দেশ বিদেশ
সিলেট বিএনপি’র বিক্ষোভে হাজারো নেতাকর্মীর ঢল
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১১ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বিক্ষোভ করলেন সিলেট বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ছিল শান্তিপূর্ণ। বিএনপি’র নেতারা জানিয়েছেন, হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকলেও কোথাও কোনো অঘটন ঘটেনি। বরং ফিলিস্তিন ইস্যুতে সিলেট নগর বিএনপি’র তৃণমূল থেকে সিনিয়র নেতারা পর্যন্ত উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানালেন। আর এই কর্মসূচিতে এ যাবতকালের সিলেট বিএনপি’র সবচেয়ে বড় কর্মসূচি বলে বিবেচিত হচ্ছে। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকে সিলেট নগরে ঢল নামে নেতাকর্মীদের। প্রতিটি ওয়ার্ডসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে কোর্ট পয়েন্টে এসে জমায়েত হন। বিকাল ৪ টার মধ্যে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় গোটা এলাকা। সিলেট নগর বিএনপি’র নেতারা জানিয়েছেন- গত দুইদিনের প্রস্তুতি বলে দিচ্ছিল সিলেটের কর্মসূচি বড় হবে। এ কারণে নগরের এমন কোনো এলাকা নেই যেখান থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা মিছিলে এসে শরিক হননি। মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। বক্তব্যকালে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনির গাজা ও রাফায় ইসরাইলের বর্বরোচিত নৃশংসতা চলছে। গাজায় নিহত শিশুদের ছবি আমাদের কমল প্রাণ শিশুদেরও হতবাক করেছে। সময় এসেছে বিশ্বের সকল শান্তিকামী মানুষের একত্রিত হয়ে আওয়াজ তোলার, যেন এই নৃশংস হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ অবিলম্বে বন্ধ হয়। ফিলিস্তিনি বিষয়টি ইতিমধ্যে প্রমাণিত এটি কোনো আঞ্চলিক বিষয় নয়, এটি একটি বৈশ্বিক বিষয় এবং যে সমস্যার সমাধান শুধুমাত্র সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই সম্ভব। মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ফিলিস্তিনিবাসীর পাশে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সমর্থনে আমরা সব সময় অবিচল ছিলাম। ইয়াসির আরাফাত ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমল থেকে এই বিষয়ে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এই বিষয়ে জেরুজালেম মুক্ত করার জন্য ইসলামী সংস্থার ৩ সদস্যের যে কমিটি হয়েছিল সেই কমিটিতে অন্যতম ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি, ফিলিস্তিনি বর্বরোচিত নৃশংস হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে সক্রিয় হওয়া এবং গাজায় খাদ্য অবরোধ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নিরীহ মানুষের প্রাণহানি বন্ধ ও এই বিষয়ে একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য অন্য সকল রাষ্ট্রের সমম্বয়ে এই দাবিগুলো সকল বৈশ্বিক ফোরামে তুলে ধরার আহ্বান জানান। নগরের কোর্ট পয়েন্টে আয়োজিত এ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন- আজ গাজাই পিতৃ-মাতৃহীন অনাথ শিশু আর বিধবার সংখ্যা পরিমাপযোগ্য নয় এবং প্রতিদিনই বাড়ছে এই সংখ্যা। মাথাগোঁজার আশ্রয় তো দূরের কথা, একবেলা খাবার, চিকিৎসা কিংবা তৃষ্ণা নিবারণের সামান্য পানিও আজ তাদের কাছে দুষ্প্রাপ্য। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ইতিহাসের জঘন্যতম এই গণহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিবেক নীরব, বিশ্ববিবেককে জাগ্রত করুন। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যার অবসান হোক। প্রতিষ্ঠিত হোক ফিলিস্তিনিদের মাতৃভূমির অধিকার। সভাপতির বক্তব্যে মহানগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিসিকের সাবেক প্রথম প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন- বিশ্ববিবেককে স্তম্ভিত করে ফিলিস্তিনের রাফা ও গাজায় ইতিহাসের বর্বরতম নৃশংস হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরাইল। ইসরাইলির নির্বিচার এই আক্রমণ থেকে নারী, শিশু, প্রবীণ, অসুস্থ-কেউই নিস্তার পায়নি। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে মৃত ও আহতদের সংখ্যা। মৃতদেহ কবরস্থ করার মতো সামান্য ভূখণ্ড পর্যন্ত আজ অবশিষ্ট নেই। সেখানে অবিরাম বিমান আক্রমণ আর বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে টিকে থাকা মানব বসতির শেষ চিহ্নটুকু। মসজিদে প্রার্থনারত মানুষ কিংবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরাও আজ নিরাপদ নয়। সেখানে নির্বিচার বোমা হামলায় নিমিষেই তাদের জীবনাবসান ঘটছে। মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব, মঈন উদ্দিন সোহেল প্রমুখ।