দেশ বিদেশ
কেন পদত্যাগ করলেন মার্কিন কর্মকর্তা!
মানবজমিন ডেস্ক
২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবারগাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরাইলকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। বুধবার অ্যানেল শেলাইন নামের এই কর্মকর্তা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। একটি খোলাচিঠিতে পদত্যাগের কারণও তুলে ধরেছেন ৩৮ বছর বয়সী ওই নারী কর্মকর্তা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। উল্লেখ্য, শেলাইন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই বছরের চুক্তিতে নিয়োগ পান। তিনি ব্যুরো অব ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লেবারের পররাষ্ট্রবিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। চাকরির মেয়াদের মাঝামাঝি এসে পদত্যাগ করলেন তিনি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ৭ই অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর থেকে গাজা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বোমা ব্যবহার করে আসছে ইসরাইল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ যুদ্ধে ৩২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তার ১৩ হাজারই শিশু।
পশ্চিমতীরে সশস্ত্র বসতি স্থাপনকারী ও ইসরাইলি সেনারা মার্কিন নাগরিকসহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে আসছে। গণহত্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী, এসব কর্মকাণ্ড গণহত্যার অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। আর মার্কিন সরকারে কূটনৈতিক ও সামরিক সমর্থন নিয়েই এসব কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যে মানবাধিকারের প্রসারে গত বছর এই দপ্তরে আমি কাজ করেছি। দপ্তরের এই অভিপ্রায় এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজের প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে। কিন্তু এমন একটি সরকার, যারা সরাসরি এমন বিষয়কে সহায়তা করছে, যার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বলেছেন, গাজায় গণহত্যা ঘটে থাকতে পারে; তাদের প্রতিনিধি হয়ে এ ধরনের (মানবাধিকার নিয়ে) কাজ করে যাওয়াটা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ ধরনের নৃশংসতাকে সহায়তা করে- এমন প্রশাসনের অধীনে কাজ করতে অসমর্থ হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমার পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
শুরুতে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগের পরিকল্পনা আমার ছিল না। কারণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমার চাকরির মেয়াদ স্বল্পমেয়াদি। আমাকে দুই বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে আমার পদত্যাগে তেমন কিছু যায়-আসে বলে আমার মনে হয়নি। কিন্তু যখন আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করি, বারবার যে প্রতিক্রিয়া আমি শুনেছি, তা হলো, ‘অনুগ্রহ করে আমাদের হয়ে বলুন’। কেন্দ্রীয় সরকারে আমার মতো যারা কর্মী আছেন, কয়েক মাস ধরে তারা নীতি পরিবর্তনে চাপ তৈরির চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। উভয় ভাবেই, অভ্যন্তরীণভাবে আর যখন তা ব্যর্থ হয়েছে, তখন প্রকাশ্যেই।