খেলা
মামলার আসামি হলেও যুক্তরাষ্ট্রের লীগে খেলতে বাধা নেই মাশরাফির
স্পোর্টস ডেস্ক
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারজাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও গত মাসে পতন হওয়া আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার নামে মামলা হয়েছে। গতকাল মধ্যরাতে তার নির্বাচনী আসন নড়াইল দুইয়ে নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও মারধর করার অভিযোগে মামলাটি করেন সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মুজাহিদুর রহমান। মাশরাফিকে ১ নম্বর ও তার বাবাকে করা হয়েছে ২ নম্বর আসামি। এছাড়া আরও ৯০জন সহ ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ও ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ (ডিপিএল) ছাড়া অন্য কোথাও মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দেখা যায় না এখন। ডিপিএলের গত আসরের পর থেকেই মাঠের বাইরে টাইগারদের সাবেক এই অধিনায়ক। লম্বা সময় শেষে মাঠের খেলায় ফিরছেন মাশরাফি। যুক্তরাষ্ট্রে ইউএস মাস্টার্স টি-টেন লীগে দল পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ককে ড্রাফট থেকে দলে ভিড়িয়েছে ডেট্রয়েট ফ্যালকনস। তবে মামলা হওয়ায় মাশরাফির মাঠে ফেরা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। যদিও নড়াইলের এসপি মানবজমিনকে জানিয়েছেন, মামলা হলেও মাশরাফির বিরুদ্ধে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা নেই। তিনি যেখানে খুশি যেতে পারেন।
নড়াইল ২ আসন থেকে টানা দুইবার নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মাশরাফি। গত জানুয়ারিতে নির্বাচনের পর নতুন সংসদে হুইপ করা হয় তাকে। এই মামলায় মাশরাফি ও তার বাবা গোলাম মুর্তজার পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস ও সাধারণ সম্পাদক নিজামুদ্দিন খানকে করা হয়েছে ৩ ও ৪ নম্বর আসামি।
এছাড়া নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আঞ্জুমান আরা, সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল কুন্ডু ও সরদার আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মলয় কুন্ডু, জেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি মাসুম, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, নড়াইল পৌরসভার কাউন্সিলর কাজী জহিরুল
হক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল সিকদার, আইনজীবী মাহমুদুল হাসান প্রমুখকেও আসামী করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ই আগস্ট জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সদর উপজেলার নাকশি বাজার থেকে মালিবাগ হয়ে মিছিল সহকারে শহরের দিকে আসছিলেন। মিছিলটি শহরের শেখ রাসেল সেতুর পূর্ব পাশে পৌঁছালে ১ থেকে ৪ নম্বর আসামির হুকুমে অন্য আসামি মাহমুদুল হাসান শটগান দিয়ে গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। তখন সাবেক পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেনের হুকুমে আসামি হাফিজ খান মিলন ও নাঈম ভূঁইয়া পিস্তল দিয়ে মিছিলে গুলি করে। এতে মিছিলে থাকা শফিকুল ইসলাম ও সোহান বিশ্বাস নামের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হন। আসামিদের মধ্যে কয়েকজন বোমাবর্ষণ করেন, কয়েকজন ইটপাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ করেন। অন্য আসামিরা লোহার রড, চায়নিজ কুড়াল ও বাঁশের লাঠি নিয়ে নিরীহ মিছিলকারীদের ওপর হামলা করেন। এতে অনেকেই আহত হন। আসামিদের ভয়ে সেসময় আহত অনেকে সঠিকভাবে চিকিৎসা নিতে পারেননি। সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও ক্লিনিকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন এবং অনেকেই গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার সময় অনুকূল পরিবেশ না থাকায় মামলা করতে পারেননি।