ভারত
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, 'সত্যের জয় হবেই' প্রতিক্রিয়া সি ভি আনন্দ বোসের
সেবন্তী ভট্টাচার্য্য, কলকাতা
(১০ মাস আগে) ৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, ৩:৪২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে উঠেছে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। রাজভবনের এক চুক্তিভিত্তিক কর্মী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। কমপক্ষে দুবার তার শ্লীলতাহানি করা হয় বলেই দাবি নির্যাতিতার। ওই নারীর অভিযোগ, তাকে আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করেছেন রাজ্যপাল। তাকে 'বিউটিফুল' বলেছেন।
আরও অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি দেয়ার নামে তার শ্লীলতাহানি করেন রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে কর্মরত পুলিশদের কাছে ছুটে যান তিনি। কাঁদতে কাঁদতে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। এর পর তাকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় পাঠানো হয়।ডিসি সেন্ট্রালের সামনে গোটা ঘটনা জানান বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এক্স হ্যান্ডেলে রাজ্যপাল লেখেন, ‘আমি কৌশলে বানানো গল্পে ভয় পাব না। কেউ যদি আমাকে অপমান করে নির্বাচনী সুবিধা পেতে চায়, ঈশ্বর তাদের মঙ্গল করুন। কিন্তু বাংলায় দুর্নীতি এবং হিংসার বিরুদ্ধে আমার লড়াই থামাতে পারবে না। সত্যই জয়লাভ করবে। বানানো বিষয়ের সামনে আমি কখনোই মাথা নত করব না।’
বলাই বাহুল্য, শ্লীলতাহানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চাপানউতোর। কড়া সমালোচনায় সরব রাজ্যের শাসক শিবির। এই ঘটনায় কড়া বিবৃতি দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এবার সেই বিবৃতির জেরে নিষিদ্ধ করা হলো মন্ত্রীর রাজভবনে প্রবেশ। এক বিবৃতিতে এই বিষয়টি জানিয়েও দেয়া হয়েছে।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজ্যেপালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগপত্র জমা দিতে গিয়েছেন এক নারী। নারী নির্যাতনের অভিযোগ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। এ কী ধরনের ঘটনা ঘটছে! যে রাজ্যপাল বলেন তিনি পিস রুম খুলবেন, সকলের অভিযোগ শুনবেন, সেই অভিযোগের নিস্পত্তিও করবেন, সেই পিস রুম কি আসলে নারী সম্মানের পিস হেভেন হয়ে গিয়েছে? যেখানে প্রধানমন্ত্রী বারেবারে নারী শক্তির কথা বলছেন, সেখানে রাজ্যপাল নারীর অপমান করছেন, অসম্মান করছেন, তাও বাংলার মাটিতে!' রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের ক্ষেত্রে কীভাবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়? রক্ষাকবচ কি রয়েছে তার? সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘রাজ্যপালের বিরুদ্ধে চট করে কোনও মামলা শুরু করা যায় না। সংবিধানের ৩৬১ ধারা অনুযায়ী রাজ্যপাল বা প্রেসিডেন্ট যতদিন তাদের পদে থাকেন ততদিন তাদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা শুরু করা যায় না বা গ্রেপ্তারও করা যায় না। যদি কোনও অভিযোগ ওঠে তবে লোকসভা বা রাজ্যসভা সংসদের যে কোনও একটি কক্ষ একটি কমিটি গঠন করে বিষয়টির তদন্ত করতে পারে। তদন্তে যদি দেখা যায় রাজ্যপাল দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তখন তাকে পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে সংবিধান অনুসরণ করে।’ সবমিলিয়ে ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপান উতোর।