বাংলারজমিন
হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা সমবায় সমিতির পরিচালক, আটক ৭
নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবারনেছারাবাদে আরামকাঠি ক্ষুদ্র সঞ্চয়ী ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালক মো. রহমাত উল্লাহর বিরুদ্ধে পাঁচ সহস্রাধিক গ্রাহকের হাজার কোটি টাকার আমানত নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার থেকে সমিতির পরিচালকের পূর্ব জলাবাড়ী গ্রামের একটি প্রজেক্ট থেকে লুটপাট চলছে। গ্রাহক পরিচয়ে স্থানীয় অনেক ব্যক্তি প্রজেক্ট থেকে গরু, ভেড়া, গরুর ফার্মের চালের টিন নিয়ে যাচ্ছেন। সরজমিন এর প্রমাণ মিলেছে। শনিবার বিকালে ভুক্তভেগী গ্রাহকরা পরিচালক রহমাত উল্লাহর লাপাত্তার খবরটি জানতে পেরে তার গ্রামের বাড়িতে বিক্ষোভ করেন। রোববার সকাল থেকে তার বাড়িতে কয়েকশ’ লোক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সমিতির পরিচালককে না পেয়ে সমবায় ম্যানেজার, মাঠকর্মী, তার একান্ত সহযোগীসহ মোট ৭ জনকে আটকে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ খবর পেয়ে গ্রাহকদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করে রাতেই থানায় নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী নিলুফা অভিযোগ করেন, তিনি রহমাত উল্লাহর সমিতিতে এককালীন ১৪ লাখ টাকা রেখেছেন। বিগত কয়েকমাস ধরে টাকা ফেরত চাচ্ছিলেন। শনিবার বিকালে জানতে পারেন রহমাত উল্লাহ পরিবার নিয়ে উধাও হয়েছেন। গত তিনদিন পর্যন্ত তার পরিবার এলাকা থেকে লাপাত্তা। রওশোনারা অভিযোগ করেন, তিনি রাস্তায় চানাচুর, ঝালমুড়ি বিক্রি করে ওই সমিতিতে এককালীন ২ লাখ এবং প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে আমানত রাখতেন। সবমিলিয়ে তিনি ৮ লাখ টাকা পাবেন। রিনা বেগম জানান, তিনি সমিতিতে ৩ লাখ টাকা এককালীন রেখেছিলেন। এভাবে শত শত গ্রাহক একই অভিযোগ করেন। স্থানীয় এক লোক রহমাত উল্লাহর সমিতির গ্রাহক পরিচয়ে গরুর ফার্মের টিন ছুটিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ২ লাখ টাকা পাবো। তাই টিন খুলে নিচ্ছি। স্থানীয় বিটুল নামে অপর একটি একইভাবে গরুর ফার্মের টিন খুলছিলেন। তিনি বলেন, আমি সমিতিতে ৫০ হাজার টাকা পাবো। এভাবে সেই প্রজেক্ট থেকে শতাধিক লোক যে যারমতো বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছেন দেখা গেছে। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি বলেন, তার সমিতির লাইসেন্স বরিশাল বিভাগ থেকে করা। তারা আমাদের আইন না মেনে চলতো। শুনেছি এখন নাকি তারা পালিয়েছে। পলাতক পরিচালকসহ আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। নেছারাবাদ থানার ওসি মো. বনি আমীন জানান, বিষয়টি শুনে রাতেই পুলিশ পাঠিয়ে সমিতির ম্যানেজার, মাঠকর্মীসহ ৭ জনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।