খেলা
টানা দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক কামিন্সের
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস
স্পোর্টস ডেস্ক
২৪ জুন ২০২৪, সোমবার
তিন সংস্করণ মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয়! সেটিও বিশ্বকাপের মঞ্চে। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো আফগানিস্তান। সঙ্গে ধরে রাখলো সেমিফাইনালের সম্ভাবনা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারায় রশিদ খানের দল। সেন্ট ভিনসেন্টে ১৪৮ রানের পুঁজি নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ১২৭ রানে গুটিয়ে দেয় আফগানিস্তান। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে খুব কাছে গিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারেনি তারা। কিংসটাউন মাঠে নতুন বলে অসাধারণ এক স্পেলে দলের জয়ের ভিত গড়ে দেন নাভিন উল হক। পরের কাজটুকু সারেন গুলবাদিন নাইব। মন্থর ও কিছুটা অসম বাউন্সের উইকেটে নিখুঁত লাইন-লেংথ, গতি বৈচিত্র ও বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ানদের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়েন তিনি। অষ্টম বোলার হিসেবে উইকেটে এসে জেন্টল মিডিয়াম পেস দিয়ে ৪ ওভারে ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই ম্যাচের সেরা। ব্যাট হাতে আরো একবার নিজিদের জাহির করলেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে দুজনের শতরানের জুটিই আফগানদের এনে দেয় জয়ের সাহস। ভারতে গত বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও অস্ট্রেলিয়াকে বাগে পেয়েছিল আফগানিস্তান। ২৯১ রানের পুঁজি নিয়ে মাত্র ৯১ রানে তারা নিয়েছিল ৭ উইকেট। কিন্তু গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস্য ডাবল সেঞ্চুরিতে অবিস্মরণীয় জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। গতকালও আফগান শিবিরে সেই শঙ্কা ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। অন্যদের ব্যর্থতার মাঝে একাই লড়াই করে তিনি জিইয়ে রাখেন অস্ট্রেলিয়ার জয়ের আশা। কিন্তু দিনটি ছিল নাইবদের! ১৫তম ওভারে নাইবের বলেই নুর আহমদের দারুণ ক্যাচে ম্যাক্সওয়েল বিদায় নেওয়ার পর আফগানদের জয়ে আর কেউ বাধা হতে পারেনি। ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ বলে ৫৯ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। আফগান বোলারদের তোপে আর কোনো ব্যাটসম্যান ১৫ রানও করতে পারেননি। ১০ বলের বেশি খেলতে পারেন শুধু মার্কাস স্টয়নিস।
ম্যাচে টস থেকেই যেন একটু একটু করে পেছাতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। সেন্ট ভিনসেন্টে আগের তিন ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা দল জেতার পরও টস জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান মিচেল মার্শ। স্পিনে শক্তি বাড়াতে মিচেল স্টার্ককে বাইরে রেখে ফেরানো হয় অ্যাশটন অ্যাগারকে। ষোড়শ ওভারে গুরবাজকে ফিরিয়ে ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন মার্কাস স্টয়নিস। ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫১ বলে ৬০ রান করেন গুরবাজ। চলতি বিশ্বকাপে এটি তাদের তৃতীয় শতরানের জুটি। টুর্নামেন্টের এক আসরে এটি রেকর্ড। এবার আর কোনো দলের ওপেনাররা একটিও একশ রানের জুটি গড়তে পারেননি। গুরবাজের বিদায়ের পর শেষের ২৭ বলে মাত্র ৩০ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। ৬ চারে ৪৯ বলে ৫১ রান করেন ইব্রাহিম। শেষ দিকে মোহাম্মদ নবীর ৪ বলে ১০ রানের ইনিংসে দেড়শর কাছাকাছি যায় আফগানরা। অষ্টাদশ ওভারের শেষ বলে রাশিদ খান এবং শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে কারিম জানাত ও গুলবাদিন নাইবকে ফিরিয়ে পরপর দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব দেখান প্যাট কামিন্স। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টানা হ্যাটট্রিকের এটিই প্রথম কীর্তি। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন কামিন্স। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে নানগেলিয়া খারোটের ক্যাচ ছাড়েন ডেভিড ওয়ার্নার। নইলে চার বলে চার উইকেট পেতে পারতেন কামিন্স।