অনলাইন
বিদ্যুৎ-গ্যাস খাত সংস্কারে ক্যাবের ৩৬ প্রস্তাব
স্টাফ রিপোর্টার
(২ বছর আগে) ৪ আগস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৭:১১ অপরাহ্ন
জ্বালানি সনদ অন্যায্য দাবি করে ৩৬ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। গ্যাসখাতের সংস্কারে ২৫ দফা ও বিদ্যুৎখাতের সংস্কারে ১১ দফা প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ক্যাব আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি বাস্তবায়নে জ্বালানি সনদ চুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক সংলাপে এসব প্রস্তাব করা হয়।
গ্যাসখাত সংস্কারের লক্ষ্যে ক্যাবের ২৫ দফা প্রস্তাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- প্রকৃত মূল্যবৃদ্ধি ছাড়া অযৌক্তিক ব্যয়বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে ঘাটতি সমন্বয়, বিদ্যমান ভতুর্কি ১০ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা ও উদ্বৃত্ত রাজস্ব ২ হাজার ৫৩৭.৯১ কোটি টাকা এলএনজি আমদানি পর্যায়ে সমন্বয় করে গ্যাসের মূল্যহার ৯.৫৩ টাকা নির্ধারণ করা, পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের (বিইআরসি) নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে ‘গ্যাস উন্নয়ন তহবিল’ পরিচালনা।
তাদের প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, বিইআরসির আদেশ-আইন লঙ্ঘন করে এখতিয়ার বহিভূর্তভাবে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ব্যয়ের দায়ে পেট্রোবাংলার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। তিতাসের বিতরণ চার্জ নির্ধারণে ২ শতাংশ সিস্টেম লস সমন্বয়ের প্রস্তাবে আপত্তি রয়েছে। এছাড়া, তিতাসকে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগকৃত মূলধনের ওপর ১০ শতাংশ মুনাফা দেয়ার বিষয়েও ক্যাবের আপত্তি রয়েছে।
গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে ক্যাবের প্রস্তাবগুলো হলো-পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগ উভয়ের বিরুদ্ধেই আনীত অদক্ষতা ও ব্যর্থতার অভিযোগ তদন্তের জন্য ভোক্তা পক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কারিগরি কমিটি গঠন, রি-গ্যাসিফিকেশন চার্জ নির্ধারণে ঋণ বা বিনিয়োগকৃত মূলধনের ওপর ১৮ শতাংশ মুনাফার পরিবর্তে ৭ শতাংশ দিতে হবে।
এলএনজি ক্রয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন ও সঞ্চালন-বিতরণ ক্ষমতা উন্নয়নে নেয়া বিইআরসি অনুমোদিত প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগকারীর ‘ইকুইটি বিনিয়োগ’ হিসেবে বিনিয়োগ করা, গ্যাসখাতে সুশাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য একটি সমন্বিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠন।
বিদ্যুৎখাত সংস্কারে ক্যাবের ১১ দফা প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-সরকারি কোম্পানিগুলোর অযৌক্তিক ও অসদুপায়ে পুঞ্জীভূত মুনাফা ও ক্যাপাসিটি চার্জ ও সাশ্রয়ী উদ্বৃত্ত অর্থে সরকারি ভর্তুকি সমন্বয় করে ৩ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা নির্ধারণ, অবৈধভাবে নির্ধারিত ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের বর্ধিত মূল্য ও কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ক্রয়কৃত মূল্য বিইআরসি কর্তৃক পুনর্মূল্যায়নক্রমে নির্ধারিত যৌক্তিক বর্ধিত মূল্য ও পুনর্র্নিধারিত মূল্য পিডিবির পরিবর্তে সরকারি ভর্তুকি দ্বারা পরিশোধ।
সরকারি, যৌথ ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্ল্যান্টগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংশ্লিষ্ট ব্যয় অন্যায় ও অযৌক্তিক উল্লেখ করে ক্যাব দাবি জানায়, অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয়ের বিষয়টি নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (নওপাজেপাকো) খুলনা ডিজেল বিদ্যুৎকেন্দ্র ও যৌথ মালিকানাধীন পায়রা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রযোজ্য।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি (আরই) উন্নয়নে বিদ্যুৎ-জ্বালানির বাজার আরই’র জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে, বিদ্যুৎখাতে সুশাসন, দক্ষতা-সক্ষমতা উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পিডিবি ও বিইআরসি’র কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
পিডিবির রাজস্ব চাহিদায় মুনাফা ও করপোরেট ট্যাক্স অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বিইআরসির কারিগরি কমিটি গঠনের (টিসি) প্রস্তাবে ক্যাবের আপত্তি রয়েছে।
সংলাপে অংশ নেন ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, কোষাধ্যক্ষ ড. মনজুর ই খোদা, প্রকৌশলী শুভ কিবরিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রতিনিধিরা।