দেশ বিদেশ
সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের ৫ বছর পর উদ্বোধন!
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
২৪ মে ২০২৪, শুক্রবারব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে ৫ বছর আগে। রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ আর কূটচালে আটকে ছিল ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। অনেক ক্ষতি হয়ে গেল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩ তলা ভবনটির। ভবনের সুখ ভোগ করার আগেই পরপারে পাড়ি দিয়েছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। সবকিছুকে পেছনে ফেলে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মো. মঈন উদ্দিন মঈন। এ সময় আরও ছিলেন ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া, সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুর রাশেদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাহফুজ আলী।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ইউএনও অফিস সূত্র জানায়, স্বাধীনতার ৪৭/৪৮ বছর পর সরাইলে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকার ১টি ৪ তলা ফাউন্ডেশনের ৩ তলা ভবন নির্মাণ করে। ভবনটির নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় ১২টি দোকান ও তৃতীয় তলায় একটি হলরুম নির্মিত হয়। সেখানেই অফিস কক্ষ করা হয়েছে কমান্ডার ও ডেপুটি কমান্ডারের। ২০১৮ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর ভবন নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।
ওই বছরের শেষের দিকে কাজটি শেষ হয়। তৎকালীন ইউএনও ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ বি এম মুসার কাছে ভবনটি হস্তান্তর করে ঠিকাদার। বারবার চেষ্টা করেও রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ ও কূটচালের কারণে ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে পারেননি ইউএনও। দেখতে দেখতে পাঁচ বছরে তিনজন ইউএনও বদলি হয়ে গেলেও ভবনটি উদ্বোধন করতে পারেননি কেউই। দীর্ঘ সময় অব্যবহৃত থাকায় ভবনের ফার্নিশার্স কম্পিউটারসহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল নষ্ট হয়েছে। ময়লা আর বালুর স্তূপ পড়েছে প্রতিটি কক্ষে। ভবনের প্রধান ফটক ও চারিদিকের খালি জায়গায় মানুষ মলত্যাগ করে ময়লার ভাগাড় বানিয়েছিল। ক্ষোভে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ ভবনটি উদ্বোধনের জন্য অগণিত বার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি আলোচনা করেছেন। কোনো প্রতিকার পাননি। ভবনটিতে ওঠে সভা সেমিনার করা, আড্ডা মারার স্বপ্ন দেখতে দেখতে মৃত্যুবরণ করেছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। তাদের স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।
এ বিষয়ে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এ বছরের ৩রা ফেব্রুয়ারি ‘সরাইলের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি উদ্বোধন হবে কবে?’ ২০২৩ সালের ১০ই জুন ‘সরাইল মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ফটকের সামনে বাজার, তিন দিকে ময়লার ভাগাড়’ ও ২০২২ সালের ৩রা জানুয়ারি ‘তিন বছরেও উদ্বোধন হয়নি সরাইল মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স’ শিরোনামে পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অবশেষে ৫ বছরেরও অধিক সময় পর ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।