দেশ বিদেশ
টিপকাণ্ড
লতা সমাদ্দারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবাররাজধানীর ফার্মগেট এলাকার আলোচিত টিপকাণ্ডের ঘটনায় তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকা ড. লতা সমাদ্দারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে মামলা করেছেন সাবেক পুলিশ সদস্য নাজমুল তারেক। গতকাল দুপুরে ঢাকার চিফ ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তিনি মামলাটি করেন।
এই মামলায় লতা সমাদ্দার ও সুবর্ণা মুস্তাফা ছাড়াও নাট্য অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন, সাজু খাদেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মলয় মালা, প্রাণ রায়, সায়মন সাদিক, মনোজ প্রামাণিক, স্বাধীন খসরু, চয়নিকা চৌধুরী, আশনা হাবিব ভাবনা, জ্যোতিকা জ্যোতি, উর্মিলা শ্রাবন্তী কর, দেবী সান, নাজনীন নাহার চুমকী, সুষমা সরকার ও কুসুম সিকদারকে আসামি করা হয়েছে।
নাজমুল তারেক মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ২রা এপ্রিল সকাল ৮টা ২০ মিনিটে বৈধ কাগজপত্রসহ মোটরসাইকেল নিয়ে ডিউটিতে যাওয়ার জন্য বের হন। সেদিন শনিবার সরকারি নিয়োগ পরীক্ষা থাকার কারণে ফার্মগেটে প্রচণ্ড জ্যাম থাকে তাই সিজান পয়েন্ট এলাকা দিয়ে উল্টো দিক দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান। যাওয়ার পথে একজন ভদ্র মহিলা মোবাইলে কথা বলতে বলতে যাচ্ছিলেন। অসাবধানতাবশত লতা সমাদ্দারের গায়ে মোটরসাইকেলের লুকিং গ্লাস লেগে যায়। তখন ড. লতা সমাদ্দার বলে ওঠেন, এই বাস্টার্ড তুই কি উল্টো পথে যেতে পারিস? পুলিশের ক্ষমতা দেখাস? তৎক্ষণাৎ ঝগড়া-বিবাদে না জড়িয়ে তার কাছে সরি বলে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল ঘোরান। কিন্তু তার ইউনিফর্মের সোল্ডার ব্যাজ ধরে টান দিলে মোটরসাইকেলসহ রাস্তার ওপরে পড়ে যান নাজমুল। পরে অনেক লোক জড়ো হয়ে গেলে নাজমুল তার চাকরির ক্ষতির কথা চিন্তা করে কোনো কিছু না বলে কর্মস্থলের দিকে চলে যান। ওই সময় নাজমুল ছোটোখাট বিষয় মনে করে ঘটনাটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাননি। কিন্তু ঘটনার চারদিন পরে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারেন যে, শেরে বাংলা নগর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। জিডিতে তাকে এক নম্বর আসামি উল্লেখ করে অভিযোগ করেন কপালে টিপ পরায় পুলিশ সদস্যের হেনস্তার শিকার হয়েছেন লতা সমাদ্দার। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ঝড় তোলে। ফলে তাকে সমাজে ঘৃণার পাত্র হিসেবে বসবাস করতে হচ্ছে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এ আলোচিত ঘটনাটি যাচাই-বাছাই না করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীসহ মুসলিম সমাজের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে নাট্য অভিনেতারা ও বিভিন্ন ব্যক্তি নিজেদের কপালে টিপ পরে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রচার করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে এবং দেশের মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। সামাজিকভাবে ও পারিবারিকভাবে সম্মান ক্ষুণ্ন করায় সে বিভিন্ন ক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ্য করেন।
এ বিষয়ে নাজমুল তারেক বলেন, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক এ ঘটনায় আমার এবং গোটা পুলিশ বাহিনীর ইমেজ নষ্ট হয়েছে। সে সময় যারা ঘটনাটি না জেনেই আমাকে দোষী করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে আমি মানহানির মামলা করেছি। এই মামলায় লতা সমাদ্দার ছাড়া আরও ১৭ জনের নাম উল্লেখ করেছি।
পাঠকের মতামত
নাজমুল তারেক ভাই ২০০০% সৎ এবং নিষ্ঠাবান পুলিশ অফিসার ছিলেন। এই খারাপ ফ্যাসিস্ট অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কারণে তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা গুরুতর আর্থিক সংকটে ছিলেন। দয়া করে এই অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি দিন।