খেলা
‘সবখানেই শেখার আছে তবে দেশ আগে’
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবারমোস্তাফিজুর রহমানকে কেন আইপিএল থেকে ফিরিয়ে আনা হলো- এ নিয়ে সমালোচনা যেন শেষ হচ্ছেই না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনূস জানিয়েছেন, মোস্তাফিজের আইপিএল-এ শেখার কিছু নেই। এরপর থেকেই সেই সমালোচনার আগুনে যেন ঘি পড়েছে। এ নিয়ে গতকাল বিসিবি’র আরেক পরিচালক খালেদ মাহমদ সুজন জানিয়েছেন- তিনি এমন বক্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন। তবে দেশ আগে যেহেতু সামনে বিশ্বকাপ আর তাই জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। সুজন বলেন, ‘কঠিন প্রশ্ন। উত্তর দেওয়া কঠিন। দেশ তো সবার আগে। সবসময়ই বলি এটা। দেশের প্রতিনিধিত্ব করার চেয়ে আনন্দের কিছু নেই। তবে পরিস্থিতি কী চায়, উনারা (জালাল ইউনূস, আকরাম খান) কীভাবে চিন্তা করেছেন তাও আমাদের বুঝতে হবে। আমি এখন জাতীয় দলের সেট-আপে নেই বলতে গেলে। অপারেশন্সের ভাইস-চেয়ারম্যান থাকলেও, আমি সেভাবে মিটিংগুলোয় যাচ্ছি না আবাহনীর খেলার কারণে। আমি জানিই না আসলে। তো আমি এ ব্যাপারে কিছু বলবো না। নিশ্চিতভাবেই জালাল ভাই একটা চিন্তা থেকেই মন্তব্যটা করেছেন। আমি মনে করি, চেয়ারম্যান হিসেবে উনি ক্রিকেট অপারেশন্সের অভিভাবক। উনি যেটা বলেছেন, আমাকে সেটাই মানতে হবে যে, উনার কথাই ঠিক। এটাই আমার ধরে নিয়ে যেতে হবে।’
ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালালের ভাষ্য- এখন আর আইপিএল থেকে শেখার কিছু নেই মোস্তাফিজের। আকরামের বিশ্বাস, আইপিএল-এ থাকলেই ভালো হতো মোস্তাফিজের। আর গতকাল মিরপুরে এ নিয়ে কথা বলেন বোর্ডের আরেক পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি জানিয়েছেন- শেখার কোনো শেষ নেই। তবে এ নিয়ে জালালের পক্ষে সমর্থনও দিয়েছেন সুজন। তিনি বলেন, ‘শেখার সবখানেই আছে। প্রিমিয়ার লীগেও শেখার আছে। আজকের একটা সিনারিও শেখার হতে পারে। সেটা নিয়ে সংশয় নেই। হয়তো বা উনি এটা সেভাবে বোঝাননি। উনি বলেছেন, মোস্তাফিজ এতো বছর ধরে ওখানে খেলছে। আর সে তো এখন আর তানজিম সাকিবের মতো না। ও এখন মোস্তাফিজ। মোস্তাফিজ এখন অনেক বড় নাম বিশ্ব ক্রিকেটে। হয়তো বা জালাল ভাই ওই এঙ্গেল থেকেই বলেছেন যে, মোস্তাফিজের অভিজ্ঞতা যেটা আছে, ভারতের তরুণ পেসাররা ওর থেকে কাটার বা এ রকম জিনিস শিখতে পারে। উনি কথাটা এটাই বলেছেন। এটাকে অন্যকিছু মিন করা ঠিক হবে না। দিন শেষে আমি মনে করি, দেশ সবার আগে। এটা মাথায় রাখতে হবে। মোস্তাফিজ যদি আইপিএল খেলতে পারতো, আমিও খুশি হতাম। দেশের খেলা না থাকলে হয়তো সমস্যা হতো না। অনেকে হয়তো বলবে, নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা আইপিএল খেলছে। কিন্তু আমাদের তো দশটা মোস্তাফিজ নেই। এটাও চিন্তা করতে হবে।’
আইপিএল-এ টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম ক্রিকেটার সুযোগ পায় বাংলাদেশের। তবে মোস্তাফিজ ছাড়াও তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের খেলার সুযোগ এসেছিল আইপিএল-এ। বিসিবি তাদের ছাড়পত্র দেয়নি। সুযোগ পাওয়া ওই দু’-এককজন ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র দেয়া নিয়েও নানা ধরনের টাল-বাহানা করে বিসিবি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে খেলতে ক্রিকেটারদের কি আরেকটু বেশি ছাড় দেয়া দরকার কিনা এ নিয়ে সুজন বলেন, ‘আইপিএল যেই স্ট্যান্ডার্ডে গেছে, সেটা (ক্রিকেটারদের আরও বেশি ছাড় দেয়া)। তবে যেটা বললাম, অনেক সময় দেশ আগে চলে আসে। এটা মানতেই হবে। তবে আমি যেটা বললাম, আপনি যদি এখন ভারতের কথা বলেন। তাদের এখন অনেক ক্রিকেটার আছে। মূল দলের বদলে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে সিরিজ খেললেও তারা জিততে পারে। আমাদের তো ও রকম নেই বেঞ্চ।’
অন্যদিকে জাতীয় দলের স্পিন কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক স্পিনার মুস্তাক আহমেদ। তার মতো একজন অভিজ্ঞ স্পিনার বাংলাদেশের জন্য দারুণ উপকারী হবে বলে মনে করেন সুজন। তিনি বলেন, ‘দারুণ! আমি মনে করি, এত অভিজ্ঞ একজন স্পিন বোলিং কোচ... আর উপমহাদেশের হওয়ায় ভাষার সমস্যাটাও বেশি থাকবে না। উর্দু বা হিন্দি হয়তো কিছু বলবে, যেটা ইংরেজির চেয়ে সহজে বোধগম্য। তাই ছেলেদের কমিউনিকেশন করতে সহজ হবে। মুশি ভাই অবশ্যই পাকিস্তানের হয়ে অনেক দিন ক্রিকেট খেলেছেন। তার কোচিং ক্যারিয়ারও অনেক সমৃদ্ধ। ইংল্যান্ড বা অনেক বড় বড় দেশের জন্য কাজ করেছেন। তার অভিজ্ঞতাটা অবশ্যই আমাদের কাজে লাগবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বাকিটা উনার কমিটমেন্ট বা ডেডিকেশনটা গুরুত্বপূর্ণ।’
মুস্তাফিজ দেশে ফিরে এলে চেন্নাইয়ের ক্ষতি হবে, 'চেন্নাইয়ের হয়ে আর খেলতে পারবেন না মুস্তাফিজ। আর অল্প কিছু সময়ই আছে মুস্তাফিজের হাতে। বাংলাদেশ কেন এমন করে? খেলতে দাও না আমার ভাইকে। সে চলে গেলে চেন্নাইয়ের অল্প হলেও ক্ষতি হবে।'