ভারত
সংখ্যালঘু বিতর্কে তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
(১ মাস আগে) ১২ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৭:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন

সংখ্যালঘু বিতর্কে বুধবার তপ্ত হয়ে উঠেছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মঙ্গলবার বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করেছিলেন যে, বিজেপি ক্ষমতায় এলে তৃণমূল কংগ্রেসের মুসলিম বিধায়কদের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা থেকে বহিষ্কার করা হবে। চ্যাংদোলা করে বিধানসভার বাইরে এনে ফেলা হবে। এরই প্রতিবাদে বুধবার বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব এনেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ওই নিন্দাপ্রস্তাব পেশ করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানী। তারই বিরোধিতা করতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়কেরা। তাঁদের বক্তব্য, শুভেন্দু অধিকারী অধিবেশনকক্ষে উপস্থিত নেই। এ ভাবে তাঁর সম্পর্কে আলোচনা করা যায় না। শুভেন্দুকে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে বুধবার কালো পোশাক পরেও এসেছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা।
তবে নিন্দা প্রস্তাব নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলতে উঠলে বিজেপি বিধায়করা চিৎকার জুড়ে দিয়েছিলেন। আরও উত্তপ্ত পরিস্থিতির তৈরি হয়। শুভেন্দুর নাম না নিয়ে তার তীব্র সমালোচনা করে মমতা বলেন, আপনি কীভাবে নাগরিক হিসেবে মুসলমানদের অধিকার অস্বীকার করতে পারেন? এটা একটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। আপনি ভুয়ো হিন্দুত্ববাদ আমদানি করছেন। আপনার আমদানি করা হিন্দু ধর্ম বেদ বা আমাদের ঋষিদের দ্বারা সমর্থিত নয়। সংখ্যালঘুদের প্রতি বিজেপির আচরণ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হিন্দু ধর্ম রক্ষা করার অধিকার আমার আছে, কিন্তু আপনাদের মতো করে নয়। দয়া করে হিন্দু কার্ড খেলবেন না। কারণ পশ্চিমবঙ্গে প্রতিটি উৎসব উৎসাহের সাথে পালিত হয়।
শুভেন্দু অধিকারীর হিন্দু জনগোষ্ঠী তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করবে বলে যে ভবিষ্যতবাণী করেছেন তাকে মুখ্যমন্ত্রী বৈষম্যমূলক বলে অভিহিত করেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে বিজেপি নাগরিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন করছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিয়ে বলেছেন, সার্বভৌমত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বহুত্ববাদ ভারতীয় গণতন্ত্রের প্রধান স্তম্ভ এবং দেশের প্রত্যেকেরই তাদের নিজস্ব ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। একজন ব্যক্তি হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিস্টান বা পার্সি যাই হোন না কেন, প্রত্যেকেরই নিজস্ব ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। তিনি বলেন, একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে, সকলের যত্ন নেওয়া আমার দায়িত্ব। আমরা সকলের যত্ন নিই।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মুসলিম বিধায়ক হুমায়ুন কবীর পাল্টা শুভেন্দু অধিকারীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ৭২ ঘন্টার মধ্যে তিনি মন্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে রাজ্যের ৪২ জন মুসলিম বিধায়ক তার মোকাবিলা করবে।