খেলা
যে কারণে ফাহিমের পদত্যাগ চাইছেন ক্লাব কর্মকর্তারা
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার
এইতো ক’দিন আগে বিসিবি’র সভাপতি ফারুক আহমেদের ওপর নানা অভিযোগ এনে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম। মন মতো কাজ করতে না পারা, সভাপতির একনায়কতন্ত্রসহ নানা অভিযোগ ছিল তার। পরে অবশ্য বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ফাহিমের সঙ্গে কথা বলে ওই সংকটের সমাধান করেছেন। তবে এবার ফাহিমকে নিয়ে নতুন সংকটে পড়েছে বিসিবি। বিশেষ করে ফাহিমের নেতৃত্বে গঠিত গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির খসড়া গঠনতন্ত্রে ঢাকার ক্লাবগুলোর প্রতিনিধি কমানোর যে প্রস্তাব তিনি রেখেছেন, তা-ও আর গোপন নেই। ইতিমধ্যেই বিষয়টি চাউর হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ফুঁসে উঠেছেন ক্লাব কর্মকর্তারা। এরইমধ্যে ঢাকার ক্লাব কর্মকর্তারা বিসিবি’র এই পরিচালকের পদত্যাগ দাবি করে আল্টিমেটাম দিয়েছেন। মোহামেডানের কর্মকর্তা মাসুদুজ্জামান এই খসড়া গঠনতন্ত্রকে ক্লাবগুলোর জন্য অপমানজনক বলছেন। সরকারের পট পরিবর্তনের পরেই দেশে ছাড়েন বিসিবি’র তৎকালিন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কোটায় বিসিবি’র পরিচালক হয়ে পাপনের স্থলাভিষিক্ত হন ফারুক আহমেদ। তার সঙ্গে বোর্ড পরিচালক হয়ে বিসিবিতে আসেন নাজমুল আবেদিন ফাহিম। দায়িত্ব নিয়েই ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্রে সংশোধন আনার কথা বলেন ফারুক আহমেদ। সেটির ধারাবাহিকতায় পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের নেতৃত্বাধীন গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রাখা হয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের পিএস মো. সাইফুল ইসলামকে। কমিটির বাকি তিন সদস্য আইনের তথা বিসিবির লিগ্যাল অ্যাডভাইজর মো. কামরুজ্জামান, ব্যারিস্টার শেখ মাহদি এবং এ কে এম আজাদ হোসেন। এরইমধ্যে এই কমিটি বিদ্যমান গঠনতন্ত্রের ধারা-উপধারায় কাট-ছাঁট করে একটি রূপরেখা দাঁড় করিয়েছেন। যেখানে ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে ঢাকার ক্লাব গুলোর। বর্তমানে ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে ১২ জন পরিচালক আসতে পারেন বিসিবিতে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ক্লাব থেকে সেটি কমিয়ে মাত্র ৪ জন পরিচালকে নিয়ে আসা হয়েছে। আগে ১০ জন পরিচালক আসতে পারতেন বিভাগ ও জেলা থেকে। সেটি বাড়িয়ে ১৩ করার প্রস্তাব আনা হচ্ছে। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে ২৫
জন পরিচালক থেকে কমিয়ে আনা হচ্ছে ২১-এ। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিভাগ-জেলা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও ইন্সটিটিউশনের ১৭ জন। ঢাকার ক্লাব কোটার পরিচালকের সংখ্যা ১২ থেকে চারে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং কাউন্সিলরের সংখ্যা ৭৬ থেকে ৩০-এ নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেছে। এতেই চটেছেন ক্লাব কর্তকর্তারা। সিসিডিএমের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মোহামেডানের ক্রিকেট কমিটির কর্মকর্তা মাসুদুজ্জামান বলেন, ‘নাজমুল আবেদিন ফাহিম সাহেব প্রকারান্তরে আমাদের ছোট করেছেন। ৭৬ জন কাউন্সিলর থেকে ৩০-এ নামিয়ে আনার যে প্রস্তাব করেছেন, তা অপমানকর। সেখানে আমাদের জন্য মাত্র ৪ জন পরিচালক রাখার প্রস্তাব করেছেন তিনি। শুনেছি তিনি তিন আইনজীবিকে নিয়ে গঠনতন্ত্র সংশোধন করেছেন। যারা মাঠের ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের সাথে কথা না বলে কী করে এমন প্রস্তাব তিনি দিলেন? আমরা তাই তার পদত্যাগ চাইছি।’ বিসিবির সাবেক যুগ্ন সম্পাদক এবং বিসিবির দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন? ‘অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে দেশের ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে। বিসিবির গঠনতন্ত্রে ক্লাবসমূহকে যথাযথ সম্মান দিতে হবে। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক ফাহিম ভাইকে (নাজমুল আবেদিন) জবাবদিহি করতে হবে। গঠনতন্ত্রের খসড়া সংশোধনীতে পরিবর্তন না আনলে ওনাকে পদত্যাগ করতে হবে।’
পাঠকের মতামত
খুব ভালো উদ্যোগ, বাস্তবায়িত হলে ক্রিকেট লাভবান হবে।
ফাহিম স্যারের প্রস্তাব নিয়ে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করবে এটা খুবই স্বাভাবিক। তাদের বিজনেস বন্ধ হয়ে যাবে এটা করা হলে।
ফাহিম স্যারের কথা ভালো লাগার কোনো কারণ নাই। আজকাল সবাই ক্লাব কর্মকর্তা। কোনো ভাবে বিসিবিতে ঢুকতে পারলে আর ছাড়ার নাম নাই। কারণ সেখানে টাকার ছড়াছড়ি। মোহামেডানের কর্মকর্তা মাসুদুজ্জামান এই খসড়া গঠনতন্ত্রকে ক্লাবগুলোর জন্য অপমানজনক বলছেন। মাসুদ বা মহামেডান গত ১৫ বছরে ক্রিকেটে কি অবদান রেখেছে? খেলোয়ারদের বেতনের টাকা দেন না, আবার বড় বড় কথা। সবাই আজকাল নেতা হতে চায়!