ঢাকা, ৭ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

স্বৈরাচারের পতনই সব শেষ নয়: ইফতেখারুজ্জামান

স্টাফ রিপোর্টার

(৩ সপ্তাহ আগে) ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৯:৩৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৩:২৮ অপরাহ্ন

mzamin

স্বৈরাচারের পতন হয়েছে এতেই সব শেষ নয়। এটা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের একটা মাধ্যম বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, বাক স্বাধীনতা খর্ব করে দেশেকে সার্ভেইলেন্স বেইজড সোসাইটি বা নজরদারিভিত্তিক সমাজে পরিণত করা হয়েছিল। স্বৈরশাসকরা ভেবেছিলেন তারা অপরাজেয়। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম যে তার চেয়েও বেশি অপরাজেয় এটি তারা ভুলে গেছেন। 

বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রোববার ধানমন্ডির টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন: তরুণদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও আবু বাকের মজুমদার, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীবসহ তরুণ পেশাজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ইতিহাসের শিক্ষা হচ্ছে, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। এটা আরেকবার প্রমাণ হয়েছে। যে কারণে পদদলিত হতে হয়েছে স্বৈরাচারকে।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। কিন্তু অভিষ্টের বিবেচনায় মূল লক্ষ্য নতুন বাংলাদেশ। রাষ্ট্র সংস্কারের কথা আমাদের তরুণ প্রজন্ম বলছেন। বর্তমান ও আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আমাদের কাছে যে চেতনা নতুন করে প্রস্ফুটিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে প্রভুত্ববাদ অবসান, সহনশীলতা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু এতেই সব শেষ নয়। স্বৈরাচারের পতন ছিল একটা মাধ্যম। নতুন নতুন জায়গায় যাওয়ার একটা মাধ্যম। সেই নতুন জায়গাটা হলো আমাদের নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার ও রাজনৈতিক সমঝোতা করতে হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে আমাদের রাষ্ট্র কাঠামোতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর করে দেয়া হয়েছে। সেগুলোকে কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই চর্চায় ত্রিমুখী আঁতাত কাজ করেছে। রাজনৈতিক শক্তি একদিক থেকে আমলাতন্ত্র আরেকদিক দিক থেকে। অন্যদিক থেকে বিনিয়োগকারীরা কাজ করেছেন। দুর্নীতি সহায়ক ও দুর্নীতিকে সুরক্ষা দেয়ার মতো রাষ্ট্র কাঠামো তৈরি হয়েছে। যার ফলে সমাজে বৈষম্য বেড়েছে। সেটাকে ধারণ করার জন্য আমাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সমন্বয়কদের সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সবার আন্দোলন ছিল। পরবর্তী সময়ে এটাকে সর্বজনীন করতে হলেও আমাকে সবার কাছে যেতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ সমন্বয়ক বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাতে ঘুমানোর আগে যাই একটু সমন্বয়কদের গালাগালি করে আসি। কমেন্টসে গালাগালি করে আসি। কারণ এটা সবচেয়ে সেইফ জোন। আমরা ভলান্টিয়ার বেসিসে কাজ করছি। আমরা অথরিটি না। আমরা সবার সহযোগিতা চাই। আমরা অথরিটি না, লিগ্যাল এনটিটি নই। মানুষ ডিভোর্সের সমস্যা থেকে শুরু করে সচিব পদবি চেঞ্জ করার জন্য (আমাদের কাছে) আসেন। কিন্তু আমাদের অথরিটি নাই। যদি আমাদের কোনো ভুল থাকে সেটা কীভাবে সংশোধন করবো। সেটা কীভাবে অ্যাড্রেস করবো- সে বিষয়ে প্রপার সমাধান করেন। এটা হলে আমাদের জন্য কাজ করা সহজ হয়।

তরুণরা সুশীল সমাজের পরামর্শ চায় জানিয়ে তিনি বলেন, একটি রিয়েলস্টিক এটিটিউড তৈরি হয়েছে। এটার দায়ভার সুশীল সমাজ এড়াতে পারেন না। বুদ্ধিজীবীরা ১৯৭১, ২০২৪ এ ফেইল মারছেন। আমাদের ক্ষমতা বিমুখতা বা আমরা কেন ভয় পাই- এ দায়ভার সুশীল সমাজকে নিতে হবে। ২০২৪ যদি ৯০ এর পুনরাবৃত্তি হয়, একাত্তরের পুনরাবৃত্তি হয়, ৫২’র পুনরাবৃত্তি হয় তাহলে আমাদের যে শক্তি বা সামর্থের জায়গা তৈরি হয়েছে সেটা আর কখনোই পুনরায় মঞ্চায়ন সম্ভব হবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, জনগণের ভাষা যেটা লড়াই ও প্রতিরোধের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে সেটাকে আমরা ক্ষমতায় আসতে দেখিনি। আমাদের রাজনৈতিক দল থেকে পরিবারতন্ত্র সরাতে হবে। তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্খা তৈরি হয়েছে। এই আকাঙ্খার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি রূপান্তর করতে হবে। এই রূপান্তর কোনো মাইনাস প্রক্রিয়া না। গণঅভ্যুত্থানে যে স্পিরিট তৈরি হয়েছে সেটি দেখে থাকলে অনুধাবন করতে পারলে দলগুলোতে রূপান্তর ঘটবে। আমরা দেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে রূপান্তর দেখতে চাই। আমরা এই বোঝাপড়া করতে চাই সবার সঙ্গে বসতে চাই। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা কী ছিল সেই আলাপ আমরা শুনতে চাই। এরপরে আগামী বাংলাদেশের রূপরেখা আমরা সাজাতে চাই। কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন বলেন, শিল্প-সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। শুভ বোধসম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে হবে। সাংবাদিক সিমু নাসের, ফারাবী হাফিজ আলোচনায় অংশ নেন। 
 

পাঠকের মতামত

বুদ্ধিজীবীরা ১৯৭১ ও ২০২৪-এ ফেইল মারছে। এটা কেমন ভাষা? কিছুদিন আগে শুনলাম শেখ হাসিনার বিরোধিতার কারণে নয়, ল্যাঙ্গুয়েজের কারণে এবার সফলতা এসেছে। ভবিষ্যৎ খুব ভালো মনে হচ্ছে না।

Zulfiquar Ali
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন

দেশ থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী প্রেতাত্মা দূর না হবে ততক্ষন পর্যন্ত আপনাদের কথাই কোনো বিশ্বাস করি না

syed
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১১:১৫ অপরাহ্ন

রাজনৈতিক দল গুলোর দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে চাই।

মাহফুজ দুলাল
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১০:৫৫ অপরাহ্ন

Susil somager protinidi.

Limon sarker.
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১০:৩২ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status