দেশ বিদেশ
নির্বাচন-ভোটাধিকারের বিকল্প হিসেবে সংস্কারকে কেন দাঁড় করানো হচ্ছে
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
নির্বাচন ও ভোটাধিকারের বিকল্প হিসেবে কেন সংস্কারকে দাঁড় করানো হচ্ছে- এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ইলিয়াস আলী গুম প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম হওয়া বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর সন্ধানে’ আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে তিনি এ প্রশ্ন তুলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা ডিসেম্বর আর জুনের মধ্যে পেন্ডুলামের মতো দোল খাচ্ছে কেন? অন্তর্বর্তী সরকারকে এটার জবাব দেয়া দরকার। আমরা তো চেয়েছি একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমরা চেয়েছি, আমাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। আমরা চেয়েছি, আইনের শাসন নিশ্চিত করা। অন্তর্বর্তী সরকারকেই জায়গাটি নিশ্চিত করা দরকার। আর যে ভোটাধিকারের জন্য ১৫ থেকে ১৬ বছর সংগ্রাম করেছেন, সেই ভোটাধিকার কেন বিলম্বিত হচ্ছে? সেটা নিয়ে কেন এত কথা হচ্ছে? কেন নির্বাচন ও ভোটাধিকারের বিকল্প হিসেবে সংস্কারকে দাঁড় করানো হচ্ছে?
অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাস সময় অতিবাহিত হলেও ইলিয়াস আলীসহ বিএনপি’র অন্য নেতাদের খোঁজ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আট মাস হয়ে গেল। গুম কমিশন কী কার্যক্রম করছে? কোথায় ইলিয়াস আলী? কোথায় চৌধুরী আলম? কোথায় সুমনসহ অন্যরা? তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কী দায়িত্ব পালন করছেন? সিলেট সীমান্তে ভারতের টিপাইমুখ বাঁধ দেয়ার প্রতিবাদে কর্মসূচি গ্রহণ করার কারণে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, যারা সহ্য করতে পারেনি, তৎকালীন যারা ক্ষমতায় ছিল, তাদের যৌথ প্রযোজনায় ইলিয়াস আলীকে অদৃশ্য করে ফেলা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা ভোট, নির্বাচন ও ভোটাধিকারের কথা বললে সরকার আরও কিছু কথা বিকল্প হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে। গণতন্ত্র মানেই তো নির্বাচন। গণতন্ত্র মানেই তো ন্যায়বিচার। সেগুলো নিয়ে কী করছেন?
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের নামে ৬০ লাখ মামলা। আট মাস ক্ষমতায় আছেন, এসব মামলা তো প্রত্যাহার করা যেত। এর জন্য কিছুই করেননি। আজও কেন আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াতে হবে? আর বিএনপি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয় না! তার মানে, কোনো একটা এজেন্ডা বা পরিকল্পিত নকশার মধ্যদিয়ে এই সরকার চলছে। এটাই তো মানুষের কাছে সব থেকে বড় প্রশ্ন। এই কারণেই তো আজ এত ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অবদানকে আমরা স্বীকার করি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু এটা যদি এ রকম হয় যে, তাদের (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র) কথায় প্রশাসন চলবে, সব সরকারি কর্মকাণ্ড হবে, এটাকে বলে নৈরাজ্য। এই নৈরাজ্য কেন হবে? ডিসি-এসপিরা বলেন, এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা বলে গেছেন, এভাবে করা যাবে না। তাহলে জনপ্রশাসন কেন?
দোয়া মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ বক্তব্য দেন।