দেশ বিদেশ
সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিরোধ
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবারসিলেটে বিরোধে জড়ালেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতারা। রমজান মাস থেকে এই বিরোধ চলমান। জেলা কমিটির আহ্বায়ক আক্তার হোসেনকে অব্যাহতি দেয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ আরও তুঙ্গে উঠেছে। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অব্যাহতির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আক্তার হোসেন একাংশের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। পরে তিনি গণমাধ্যমে একটি বিবৃতিও পাঠিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেটের সদস্য সচিব নুরুল ইসলামের পক্ষ থেকে বলা হয়- গত ২২শে মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার মাহফিলে লিডিং ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়। সেই মামলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলা আহ্বায়ক আকতার হোসেনকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলার নির্বাহী কমিটি ও কনভেনর বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আহ্বায়ক আকতার হোসেনকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার আগ পর্যন্ত সাংগঠনিক কাজ হতে অব্যাহতি দেয়া হলো। মামলা থেকে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলা আহ্বায়ক হিসেবে পরিচয় বা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকারও নির্দেশ দেয়া হয়। আরও বলা হয়- জেলার নির্বাহী কমিটি ও কনভেনর বডি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিলেট জেলা ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করবেন সালমান খুরশেদ (১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সিলেট জেলা)।
এদিকে সন্ধ্যায় পাঠানো এক বিবৃতিতে আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, ‘কনভেনর বডির কয়েকজনের একটি সিদ্ধান্তের কপি দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যেখানে আমাকে আমার আহ্বায়ক পদ হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আমি এই সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি কারণ কমিটির ২৭২ জন সদস্যের মধ্যে ২৫৪ জন সদস্য ও কনভেনর বডির বেশির ভাগ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব এ বিষয়ে অবগত নয়। পাশাপাশি এই সিদ্ধান্ত নৈতিকতার দিক দিয়ে সাংগঠনিক নীতির পরিপন্থি হিসেবে প্রতিয়মান এবং অগণতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই বিষয়টি সম্পূর্ণই কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত দেয়ার এখতিয়ার রাখে, এজন্য আমি এই সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন- ‘২৩শে মার্চ আমার নামে রজ্জুকৃত মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্তের কারণ দেখানো হচ্ছে সেই ঘটনা এনসিপির ইফতার মাহফিলে এনসিপির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের অন্তর্গত ভুল বোঝাবুঝির কারণে ধাক্কাধাক্কির পর্যায়ে গড়ায়। একজন দায়িত্বশীল হিসেবে আমি ফোনে ঘটনার বিষয়ে অবগত হলে দৌড়ে নিষ্পত্তির জন্য মাহফিলে পৌঁছাই এবং দায়িত্বশীল হিসেবে দু’পক্ষেরই সাথে সমঝোতার টেবিলে আসার আহ্বান করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় দু’পক্ষই আমার কথা না শুনেই হাতাহাতি পর্যায়ে যায়। পরে ভুক্তভোগী ও পারিপার্শ্বিক চাপে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আমাকে মামলার আসামি রাখা হয় এবং আমার কনভেনর বডির অনেকেই সেই মামলার নামে ও অজ্ঞাতনামা আসামি। মামলার পরেদিন শুধু আমাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ওই দিনেই আমি জামিনে মুক্তি পাই।’ তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন- ‘আপনারা অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতি অবস্থান নিন, যেভাবে আমাকে মিথ্যা ও অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের সময়ে আপনারা প্রতিবাদ জানিয়ে ছিলেন।’