দেশ বিদেশ
অ্যান্টার্কটিকার কাছে জনবসতিহীন দ্বীপপুঞ্জের ওপরও কর বসিয়েছে আমেরিকা
মানবজমিন ডিজিটাল
৯ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
ডনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে অ্যান্টার্কটিকার কাছে হিমবাহে ঢাকা এবং পেঙ্গুইনদের আবাসস্থল অ্যান্টার্কটিকার কাছে জনবসতিহীন দ্বীপপুঞ্জের ওপরও ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন। হার্ড দ্বীপ ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপপুঞ্জ পৃথিবীর সবচেয়ে প্রত্যন্ত স্থানগুলোর মধ্যে একটি। অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে ১০ শতাংশ শুল্কের পাল্লায় পড়েছে এই দ্বীপগুলোও। এই সব দ্বীপে শেষবার মানুষের পা পড়েছিল প্রায় এক দশক আগে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনবসতিহীন দ্বীপপুঞ্জের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন, যেখানে কেবল পেঙ্গুইন ও সীলরাই বাস করে।
সিবিএস নিউজের উপস্থাপক মার্গারেট ব্রেনান ট্রাম্পের বিভ্রান্তিকর শুল্কের জন্য বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের সমালোচনা করেছেন। ব্রেনান জিজ্ঞাসা করেন, হার্ড ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপপুঞ্জ, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে না এবং আক্ষরিক অর্থেই পেঙ্গুইনদের বাসস্থান, কেন তাদের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে? আপনি কি এটি করতে এআই ব্যবহার করেছেন? লুটনিক হেসে অভিযোগটি উড়িয়ে দেন। বলেন, ‘না, ধারণাটি হলো শুল্ক থেকে কোনো দেশ বাদ যাবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি সচিব ব্রুক রোলিন্স প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পক্ষে কথা বলেছেন। তাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কেন দু’টি জনবসতিহীন দ্বীপে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, উত্তরে তিনি বলেন, ‘যাই হোক না কেন, কেউ বাদ যাবে না।’
বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের কথায়, আসলে কোনো এলাকা যদি শুল্কের তালিকা থেকে বাদ পড়ে তাহলে অন্য দেশগুলো ওই এলাকার মাধ্যমে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য করতে চেষ্টা করবে। এই বিষয়টি আটকাতে মরিয়া ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাই তিনি বলেছিলেন, ‘‘শুল্কের ‘থাবা’ থেকে যেন কোনো দেশ বা এলাকাই বাদ না পড়ে।’’
হার্ড দ্বীপ ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপপুঞ্জগুলো অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অ্যান্টার্কটিক মহাদেশের মধ্যে অবস্থিত। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কনভেনশন অনুসারে, এগুলো তাদের ‘প্রাচীন বাস্তুতন্ত্র’ এবং সক্রিয় আগ্নেয়গিরির বিরল সংমিশ্রণের জন্য সংরক্ষিত। এই দ্বীপপুঞ্জগুলো বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, সীল ও পেঙ্গুইন। অস্ট্রেলিয়া থেকে ৪,০০০ কিলোমিটার (২,৪৮৫ মাইল) দূরে অবস্থিত এই দ্বীপে শুল্ক আরোপের কথা জানতে পেরে অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ রীতিমতো অবাক হয়ে গেছে।
দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী ডন ফ্যারেল সংবাদমাধ্যম এবিসিকে বলেছেন, শুল্ক আরোপ ‘স্পষ্টতই একটি ভুল সিদ্ধান্ত। মনে হচ্ছে তাড়াহুড়ো করে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।’
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস