খেলা
জন্মভূমিতে পরিবারের সামনে হ্যাটট্রিকে জর্ডানের স্বপ্নময় দিন
স্পোর্টস ডেস্ক
২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার
এই বারবাডোজেই জন্ম ক্রিস জর্ডানের। এই মাটি, এই আলো-হাওয়াতেই তার বেড়ে ওঠা। জীবনের প্রথম ক্রিকেট ম্যাচটি দেখেছেন তিনি এই কেনসিংটন ওভালের গ্যালারিতে বসেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে গলা ফাটিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ে। জীবনের নাটকীয় পালাবদলে সেই মাঠেই তিনি এক ওভারে হ্যাটট্রিকসহ চার উইকেট নিলেন ইংল্যান্ডের জার্সিতে। সেই সাফল্যে গ্যালারিতে উল্লাসে মেতে উঠলো তার পরিবার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক, সেটিও বিশ্বকাপের মঞ্চে, এমনিতেই দারুণ অর্জন। জর্ডানের জন্য উপলক্ষটি আরও রঙিন ও স্মরণীয় হয়ে উঠেছে জন্মভূমিতে পরিবারের সদস্যদের সাক্ষী রেখে এমন কিছু করতে পারায়। ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ পেসার আপ্লুত কণ্ঠে বলেন, তার ক্যারিয়ারের সেরা দিনগুলোর একটি এটি। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচে রোববার যখন ১৯তম ওভারে আক্রমণে আসেন জর্ডান, দুই ওভার বোলিং করে তখন পর্যন্ত তিনি উইকেটশূন্য। ওভারের প্রথম বলে তিনি ফিরিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সময়ের ভরসা কোরি অ্যান্ডারসনকে। পরের ডেলিভারিতে রান হয়নি। এরপর টানা তিন বলে বোল্ড, এলবিডব্লিউ, বোল্ড কোনো ফিল্ডারের সহায়তা ছাড়াই হ্যাটট্রিক! একটু আগেও ৫ উইকেটে ১১৫ রানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র শূন্য রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে তখন ধ্বংসস্তূপ। পরে অধিনায়ক জস বাটলারের তাণ্ডবে (৭ ছক্কায় ৩৮ বলে ৮৩*) ৯.৪ ওভারে সেই রান তাড়া করে ইংলিশরা রান রেট এমন উচ্চতায় নিয়ে গেল যে, সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেললো। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থবার চার উইকেট, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাত্র দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এক ওভারে চার উইকেটের কীর্তি, সব মিলিয়ে জর্ডান যখন উচ্ছ্বাসে উড়ছেন, গ্যালারিতে তখন তার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরাও নেচে উঠেছেন আনন্দে। সব কিছু মিলিয়ে জর্ডানের কণ্ঠে ফুটে উঠলো তৃপ্তির ছোঁয়া। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, হ্যাঁ, দারুণ একটি দিন। আমার পরিবার এমনিতে বিশ্বময় ভ্রমণ করে আমার খেলা দেখে না খুব একটা। কাজেই তাদের সামনে এমন কিছু করতে পারা ক্যারিয়ারের সেরা দিনগুলোর মধ্যেই থাকবে। তাছাড়া বিশ্বকাপের ম্যাচে এমন কিছু করা, সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলা, সব মিলিয়ে অবশ্যই সেরা দিনগুলোর মধ্যে থাকবে অনেক উঁচুতেই।’ একসময় ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে তার নাম ছিল অপরিহার্য। তবে এখন আর নিয়মিত সুযোগ পান না ৩৫ বছর বয়সী এই পেসার। এই বিশ্বকাপেই যেমন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ ম্যাচে খরুচে বোলিংয়ের পর ওমানের বিপক্ষে একাদশে রাখা হয়নি তাকে। এরপর নামিবিয়ার বিপক্ষে ফেরানো হয়। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আবার একাদশের বাইরে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ফিরে তিনি নিশ্চিত করলেন, সহজে একাদশের বাইরে রাখা যাবে না! বারবার একাদশে আসা-যাওয়া করতে থাকলে অবশ্য মানিয়ে নেয়ার কাজটা কঠিন হওয়ার কথা। তবে ৯৪ ম্যাচের অভিজ্ঞ পেসার বলেন, খুব বেশি চ্যালেঞ্জ এখানে নেই, কারণ যথেষ্ট ক্রিকেট আমি খেলেছি। দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে যোগাযোগটা খুব ভালো ছিল। আমার নিয়ন্ত্রণে যা কিছু আছে, সেসবই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি আমি। একাদশে না থাকলেও চেষ্টা করি সবার পাশে থাকতে, ছেলেদের পরিকল্পনায় সহায়তা করতে এবং নিশ্চিত করতে চাই, মাঠে নেমে সবাই যেন উজ্জীবিত থাকে।’