ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাছাড়াও তিনি আরো বলেন- এসব কটেজ প্রকল্প দ্বীপের প্রতিবেশ ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলছে। ইতোমধ্যে বহু পাখি ও বন্যপ্রাণী তাদের আবাসস্থল হারাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  দ্বীপের পূর্বাঞ্চলে দেখা গেছে মহিষ চারণের প্রবণতা। এদের জন্য পরিষ্কার করা হচ্ছে বন ও ঘাসের জমি। এই ‘মহিষের খামার’ ধীরে ধীরে দ্বীপের ভেতরের মাটি ক্ষয় করছে এবং লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা কৃষিকাজ ও উদ্ভিদজগতের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে মনে করছেন পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিরা।
সোনাদিয়া বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন- জীবিকার জন্য পর্যটন ও পশুপালন প্রয়োজন, তবে এটি হতে হবে পরিকল্পিতভাবে। তারা এ নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে অপ্রয়োজনীয় গাছ নিধন ও ভূমি ধ্বংস বন্ধ হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে -মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেদায়েত উল্ল্যাহ্ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, ইতোমধ্যে তা দেখার জন্য বন বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সোনাদিয়া দ্বীপ শুধু একটি পর্যটনকেন্দ্র নয়, এটি একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশগত সম্পদ। পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে দ্বীপের অস্তিত্ব হুমকিতে পড়বে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল। এখনই সময়, পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার।

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status