খেলা
হামজাকে নিয়ে কী পরিকল্পনা কোচের
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার
এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলতে আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকা ছাড়বে বাংলাদেশ ফুটবল দল। বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ আগামী ২৫শে মার্চ। শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচ। ভারত ম্যাচ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হবে হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলা এই ফুটবলার ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে আসছেন আগামীকাল। হামজা এক সপ্তাহ আগে এলেও এই সময়ের মধ্যে তার জন্য কোনো প্রস্তুতি ম্যাচের ব্যবস্থা করেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ফলে হামজাকে দলের সঙ্গে অনুশীলন করেই সরাসরি ২৫শে মার্চ ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে। বাংলাদেশ ফুটবল দল এখন সৌদি আরবের তায়েফে ক্যাম্প করছে। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে সৌদি ক্লাব আল ওয়েদাতের সঙ্গে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলেছে কাবরেরার শিষ্যরা। সৌদি আরবে ১৫ দিনের লম্বা ক্যাম্প শেষে আজ দেশে ফিরবে বাংলাদেশ দল। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ, ভারত, সিঙ্গাপুর ও হংকং একই গ্রুপে। ভারত ১৯শে মার্চ ম্যাচ ভেন্যু শিলংয়েই মালদ্বীপের সঙ্গে খেলবে। সিঙ্গাপুর হংকংয়ের বিপক্ষে খেলার আগে খেলবে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ নেপালের বিপক্ষে। সেখানে সৌদি আরবে প্রতিপক্ষ খুঁজে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশ। এতে বাফুফের পরিকল্পনার দায় দেখছেন অনেকে। প্রশ্ন ওঠার বড় কারণ, লাখ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরবে গিয়ে কোনো শক্তিশালী দেশের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে না পারায়। এত অর্থ ব্যয় করে সৌদি ক্যাম্প করার চেয়ে ঢাকায় অনুশীলন করলে আরও লাভ হতো বলে মনে করেন অনেকে। ওই অর্থ দিয়ে ঢাকায় কোনো দেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ভারত ম্যাচের প্রস্তুতি নেওয়া যেত বলে বিশ্বাস ফুটবল-সংশ্লিষ্টদের। সেক্ষেত্রে হামজা চৌধুরীকেও পরখ করার সুযোগ পেতেন কাবরেরা। গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি ক্যাম্প শুরু করেন এই স্প্যানিশ কোচ। ঢাকায় কয়েক দিন অনুশীলনের পর ৫ই মার্চ সৌদি আরবে চলে যায় দল। সেখানে সুদানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি। তায়েফের আল ওয়েদাতের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে সৌদি আরবে এভাবে ক্যাম্প করাটা ভালোভাবে নেননি অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাফুফের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত এর পর থেকে সৌদি আরবে তখনই দল পাঠাব, যদি বড় কোনো দেশের সঙ্গে ম্যাচ খেলার নিশ্চয়তা পাই। অন্যথায় বাংলাদেশে অনুশীলন করিয়ে বিভিন্ন দেশকে এখানে এনে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলানোর পক্ষে আমি। যে টাকা খরচ করে সৌদি আরবে দল পাঠাব, সেই অর্থ দিয়ে দেশের মাটিতে কোনো দলকে এনে খেলালে আমাদের লাভ হতো। এই বিষয়টি আমি ভবিষ্যতে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভাতে বলব। সামনে যে দলের সঙ্গেই খেলা, তার আগে ঢাকায় কোনো দলকে এনে ম্যাচ খেলাব।’ কোচ কাবরেরার পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্ন এই কর্তার। ফিফা উইন্ডোতে ম্যাচের ৭২ ঘণ্টা আগে ক্লাব জাতীয় দলের জন্য খেলোয়াড় ছাড়তে বাধ্য। কিন্তু শেফিল্ড ইউনাইটেড ম্যাচের আট দিন আগেই হামজা চৌধুরীকে ছেড়ে দিয়েছে। এত সময় পাওয়ার পরও বাফুফে হামজার জন্য একটি ম্যাচের ব্যবস্থা করতে পারেনি। এটাকেও বাফুফের ব্যর্থতা জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘হামজা অনেক বড় মাপের খেলোয়াড় এটা নিয়ে কারো সন্দেহ নেই। কিন্তু ও আমাদের ফুটবলারদের সঙ্গে খেলে অভ্যস্ত নয়। এজন্য আমাদের উচিত ছিল দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হামজার জন্য একটি ম্যাচের ব্যবস্থা করা।’ জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার দল নির্বাচন, প্রস্তুতি পরিকল্পনার ঘাটতি বিগত সময়ও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। হামজা চৌধুরীর মতো ফুটবলার বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন এরপরও কোচের পরিকল্পনার গলদ দৃশ্যত। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট বলছেন ভিন্ন কথা। আগামীকাল ১১টায় সিলেট ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামবেন হামজা চৌধুরী। সেখান থেকে মায়ের সঙ্গে হবিগঞ্জের বাহুবলের গ্রামের বাড়িতে যাবেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের এই ফুটবলার। মঙ্গলবার বিকালের ফ্লাইটে হামজা ঢাকা ফিরে সরাসরি হোটেলে দলের সঙ্গে যোগ দিবেন। বুধবার দলের সঙ্গে প্রথম অনুশীলনে নামবেন এক সময়ে ইংল্যান্ড যুব দলে খেলা হামজা। বুসন্ধরা কিংস এরেনায় হতে পারে ওই অনুশীলন। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা চাইছেন ২০শে মার্চ সকালে অনুশীলন শেষে দুপুরের ফ্লাইটে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়তে। সেক্ষেত্রে দুটি অনুশীলন সেশনই ভরসা হামজার।
পাঠকের মতামত
যত গর্জে তত বর্ষে না ভাব দেখে মনে হচ্ছে এই হামজা বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ ফুটবলের শিরোপা পাইয়ে দেবে। আগে ভারতের সাথে তো জিতুক।