খেলা
টিভি-রেডিও মেরামত করে কারাগারে ১ বছর রবিনহোর
স্পোর্টস ডেস্ক
২৯ মার্চ ২০২৫, শনিবার
ব্রাজিল দল ছাড়াও তিনি খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলান, ম্যানচেস্টার সিটির মতো বড় ক্লাবে। এক সময়ের খ্যাতিমান ফুটবলার রবিনহো কয়েকদিন আগেই কারাবাসের এক বছর পূর্ণ করেছেন।
রবিনহোর অপরাধের কারণটি সবাই জেনেছিল ২০১৩ সালেই। ইতালীয় ক্লাব এসি মিলানে থাকাকালীন এক নৈশক্লাবে আলবেনিয়ার একজন নারীকে ধর্ষণ করেন রবিনহো। পরবর্তীতে সেই দোষ তিনি স্বীকারও করেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ইতালির আদালত রবিনহোকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন। কিন্তু রায়ের আগেই তিনি ইতালি ছেড়ে যাওয়ায় ব্রাজিল সরকারকে শাস্তি কার্যকরের আহ্বান জানান ইতালির সর্বোচ্চ আদালত। আর তাই ২০২৪ সালের মার্চে রবিনহোকে গ্রেপ্তার করে ব্রাজিল ফেডারেল পুলিশ। এরপর থেকে গত এক বছরে তার জীবন কাটছে সাও পাওলোর ত্রেমেম্বে কারাগারে। কারাগারে রবিনহোর এক বছর কীভাবে কেটেছে, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা।
গত বছর গ্রেপ্তার হওয়ার পর ১০ দিন একটি আইসোলেশন সেলে ছিলেন রবিনহো। পরে তাকে সাধারণ সেলে স্থানান্তর করা হয়। এ বিষয়ে আইনজীবী মারিও রোসো বলেন, ‘সে (রবিনহো) মাথা নিচু করে চুপচাপ কারাগারের দিকে এগিয়ে গেছে। তাকে আদর্শ বন্দি বলা যেতে পারে। অন্য বন্দিদের সঙ্গে তার কোনো সমস্যা হয়নি। নিজেকে সে নানা কাজে ব্যস্ত রাখে।’
বর্তমানে ত্রেমেম্বে কারাগারে আট বর্গমিটারের একটি কক্ষে থাকেন রবিনিও। তার সঙ্গে ২২ বছর বয়সী এক যুবক আছেন, জয়াকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যম মার্কার তথ্য অনুযায়ী, জেলে রোদ পোহানোর সময় রবিনহো প্রায় দিনই খেলাধুলায় অংশ নেন। ফুটবল খেলার সময় অন্যদের কাছ থেকে বুট ধার নেন। কারাগারেই তিনি ৬০০ ঘণ্টার ইলেকট্রনিকস কোর্স করেছেন। এখন তিনি টেলিভিশন ও রেডিও মেরামত করেন। বই পড়ুয়াদের ক্লাবেও ভর্তি হয়েছেন রবিনহো। এ ছাড়া তিনি সবজি বাগানের পরিচর্যা করেন। সর্বশেষ কাজের বিনিময়ে শিক্ষা ও নাগরিকত্ব কর্মসুচির ১০টি মডিউল সম্পন্ন করেছেন রবিনিও। প্রতি ১২ ঘণ্টা কাজের জন্য তার শাস্তির মেয়াদ একদিন করে কমানো হচ্ছে।
জেলে তার সঙ্গে প্রায়ই দেখা করতে যায় তার বড় ছেলে। ১৭ বছর বয়সী ছেলে রবসন রবিনহো জুনিয়র সমপ্রতি রবিনিওর শৈশবের ক্লাব সান্তোসের মূল দলে ডাক পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি সেখানে নেইমারের সতীর্থ হিসেবে দলের সঙ্গে রয়েছেন।
নিজের কারাদণ্ডের বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে রবিনহো বলেন, ‘চাইলে আমি অস্বীকার করতে পারতাম। কিন্তু আমি মিথ্যাবাদী নই। আমাদের সম্পর্ক অতি-প্রাকৃতিক এবং দ্রুত হয়েছিল। সেখানে আরও লোকজন ছিল।’ এ বিষয়ে ২০২০ সালে ইতালির রাজধানী রোমের আদালত জানায়, রবিনহোসহ ছয়জন ওই রাতে সেই নারী ধর্ষণ করেন, যারা সবাই ছিলেন ব্রাজিলিয়ান। তাদের একজন রিকার্দো ফালকো রবিনহোর বন্ধু, আরেকজন রুদনি গোমেজ রবিনহোর দেহরক্ষী ছিলেন।