ঢাকা, ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

মৌলভীবাজারে ১১৫ কেজির বাঘাইড় বিক্রি করতে মাইকিং

স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে
৮ জুলাই ২০২৪, সোমবার
mzamin

মৌলভীবাজার শহরের কোর্ট এলাকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় পুরোশহর মাইকিং করে বিক্রি ও পরিবহন আইনিভাবে নিষিদ্ধ মহাবিপন্ন প্রজাতির একটি বড় আকারের বাঘাইড় মাছ বিক্রি করেছেন কয়েকজন মাছ বিক্রেতা। প্রশাসন ও আদালত পাড়া হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজার শহরের  দিন দুপুরে প্রকাশ্যে সবার সামনে মাছ বিক্রি করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ছিলো নির্বিকার। এনিয়ে শহরের সচেতন মহলে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন যে স্থানে মাছটি কেটে কেজি হিসেবে বিক্রি হয়েছে এরই পাশে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও অল্প কিছু দূরে বিভাগীয় বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় রয়েছে। তারাও আমাদের মতো মাছ বিক্রির মাইকিং অবশ্যই শোনেছেন। অনেকেই কাটা মাছের বিক্রির জন্য ভাগা করে রাখা মাছের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাঘাইড় মাছ জেলা শহরে প্রকাশ্যে মাইকিং করে বিক্রি হলেও সংশ্লিষ্টরা কর্তৃপক্ষের নীরবতা রহস্যময়। এরকম নানা মন্তব্যে লিখে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ৬ জন মাছ ব্যবসায়ী রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদী থেকে মাছটি ক্রয় করেন এক মাছ শিকারির কাছ থেকে। ওই শিকারির হাতে মাছটি রোববার সকালে ধরা পড়ে। বাঘাইড় মাছটির ওজন প্রায় ১১৫ কেজি বলে জানান একজন বিক্রেতা। গতকাল সকাল ১২টার দিকে বাঘাইড় মাছটি কেটে কেজি হিসেবে বিক্রি করা হবে বলে শহরে মাইকিং করা হয়। এরপর দুপুর দেড় টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের জেলা দায়রা জজ আদালত এলাকায় বাঘাইড় মাছটি এনে ওখানে কেটে বিক্রি করা হয়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত ওই স্থানে মাছটি বিক্রি করা হলেও ঠনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। 

নাম প্রকাশ না করে একজন মাছ বিক্রেতা জানান, তারা ৬ জন মিলে শিকারির কাছ থেকে বাঘাইড় মাছটি কিনে এনেছেন। শিকারি জীবিত মাছটির দাম হাঁকেন আড়াই লক্ষ টাকা। পরে তারা ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দিয়ে মাছটি ক্রয় করেন। বিশাল আকারের এ মাছটিকে কেটে কেজি দরে বিক্রি করেন তারা। প্রতি কেজি বাঘাইড় মাছ তারা বিক্রি করেন ১৩শ থেকে ১৫শ টাকা দরে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের ওই স্থান ও পশ্চিমবাজারসহ কুশিয়ারা নদী ছাড়াও জেলার অন্যান্য নদী তীরের বাজারগুলোতে প্রায়ই শিকার, পরিবহন ও বিক্রি নিষিদ্ধ মহাবিপন্ন বাঘাইড় মাছ মাইকিং করে বিক্রি করা হয়। কিন্তু শহরের পাশেই বিভাগীয় বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় কিন্তু তারা রহস্যজনক কারণে থাকেন নির্বিকার। 
জানা যায়, মহাবিপন্ন প্রজাতির এই মাছ ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনত নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে আইনের তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের নাকের ডগায় হরদম চলছে বেচাকেনা। এবিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য আ.স.ম ছালেহ সুহেল  বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় জেলা শহরে মাইকিং করে আইনীভাবে নিষিদ্ধ মহাবিপন্ন প্রজাতির এই বাঘাইড় মাছ বিক্রি করা হলো অথচ এরা গ্রেপ্তার হলোনা আইনি সাজাও পেলো না। এবিষয়ে জানতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো: জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিয়ে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কথা বলা যায়নি। তবে ওই কার্যালয়ের বন্যপ্রাণি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহদী সারোয়ার জানান, এখানে যে বাঘাইড় মাছ বিক্রি হচ্ছে তা তাদের জানা নেই।

পাঠকের মতামত

সামান্য একটা বাঘাই বিক্রির জন্য মাইকিংয়ের তো দরকার ছিল না। আমাদের ১৫ লাখ টাকার ছাগলের জন্য তো ঐ বাঘাইটা সাধারণ একটা ব্যাপার ছিল। ছাগলের মালিক কে অহেতুক অকারণ অপবাদ দিয়ে দূরে সরিয়ে রাখাটা ঠিক হয়নি যার কারণে এখন মাইকিং করে তাকে খোঁজা হচ্ছে। সে ছাড়াও বহু ছাগল বাবা আছে যাদের নাম পত্র পত্রিকার পাতায় পাওয়া যায়। ওখান থেকে কাউকে বললেই তো বাঘাই টা কিনে শ্বশুর শ্বাশুড়ির নামে ওরা ক্রয় করে ভূরিভোজ করতে পারে যা কিনা শ্বশুর আব্বা দিয়েছ বলে চালিয়ে দিতে পারে। এটা তো দোষের কিছু নেই।

রুহুল আমিন
৯ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবার, ৪:৪২ অপরাহ্ন

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status