খেলা
ফেরা নিয়ে চিন্তা নেই রনির
সৌরভ কুমার দাস
২২ মার্চ ২০২৫, শনিবার
২০১৫ বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ২১ উইকেট নিয়ে আলোচনায় আসেন আবু হায়দার রনি। পরের বছর জাতীয় দলের দরজাও খুলে যায় তার জন্য। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশিদিন টিকতে পারেননি এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। মাঝে অনেকটা আড়ালেও চলে গিয়েছিলেন জাতীয় দলের হয়ে ২ ওয়ানডে ও ১৩ টি-টোয়েন্টি খেলা রনি। এরপর আবার ফিরেছেন, এনসিএল টি-টোয়েন্টি, বিপিএলের পর চলমান ডিপিএলেও ভালো করেছেন তিনি। চলতি ডিপিএলে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ৯ উইকেট শিকার করা রনি দৈনিক মানবজমিনের সঙ্গে আলোচনায় বর্তমান ফর্ম, ব্যাটিং, জাতীয় দলে ফেরার চ্যালেঞ্জসহ কথা বলেছেন নানা বিষয়ে। তারই চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো-
ডিপিএল শুরুর আগে টানা দুটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলেছেন, সেখান থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটে খেলার জন্য কী প্রস্তুতি নিয়েছেন?
রনি: প্রফেশনাল ক্রিকেটার যারা আছে প্রত্যেকেরই সবসময় ৩ ফরম্যাটের জন্যই রেডি থাকা উচিত। আমার কাছে এটা আসলে ম্যাটার করে না যে টি-টোয়েন্টি খেলে এসে ওয়ানডেতে মানিয়ে নেওয়ার ওইরকম কোনো ব্যাপার আছে কিনা। ওভার হয়তো বেশি, ২০ থেকে ৫০! তবে প্রসেস যেটা থাকে টি-টোয়েন্টিতে নতুন বলে প্রথম দুই ওভার যেভাবে বোলিং করতে হয় ৫০ ওভারের ম্যাচে এটা প্রথম ৫ ওভার হতে পারে। সো, লাস্টের দুই ওভার ৫০ ওভারের ডেথ ওভার একই। প্রসেসটা গুরুত্বপূর্ণ, আমি যেহেতু ১০-১২ বছর ধরে খেলছি, আমি জানি ৫০ ওভারের ক্রিকেটটা কিভাবে খেলতে হয়। ওই প্রসেসটা ফলো করার চেষ্টা করি।
নতুন বলে সুইং পাওয়া নিয়ে আলাদা কাজ করেছেন?
রনি: আলাদা কাজ বলতে, সুইংটা আমার ন্যাচারাল...যখন খেলা শুরু করি তখন থেকেই ছিল। সুইংয়ের সঙ্গে জায়গাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ, এখানে যারা আছে সবাই এলিট লেভেল ক্রিকেটার। জায়গা একটু এলেমেলো হলে রান কনসিড করার চান্স খুব বেশি থাকে। ওটার জন্য স্পট বল করতে হয় অনেক। সুইংয়ের সঙ্গে যেন কনসিসটেন্ট একটা জায়গায় করতে পারি কারণ, নতুন বলে যদি ভালো জায়গায় সুইং করাতে পারি তাহলে আর্লি উইকেট নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেটা দলকে হেল্প করি, আমি এটাই চেষ্টা করি।
পেস কমে গিয়েছিল, ফেরালেন কীভাবে?
রনি: পেস বোলিং পুরোপুরি নির্ভর করে আমাদের বডি কিভাবে সাপোর্ট করছে সেটার ওপর। যখন আপনি ফুল সিজন খেলছেন, শেষের দিকে বডিটা হয়তো একটু ফ্যাটিগ বেশি থাকে তখন দেখা যায়, বেশিরভার খেলোয়াড়ের পেসটা একটু কমে যায়। আমার কাছে মনে হয় না এটা চিন্তার কারণ, আমরা জানি কিভাবে আমাদের বডি মেইনটেইন করা লাগে কিভাবে টেক কেয়ার করতে হয়। আমরা যদি প্রপার প্রসেস ফলো করতে পারি তাহলে পেস ধরে রাখা সম্ভব। তবে যদি দেখা গেলো ১০ কিলোমিটার গতি কমে গেছে তখন হয়তো টেকনিক্যাল কোনো ফল্ট থাকতে পারে তবে আমার কাছে মনে হয় ৩-৪ কিমি কমলে সেটা টানা খেলার কারণে কমতে পারে।
জাতীয় দলে পেসারের ভিড়, ফেরাটা কতোটা চ্যালেঞ্জিং মনে হয়?
রনি: এগুলো নিয়ে এখন চিন্তা করি না। চেষ্টা করি খেলাটা উপভোগ করতে, ফিট থাকতে। দল আমার কাছে কী চাচ্ছে সেটা পূর্ণ করতে পারছি কিনা সেটা চেষ্টা করি। আর ফিরবো কি ফিরবো না এসব নিয়ে এত চিন্তা করি না। এগুলো নিয়ে এত চিন্তা করলে নিজের খেলা নষ্ট হয়। আল্লাহ যদি কপালে রাখে ফিরবো না হলে নাই!
মানবজমিন: ব্যাটিং দিয়ে দলের জন্য অবদান রাখতে পারলে...
রনি: এটা আমার কাছে খুবই স্যাটিসফাইং। বোলিংয়ের সঙ্গে যদি ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারি খুবই ভালো লাগে আর চেষ্টাও করছি ব্যাটিংটা আরও ভালো করার। আমি যদি ব্যাটিংটা ভালো করতে পারি দলের জন্য বাড়তি লাভ। ব্যক্তিগতভাবে আমার ক্যারিয়ারের জন্যও লাভ! চেষ্টা করছি দলের জন্য ব্যাটিং দিয়েও অবদান রাখার জন্য।
জাতীয় দলে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জায়গা তো ফাঁকা...
রনি: বাংলাদেশ দলে এই জায়গাতেই একটা স্লট ফাঁকা আছে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের। তো অবশ্যই এদিকে আমার চোখ আছে। আমি যদি ভালো করতে পারি তাহলে অবশ্যই সুযোগ আসবে।
এবারের লীগে লো স্কোর হচ্ছে কেন বলে মনে হয় আপনার?
রনি: কয়েকটা ম্যাচে উইকেট খুব বাজে ছিল। এখানে ব্যাটারেরও দায় দেওয়া যাবে না। দেখা যাচ্ছে প্রথম বল থেকেই অনেক টার্ন করছিল, অসমান বাউন্স ছিল, নিচু হচ্ছিল! রান হওয়ার জন্য উইকেটটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভালো উইকেটে খেললে আমাদের ব্যাটাররা শিখবে কিভাবে কম ডট বল দেয়া যায়। ওয়ানডেতে আমরা পিছিয়ে একটা জায়গাতেই...অনেক ডট বল খেলি। উইকেট ভালো হলে এটা কমবে, ব্যাটাররা শিখবে বড় রান করতে আর বোলাররাও শিখবে কিভাবে ভালো উইকেটে বোলিং করতে হয়।