ভারত
ভারতে কার্যকর তিন ফৌজদারি আইন, নয়া আইনে দায়ের প্রথম এফআইআর
সেবন্তী ভট্টাচার্য্য, কলকাতা থেকে
(১১ মাস আগে) ১ জুলাই ২০২৪, সোমবার, ১২:৩৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০০ পূর্বাহ্ন

১ জুলাই সোমবার থেকে দেশজুড়ে কার্যকর নয়া তিন আইন– ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম।সেটি কার্যকর হতেই প্রথম মামলাও দায়ের হয়ে গেল। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, কমলা মার্কেট থানায় এই নতুন আইনে এক হকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাস্তা আটকে ব্যবসা করার অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযুক্ত হকারের নাম পঙ্কজ কুমার। তিনি বিহারের বাসিন্দা। নয়াদিল্লি রেল স্টেশনের ফুট ব্রিজে তিনি ব্যবসা করেন। যদিও তার স্থায়ী দোকান নয়, ঠেলা গাড়ি। তিনি ফুটপাতের উপরে তামাক এবং পানি বিক্রি করেন। হকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্থানীয় পুলিশ টহলদারির সময়ে তাকে সেখান থেকে ঠেলা গাড়ি নিয়ে সরে যেতে বললে তিনি নির্দেশ মানেননি। ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ আইনের ২৮৫ ধারা অনুযায়ী এই হকারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। নতুন এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি বা তার কোনও সম্পত্তি যদি অন্যের যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি করে অথবা আঘাতের কারণ হয়, তা হলে ওই ব্যক্তির সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। দেশে অপরাধ দমনে ঔপনিবেশিক আইন বদলে নতুন আইন কার্যকরের এই যাত্রা বহু আগেই শুরু করেছিল মোদি সরকার। গত বাদল অধিবেশনে ভারতীয় দণ্ডবিধির বদলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর আইনের পরিবর্তে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন-এর জায়গায় ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম– এই তিন বিকল্প আইনে প্রস্তাব পেশ হয় সংসদে। পরবর্তী শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে নয়া তিন আইন পাস হয়ে যায়। এই নয়া বিধি অনুযায়ী, বিচার শেষ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে ফৌজদারি মামলার রায় দিতে হবে। প্রথম শুনানির ৬০ দিনের মধ্যে অভিযোগের চার্জ গঠন করতে হবে। ধর্ষণের শিকার নারীর জবানবন্দি নিতে হবে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাকেই। নির্যাতিতার অভিভাবক বা আত্মীয়ের উপস্থিতিতে সেই বয়ান রেকর্ড করতে হবে। হেনস্থার শিকার নারীরা ৯০ দিনের মধ্যে মামলার নিয়মিত আপডেট পাওয়ার অধিকারী। নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হলে সব হাসপাতালে তাদের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমেই অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে। এর জন্য কোনও থানায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই। অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী উভয়েই ১৪ দিনের মধ্যে এজাহারের কপি, পুলিশ রিপোর্ট, চার্জশিট, জবানবন্দি, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও অন্যান্য নথি পাওয়ার অধিকারী। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা বাধ্যতমালূক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের জন্য।