ঢাকা, ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৬ মার্চ ২০২৪, বুধবার
mzamin

দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে পর পর দুই মাস টানা রপ্তানি আয় বেড়েছে। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। আগের মাসে তা ১১ শতাংশ বেড়েছিল। তবে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি হলেও ফেব্রুয়ারি মাসের রপ্তানি আয় কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি। ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি আয়  একক মাস হিসেবে আবারো পাঁচ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এই মাসে ৫১৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন মাসে একক মাসে রপ্তানি আয় পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক পেরিয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারি মাসের রপ্তানি আয় আগের দুই মাসের চেয়ে কিছুটা কম। জানুয়ারিতে রেকর্ড ৫৭২ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের সমপরিমাণ পণ্য বিদেশে বিক্রি করা হয়েছিল। ডিসেম্বরে এর পরিমাণ ছিল ৫৩০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ফেব্রুয়ারিতে মোট পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫১৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের। আগের অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল ৪৬৩ কোটি ডলারের। অর্থাৎ ৫৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ১২.০৪ শতাংশ বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। 

গত ফেব্রুয়ারির প্রবৃদ্ধিতে ভর করে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে রপ্তানিও আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়ে প্রায় পৌনে ৪ শতাংশ হয়েছে। এ সময়ে মোট রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৮৪৫ কোটি ২২ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ হাজার ৭০৭ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এ হিসেবে বেড়েছে ১৩৭ কোটি ডলার বা ৩.৭১ শতাংশ। ইপিবি’র তথ্য বলছে, উল্লেখযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি হলেও একক মাসের হিসাবে ফেব্রুয়ারিতে সরকার নির্ধারিত রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। গত মাসে ৫২৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আয়ের পরিমাণ কম ০.৯৮ শতাংশ। আট মাসের হিসাবেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি রপ্তানিতে। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোট ৬২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল বাংলাদেশ। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ১১১ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আয় এসেছে ৩ হাজার ৮৪৫ কোটি ডলার। 

এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে ৬.৪৮ শতাংশ। হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য পোশাক রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৩ হাজার ১৩৬ কোটি ১৮ লাখ ডলার ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা প্রায় ৫ শতাংশ বেশি।  রপ্তানি আয়ের এই চাঙ্গাভাব দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ওপর চাপ কমানো এবং ডলার বাজারের অস্থিতিশীলতা দূর করার সহায়ক হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে পোশাক খাতের রপ্তানিতে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। 

গত এক বছরে গ্যাস ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, বিশ্ব অর্থনীতির মন্থর অবস্থায় বিশ্ববাজারে পোশাকের চাহিদা কমার মতো নানামুখী চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছে বাংলাদেশের পোশাক খাত।   ইউরোপে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে: ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তৈরি পোশাক রপ্তানি ১৩.৯২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।  ইপিবি জানিয়েছে, আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৩২ শতাংশ বেড়েছে। এসময় স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ডে রপ্তানি যথাক্রমে ৬.০৫ শতাংশ, ৪.২৫ শতাংশ, ১১.৭৭ শতাংশ এবং ২০.৩০ শতাংশ বেড়েছে। তবে, ইতালিতে স্থানীয় পোশাক রপ্তানি কমেছে ১.৮১ শতাংশ। অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার জার্মানিতে রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৩.৫১ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে রপ্তানি কমেছে ১৩.৪৬ শতাংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে ৩.৯০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৭৯ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় রপ্তানি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩.৩১ বিলিয়ন ডলার এবং ৮৭১.২৭ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১২.৯৮ শতাংশ এবং ০.৬৮ শতাংশ বেড়েছে।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status