লোহাগড়ায় বিএনপি’র দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ২ ভাই নিহত

নড়াইলের লোহাগড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র দু’গ্রুপের সংঘর্ষে দুই ভাই নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচ জন। এ ঘটনায় ওই গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল সকাল পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার চরমল্লিকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের মৃত সামাদ শেখ’র ছেলে মিরান শেখ ও জিয়ারুল শেখ। আহতদের মধ্যে নিহতের ভাই ইরান শেখের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাহমুদ খান ও জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌস শেখের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে কর্মী সংগ্রহ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ দূর করতে উভয় গ্রুপের নেতারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কবুল মেম্বারের বাড়িতে একটি শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা-হামলা ও নির্যাতনে নেতাদের ভূমিকাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনায় উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই সমাবেশস্থল থেকে বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পৌঁছে যায় বাহিরে অপেক্ষমাণ লোকজনের কাছে। এ সময় ওই গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার কালাম হুজুরের মুদি দোকানের পেছনে অপেক্ষমাণ পটু খানের ছেলে বাবু খান, ইদ্রিস মৃধার ছেলে হাসান মৃধা, হারুন মৃধার ছেলে হিরণ মৃধা, রাজ্জাক খানের ছেলে জহির খান, দেলোয়ার খান ও পটু খান, ফাইজার মোল্যার ছেলে শুভ মোল্যা, মৃত আতিয়ার খানের ছেলে তৌহিদুল খান ও মফিজ খানের ছেলে আবির খানসহ প্রায় ২০-৩০ জন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ফেরদৌস গ্রুপের লোকজনের ওপর হামলা করে। 
শান্তি সমাবেশ মুহূর্তের মধ্যে রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় দু’জন। অপর আহত চারজনের চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা মাহমুদ খানের বাড়িসহ ইকবাল ও কালামের বাড়িঘর আগুন ধরিয়ে সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়। আগুনের সংবাদ পেয়ে লোহাগড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সংবাদ পেয়ে নড়াইলের পুলিশ সুপার, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন। এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) দোলন মিয়া। লোহাগড়া থানার দায়িত্বরত ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।