বাংলারজমিন
এলাকায় আন্দোলন হয়নি তারপরও আসামি বিএনপি নেতা, আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতিবাদ
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
২ আগস্ট ২০২৪, শুক্রবার
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন তথা পুলিশ এসল্ট মামলায় বিএনপি’র এক নেতাসহ অজ্ঞাত ১৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আতাউল মোস্তফা সোহেলের এলাকা নোয়াপাড়ায় কোটা বিরোধী কোনো আন্দোলন হয়নি। তারপরও তাকে নাশকতার মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বিএনপি নেতার পক্ষ নিয়ে সহানুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও নিজের অবস্থান থেকে সরেননি। তার নাম মো. মিজানুর রহমান। তিনি মাধবপুর উপজেলার বুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান। তিনি সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর চাচাতো ভাই। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিনসহ অন্য সদস্যরা তাকে সমর্থন করে বক্তব্য দেন।
গত বুধবার আওয়ামী লীগ নেতা মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বক্তব্যে বলেন, ‘অপরাধীর বিচার হোক। তবে কোনো ভালো ব্যক্তি যেন শাস্তি না পান, সেদিকে আমাদের নজর দেয়া উচিত। মাধবপুরের কোটা আন্দোলনের জেরে পুলিশের ওপর হামলা ও বেআইনি সমাবেশের যে মামলা হয়েছে এর সঙ্গে সোহেল চেয়ারম্যান কোনো ভাবেই জড়িত নন। সেখানে তিনি উপস্থিতও ছিলেন না। তিনি আমাদের সহকর্মীও। মামলার দায় থেকে তার অব্যাহতি কামনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন ভালো মানুষকে হয়রানি কাম্য নয়। সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া আবশ্যক। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ‘আমরাও চাই না কেউ হয়রানিতে পড়ুক। আমরা ওসি সাহেবকে অনুরোধ জানিয়েছি ওই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত যেন হয়। আসামি বনে হাওয়া আমাদের উপজেলা পরিষদের সদস্যের সঙ্গে যেন কোনো বাড়াবাড়ি না হয়।’ মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২৫শে জুলাই উপজেলার বাঘাসুরা ইউপি’র মহাসড়কের পাশে মাজার গেট এলাকায় কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে সমবেত হয় হাজারো মানুষ। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে মাধবপুর থানার পুলিশ সদস্যরা আহতও হন। এলাকার লোকজনও আহত হন। এ ঘটনায় মাধবপুর থানার এসআই মুকুল হোসেন বাদী হয়ে ইউপি নোয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক বিএনপি নেতা সোহেলসহ ১২০০-১৩০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে পুলিশের ওপর হামলা ও বেআইনি সমাবেশের কারণে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ জানান, আমাদের উপজেলায় কি শুরু হলো! একটি মামলা শেষ হতে না হতেই আরেকটি মামলা। কিছু করলেই আমরা, কিছু না করলেও আমরা। আমরা আইনশৃঙ্খলা মিটিয়ে এসব অভিযোগ জানিয়েছি ওসি সাহেব এবং ইউএনও স্যারের কাছে। আমরা সরকার ও জাতির কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশী।
উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি মাসিক সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম ফয়সাল বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।