দেশ বিদেশ
আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কয়েকটি প্রধান বাধা
প্রফেসর ড. মো. সদরুল আমিন
১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
দেশে বর্তমানে আনুপাতিক হারভিত্তিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের একাধিক বাধা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো- সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা। যেমন বর্তমানে সাংবিধানিক বিধিমালার আওতায় রাজনৈতিক দলকে দেয়া অনুমোদনে সরাসরি ভোট প্রদানের পরিবর্তে অসংবিধানিক পরোক্ষ আনুপাতিক হারে ভোট দিতে হবে- এমন কথা সরকারের বলার বা আদেশ জারি করার কোনো সুযোগ নাই। এমন হলে সপ্তাহের মধ্যেই ডজন ডজন রিট আবেদন জমা হয়ে যাবে। তাই নির্বাচন কমিশন কোনো রাজনৈতিক দলকে বলতেই পারবে না যে, আপনারা আনুপাতিক হারে ভোট দেন। যদি আনুপাতিক হারে ভোট করতে হয়, তবে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের দলীয় গঠনতন্ত্রে নির্দিষ্ট বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করে পুনরায় সরকারের কাছ থেকে নিয়মানুগ পদ্ধতি অবলম্বন করে যথাযথ অনুমোদন নিতে হবে।
দ্বিতীয়ত: বর্তমানের আয়াস সাধ্য পদ্ধতিতে সরাসরি ভোটে পাস করে আসা সংসদ সদস্যের জন্য প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই আয়াসী পরাক্ষ সংসদ সদস্যের সমান হবে না।
তৃতীয়ত: প্রার্থী নির্দিষ্ট না থাকায় কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করার দায়িত্ব কে নেবে? নির্বাচন কমিশন নাকি সিভিল প্রশাসন, নাকি রাজনৈতিক দল? জামানত বাতিল হবে কতো % ভোটে?
চতুর্থত: প্রার্থী মনোনয়নে সুনির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়া সেট করে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রার্থী মনোনয়নে পেশাগত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সর্বহেলিত কৃষক প্রতিনিধির জন্য প্রতি জেলায় অন্তত ১টি সিট কোটা সংরক্ষণ করতে হবে।
একবার একটি রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবে দেশে কেয়ারটেকার সরকার চালু করতে, তা বাতিল করতে ও তা পুনরায় চালু করতে দুই যুগের বেশি সময়-অসময়, দিগ্বিদিক, তালে-বেতালে নাচ অব্যাহত আছে। সেই একই দলের প্রস্তাবনায় আরেকটি উদ্যোগ বিবেচনা করতে প্রচুর সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যাবশ্যক। মনে রাখতে হবে, এদেশের মানুষের লেখাপড়া কম থাকতে পারে কিন্তু বুদ্ধি কম নাই। মনে রাখতে হবে, যেসব দেশে এ আনুপাতিক হারে নির্বাচন হয়, সেসব দেশের চেয়ে বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক অনুভূতির স্পর্শকাতরতা অনেক বেশি। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন এর প্রকৃষ্ট প্রধান। তাই অনুরোধ, সিদ্ধান্তটি দেখে শুনে বুঝে নিন।