দেশ বিদেশ
ডাকসু নির্বাচনে জালিয়াতি রোধে ভোটার তালিকায় ছবি ও কিউআর কোড
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অধিকতর স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে ভোটার জালিয়াতি রোধে এবারের ভোটার তালিকায় থাকবে ছবি ও বিস্তারিত তথ্যসহ কিউআর কোড। এ ছাড়াও ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে স্থাপন, গুজব রোধে কমিটি গঠন, তফসিল ঘোষণার ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন এবং ভোটদান সংক্রান্ত টিউটোরিয়াল ভিডিও প্রকাশসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল রুমে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য উঠে আসে। সভায় ডাকসু নির্বাচনের লক্ষ্যে গঠিত নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
নির্বাচন কমিশন জানায়, ভোট জালিয়াতি ও অন্যের ভোট দেয়ার প্রচেষ্টা ঠেকাতে এবার প্রতিটি ভোটারের পাশে থাকবে ছবি ও কিউআর কোড। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. গোলাম রাব্বানী বলেন, আমাদের কাছে যে তালিকা আসবে, সেটিতে আপডেটেড ছবি যুক্ত করা হবে। পাশাপাশি থাকবে কিউআর কোড, যা স্ক্যান করলেই ভোটারের নাম, বিভাগ, সেশনসহ বিস্তারিত তথ্য চলে আসবে। এতে সহজেই ভোটারের পরিচয় যাচাই করা সম্ভব হবে।
২০১৯ সালের অভিজ্ঞতার আলোকে এবারের নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এবার আবাসিক হলে থাকছে না ভোটকেন্দ্র। মাঠ, টিএসসি, সিনেট ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের মতো নিরপেক্ষ জায়গায় ভোটগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। কারণ ২০১৯ সালের অভিজ্ঞতা ছিল তিক্ত। আমরা চাই না সে ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক। তবে শিক্ষার্থীদের যাতে বাড়তি ভোগান্তি না হয়, সেজন্য পর্যাপ্ত বুথ রাখা হবে।
এদিকে ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সকল শর্ত পূরণ করতে না পারায় ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীরা এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. গোলাম রাব্বানী বলেন, ছাত্রসংগঠনগুলোর দাবি ছিল এই সেশনকে অন্তর্ভুক্ত করার। আমরা সেই দাবি বিবেচনায় নিয়েছিলাম। কিন্তু এতে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে। যাদের ছাত্রত্ব নেই, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে যে কেউ আদালতে গিয়ে রিট করতে পারে। এর ফলে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
অন্যদিকে ডাকসু নির্বাচন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্ভাব্য গুজব ছড়ানোর বিষয়টি আমলে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিশেষ করে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে পরিচালিত বিভিন্ন পেজ ও শিক্ষার্থীদের পরিচালিত পেজ থেকে গুজব ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে জানানো হয়। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এসব পেজের অ্যাডমিন ও মডারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। এ ছাড়া গঠন করা হবে একটি ‘মনিটরিং সেল’, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা তা নজরদারি করবে।