ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৪, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪ জিলহজ্জ ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়

দেশের কথা ভেবে বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত

মানবজমিন ডিজিটাল

(২ দিন আগে) ২৯ জুন ২০২৪, শনিবার, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১:০৬ পূর্বাহ্ন

mzamin

জো বাইডেন বারবার এই নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অংশগ্রহণকে আমেরিকান গণতন্ত্রের ভবিষ্যত বলে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে ডনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে সেই গণতন্ত্রের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ বিপদ’ হিসাবে প্রমাণ করেছেন- এমন একজন ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন যিনি স্বার্থপর এবং জনগণের আস্থার অযোগ্য। তিনি পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনের অখণ্ডতা নষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন। তার সমর্থকরা প্রকাশ্যে ২০২৫ সালের এজেন্ডা বর্ণনা করেছেন যেখানে রয়েছে হুমকির চরমতম নিদর্শন । যদি ট্রাম্প ফিরে আসেন, তবে তিনি আমেরিকান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার অধিকারী  হয়ে এক অন্য ধরণের প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 

বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্পের এই হুমকি তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছেন এবং তাকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে তিনি সর্বোত্তম প্রার্থী। বাইডেনের  যুক্তি মূলত এই সত্যের উপর নির্ভর দাঁড়িয়ে যে, তিনি ২০২০ সালে ইতিমধ্যেই ট্রাম্পকে পরাজিত করেছেন। 

বৃহস্পতিবারের বিতর্কে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমেরিকান জনসাধারণকে বোঝানোর প্রয়োজন ছিল যে, তিনি কেন আরো একটি মেয়াদের জন্য অফিসটি ধরে রাখতে চাইছেন । ভোটাররা, খালি চোখে যা দেখলেন তা হলো বর্তমান বাইডেনের সাথে চার বছর আগের বাইডেনের অনেক তফাৎ। প্রেসিডেন্ট  বৃহস্পতিবার রাতে একজন মহান জনসেবকের প্রতিনিধি হয়ে হাজির হন। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে কী অর্জন করবেন তা ব্যাখ্যা করার জন্য সচেষ্ট ছিলেন। ট্রাম্পের উস্কানির জবাব দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন বাইডেন।

বিজ্ঞাপন
ট্রাম্পের মিথ্যা, তার ব্যর্থতার কথা তুলে ধরতে গিয়ে বার বার হোঁচট খেতে হয়েছে বাইডেনকে।

একাধিকবার নিজের বাক্য শেষ করতে গিয়ে বেগ পেতে হয়েছে তাকে। বাইডেন একজন প্রশংসনীয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার নেতৃত্বে জাতি সমৃদ্ধ হয়েছে এবং দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে শুরু করেছে, ট্রাম্পের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতগুলি নিরাময় হতে শুরু করেছে। তবে এই মুহূর্তে বুদ্ধিমানের কাজ হবে বাইডেন যদি পুনরায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে নিজেকে দূরে রাখেন। প্রেসিডেন্টকে নিয়ে রীতিমতো জুয়া খেলা চলছে । সেখানে ডেমোক্র্যাটিক নেতারা ট্রাম্পের বিকল্প হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদে স্পষ্টবাদী এবং উদ্যমী বিকল্প উপস্থাপন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। কিন্তু আমেরিকানরা বাইডেনের বয়স এবং দুর্বলতাকে উপেক্ষা করবে বা ছাড় দেবে এমন আশা করা খুব বড় বাজি ধরার সমান হবে।  কারণ সবটাই তারা খালি চোখে দেখতে পাচ্ছেন। যদি প্রতিযোগিতাটি ট্রাম্প এবং বাইডেনের মধ্যে যে কোনো একটি পছন্দে পরিণত হয় তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট এক্ষেত্রে দ্ব্যর্থহীন বাছাই হবেন। তা ট্রাম্পের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনবে । কিন্তু সেই  বিপদের পরিপ্রেক্ষিতে, দেশের জন্য বাজি এবং বাইডেনের অসম ক্ষমতার কারণে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান মনোনীত প্রার্থীর একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ প্রয়োজন। প্রচারণার এই পর্বে একজন নতুন ডেমোক্র্যাটিক মনোনীত প্রার্থীর জন্য আহ্বান জানানো হালকাভাবে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নয়, তবে এটি এই দেশের মূল্যবোধ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি  ট্রাম্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য  বাইডেনের অপ্রতুলতাকে  প্রতিফলিত করে। তার প্রার্থীতার সমাপ্তি বাইডেনের সমস্ত ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে হবে। তিনি অতীতেও বিপর্যয় থেকে নিজেকে উদ্ধার করেছেন, স্পষ্টভাবে বিশ্বাস করেন যে তিনি আবারও তা করতে পারেন। প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা ইতিমধ্যে বৃহস্পতিবারের বিতর্ককে তিন বছরের কৃতিত্বের তুলনায় একটি ডেটা পয়েন্ট হিসাবে ব্যাখ্যা করছেন। বাইডেন যখন তার নীতি প্রস্তাবগুলি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তখন তিনি একাধিকবার হোঁচট খেয়েছেন। পাবলিক উপস্থিতি সাবধানে নিয়ন্ত্রণ করছেন। এটা মনে রাখা উচিত যে বাইডেন  ট্রাম্পকে এই মৌখিক দ্বন্দ্বে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার মানসিক তীক্ষ্ণতা সম্পর্কে দীর্ঘস্থায়ী জনসাধারণের উদ্বেগগুলিকে সমাধান করতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তার এটি করা দরকার। বাইডেনকে এখন যে সত্যের মুখোমুখি হতে হবে তা হল তিনি নিজের পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। বিভিন্ন জরিপে এবং সাক্ষাত্কারে, ভোটাররা বলেছেন যে তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নতুন কণ্ঠস্বর খুঁজছেন। বাইডেন এবং তার সমর্থকদের কাছে একটাই সান্ত্বনা হলো যে, এখনও একটি ভিন্ন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীর কাছে  সমাবেশ করার সময় আছে। এটি একটি ট্র্যাজেডি যে রিপাবলিকানরা নিজেরাই বৃহস্পতিবারের বিতর্কের পরে এখনো গভীর আত্মা-অনুসন্ধানে নিযুক্ত হতে পারেনি। ট্রাম্পের নিজের পারফরম্যান্সকে অযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা উচিত। তিনি তার নিজের কাজ, প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার রেকর্ড এবং তার প্রতিপক্ষ সম্পর্কে নির্লজ্জভাবে  বারবার মিথ্যা বলেছেন। তিনি এমন পরিকল্পনা বর্ণনা করেছেন যা আমেরিকান অর্থনীতির ক্ষতি করবে, নাগরিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করবে এবং অন্যান্য দেশের সাথে আমেরিকার সম্পর্ককে বিপর্যস্ত করবে। রিপাবলিকান পার্টি অবশ্য ট্রাম্পের উচ্চাকাঙ্ক্ষার দ্বারা সমন্বিত হয়েছে। জাতির স্বার্থকে একক ব্যক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষার ঊর্ধ্বে রাখার ভার ডেমোক্রেটিক পার্টির উপর বর্তায়। ডেমোক্র্যাটরা যারা বাইডেনের বিকল্প খুঁজছে তাদের এখন অবশ্যই দলের নেতার কাছে  সত্য কথা বলার সাহস জোগাতে  হবে। দলের বিশ্বস্ত সহযোগীদের এইসময়ে প্রেসিডেন্টের পাশে দাঁড়ানো উচিত, যাতে প্রতিদ্বন্দিতা থেকে সরে দাঁড়ালেও এই সমর্থন ক্ষতে প্রলেপের মতো কাজ করতে পারে। বাইডেন বৃহস্পতিবার রাতে একটি জরুরি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বিপদের  ঝুঁকি আগের থেকেও বেশি  হবে। এই পরিস্থিতিতে ডেমোক্র্যাটদের উচিত মেনে নেয়া যে, বাইডেন আর প্রেসিডেন্ট পদে দৌড় চালিয়ে যেতে পারবেন না এবং ট্রাম্পকে পরাজিত করার জন্য তার জায়গায়  আরও সক্ষম কাউকে নির্বাচন করার জন্য অবিলম্বে একটি প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। এটি জাতির আত্মাকে রক্ষা করার সর্বোত্তম সুযোগ।

 

পাঠকের মতামত

ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় আসলে, ট্রাম্প হবে আমেরিকার পুতিন।

মোহাম্মদ আরিফ
২৯ জুন ২০২৪, শনিবার, ১০:০১ অপরাহ্ন

@ Mohsin বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার চেনার উপায় কি? দেশকে সবার উপরে স্থান দিলে, বাংলাদেশ এর জাতীয় স্বার্থের পক্ষে কথা বললে, দুর্নীতি ও দলীয় করণের বিরুদ্ধে কথা বললে, জনগনের ভোটের স্বাধীনতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহন ক্ষমতার স্বার্বভৌমত্বের পক্ষে কথা বললে যদি কারো গাঁ জলে বা মনে আগুন ধরে তারা-ই বাংলাদেশ বিরোধী রাজাকার।

Ehsanul Habib
২৯ জুন ২০২৪, শনিবার, ৯:৩৮ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের কিছু মানুষ যারা বিএনপি-জামায়াত-শিবির তথা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তারা সবসময় একটা ভ্রান্ত ধারণার মধ্যে থাকে। তাদের নীচু মানসিকতা থেকে তারা কখনো বের হতে পারবে না। আমেরিকার ৬৭% মানুষ ট্রাম্প কে চাচ্ছে। আর আমাদের বাংলাদেশের এই ভ্রান্ত মানুষ গুলো এখনো বাইডেনের পক্ষে কথা বলছে।

Mohsin
২৯ জুন ২০২৪, শনিবার, ২:২৮ অপরাহ্ন

ট্রাম্প কিছুতেই আব্রাহাম লিঙ্কনের দেশের প্রেসিডেন্ট হবার যোগ্য নন । আমেরিকাকে ধারন করার মত ব্যাক্তিত্ব তার মধ্যে নেই । স্বৈর মানসিকতার মানুষ তিনি , গণ তন্ত্রে বিশ্বাস করেন না ।

zakiul Islam
২৯ জুন ২০২৪, শনিবার, ১২:৩০ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status