ভারত
মোদি-হাসিনা বৈঠকে ফরাক্কা চুক্তি নিয়ে আলোচনা, তৃণমূলের আপত্তি
সেবন্তী ভট্টাচার্য্য , কলকাতা থেকে
(১০ মাস আগে) ২৩ জুন ২০২৪, রবিবার, ৪:৫৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
দুদিনের সফরে ভারতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার দীর্ঘ বৈঠক হয়। পানি বণ্টন, নিরাপত্তা ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে দুই সরকার প্রধানের মধ্যে ১০টি সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নে যৌথ কারিগরি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর এখানেই আপত্তি পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারের। রাজ্যের শাসকদলের একটি সূত্র বলছে, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে এই ধরনের চুক্তি এগোতে পারে না। আমরাও এই চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাদের দাবি, ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদের নবায়ন করা হয়েছে। যার জেরে পশ্চিমবঙ্গে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আরও জোরালো হচ্ছে বলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
গঙ্গার পানিবন্টন নিয়ে টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের। ১৯৯৬ সালে গঙ্গা ওয়াটার ট্রিটি বা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। আগামী ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ১৯৯৬ সালের চুক্তির শর্তাবলীতে উল্লেখ ছিল, এই চুক্তি পুনর্নবীকরণ করতে হলে দুই পক্ষের সহমতের ভিত্তিতেই করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর নিয়ম অনুযায়ী যেকোনও আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে যে রাজ্যের ভূখণ্ড বা নদীরপানি বন্টন নিয়ে চুক্তি হবে, সেই রাজ্যের মতামত অবশ্যই বিবেচ্য। এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে দিল্লি এবং ঢাকা সহমত থাকা সত্ত্বেও তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে বরাবর একাধিক প্রশ্ন তুলেছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার। অভিযোগ, ফারাক্কা ব্যারেজ তৈরি হওয়ার পর থেকেই গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় বন্যা এবং ভাঙ্গনের সংকট তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষের বাড়ি, কৃষিজমি গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গও এই চুক্তির অংশ। এমনকি আমাদের আগের চুক্তির টাকা দেয়নি কেন্দ্র । গঙ্গা 'ড্রেজিং' বন্ধ হয়ে গেছে। যা বন্যা ও গঙ্গা ভাঙনের অন্যতম কারণ।" রাজ্যের শাসক দলের তরফে এনিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রের কাছে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও এই বিষয়ে নরেন্দ্র মোদিকে একাধিকবার চিঠি লিখেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে ফরাক্কা চুক্তি নবায়ন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কেন্দ্র। বিষয়টি আগামী দিনে সংসদে জোরালোভাবে তুলে ধরতে চলেছে দলীয় এমপিরা।