দেশ বিদেশ
ছুটি ও শ্রম আইন বাস্তবায়নের দাবি
মৌলভীবাজার হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের স্মারকলিপি
স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে
১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবারমে দিবসে মজুরিসহ ছুটি প্রদান, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রম আইন কার্যকর করার দাবিতে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন স্মারকলিপি প্রদান করেছে। গতকাল দুপুরে জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন মিয়া স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসক বরাবর পেশ করা হয়। অনুলিপি শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক, উপ-মহাপরিদর্শক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি বরাবর পেশ করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস সারা বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির ঐক্য ও সংহতি প্রকাশের দিন। পহেলা মে সারা বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণি ছুটি ভোগ করে থাকেন। বাংলাদেশেরও সর্বস্তরের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীরা ছুটি ভোগ করে থাকেন। কিন্তু হোটেল-রেস্টুরেন্টে কর্মরত শ্রমিকদের বিরাট অংশকে এখনো মে দিবসের ছুটি থেকে বঞ্চিত করা হয়। তাই হোটেল শ্রমিকরা যাতে এই ছুটি ভোগ করতে পারে সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করা হয়। এ ছাড়া, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (অদ্যাবধি সংশোধিত) এর ৫ ধারায় নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র, ৬ ধারায় সার্ভিস বই, ২(১০) ধারায় চাকরিচ্যুতিজনিত চার মাসের নোটিশ পে, প্রতিবছর চাকরির জন্য ৪৫ দিনের গ্র্যাচুয়েটি। ১০৩ ধারায় সপ্তাহে দেড়দিন সাপ্তাহিক ছুটি, ১০৮ ধারায় দৈনিক ৮ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা কাজ। অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরি প্রদান। ১১৫ ধারায় বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি, ১১৬ ধারায় ১৪ দিন অসুস্থতার ছুটি। ১১৭ ধারায় প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন অর্জিত ছুটি। ১১৮ ধারায় ১১ দিন উৎসব ছুটি ও উৎসব বোনাস প্রদানের আইন থাকলেও হোটেল শ্রমিকদেরকে এই সকল আইনগত অধিকার হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে। শ্রম আইনে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ ও বাসস্থানের বিধান থাকলেও শ্রমিকরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে ও থাকতে বাধ্য হন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, শ্রমিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে কোনো পক্ষই কোনো উদ্যোগ নেননি। হোটেল শ্রমিকরা দৈনিক ১০-১২ ঘণ্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। যার কারণে হোটেল শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
এমতাবস্থায় মহান মে দিবস উপলক্ষে ১লা মে মজুরিসহ ছুটি কার্যকর ও শ্রম আইন বাস্তবায়ন করার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্মারকলিপিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।