ভারত
‘মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া আমাদের কাজ নয়’
সেবন্তী ভট্টাচার্য্য, কলকাতা থেকে
(৩ সপ্তাহ আগে) ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ২:৪৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:৫৪ অপরাহ্ন
‘মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া আমাদের কাজ নয়।’ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের আরজিকর হাসপাতাল মামলার শুনানিতে আইনজীবীকে এমনটাই বললেন ভারতের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, ‘এটা কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। বিচারের পদ্ধতি মেনে চলুন। আমরা চিকিৎসকদের চিন্তার বিষয়গুলি দেখছি। আপনি যদি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদত্যাগের নির্দেশ দিতে হবে, সেটা হতে পারে না। এটা আমাদের কাজ নয়।’
আজ জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং । তিনি বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারদের আস্থা অর্জনের জন্য রাজ্যের সঙ্গে তাদের যে বোঝাপড়া, তা নথিবদ্ধ রাখা হোক। আমরা জানি, আমাদের সব দাবি এক দিনে পূরণ হবে না। জুনিয়র ডাক্তারেরা কাজে ফিরতে চান। কিন্তু এ বিষয়ে এখনই নজর দেওয়া দরকার।”
কর্মবিরতি তোলা প্রসঙ্গে ইন্দিরা বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারেরা জেনারেল বডির মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেবেন। তার জন্য একটু সময় লাগবে।”
প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, “২৮টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে । আরও ১৭টি হাসপাতাল সরকারের সঙ্গে যুক্ত। সেখানে ১৮-২৩ বছরের তরুণীরা কাজ করেন। তাদের নিয়ে কাজ করতে হয়। তাদের নিরাপত্তায় চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ হলে নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক।”
রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, “আবার নিরাপত্তার দায়িত্বে অস্থায়ী কর্মী রাখবেন? যেখানে সব সময় কাজ চলছে। ডাক্তাররা ৩৬ ঘণ্টা কাজ করছেন। সেখানে এমন নিরাপত্তা কেন?”
হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেই বিষয়ে আজ রিপোর্ট দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সব হাসপাতালে ডাক্তারদের জন্য শৌচাগার, বিশ্রাম কক্ষ, সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। চিকিৎসকদের ডিউটি রুমে নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। ডাক্তারদের নিরাপত্তার স্বার্থে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল, সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে জেলাশাসককে কথা বলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত হাসপাতালে সিসিটিভি বসাতেই হবে, সময়সীমা বেঁধে দিলেন প্রধান বিচারপতি।
রাজ্যের তরফে বলা হয়, নারী চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে ডিউটি ১২ ঘণ্টার বেশি না করা ও রাজ্যের নিয়ম মেনে রাতে ডিউটি না দেওয়ার কথা। পালটা বিচারপতি বললেন, কী করে বলছেন যে মেয়েরা রাতে কাজ করবেন না? মেয়েরা কাজ করতে প্রস্তুত, তাদের কোনও ছাড় প্রয়োজন নেই। এর পরই রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলকে প্রধান বিচারপতি বললেন, 'ছাড় নয়, নারীদের নিরাপত্তা দিতে হবে।' সুপ্রিম কোর্ট জানায়, আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার দিন অকুস্থলে কারা ছিলেন, সেই সব নাম জমা দিতে পারবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। একই সঙ্গে তদন্তকারী সংস্থাকে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, তদন্তের স্বার্থে ওই বিষয়গুলি নিয়ে সিবিআইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।