অনলাইন
তালেবানের ধর্মীয় সমাবেশে নারীদের প্রতিনিধিত্ব করবে পুরুষরা
মানবজমিন ডিজিটাল
(৩ বছর আগে) ৩০ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৩:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:১১ অপরাহ্ন
তালেবানের ধর্মীয় পণ্ডিতদের মহাসমাবেশে নারীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন পুরুষরাই। একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তালেবানের উপ-প্রধানমন্ত্রী মৌলভি আবদুল সালাম হানাফি। নারীদের অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও আফগানিস্তানের পরিস্থিতি যে বদলায়নি এই ঘটনা তারই প্রমাণ। খামা প্রেস রিপোর্ট- এর প্রতিবেদন অনুযায়ী উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়াই বৃহস্পতিবার কাবুলের লয়া জিরগা হলে ৩,০০০ জনেরও বেশি ধর্মীয় পণ্ডিত, বুদ্ধিজীবী, প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং জাতীয় ব্যবসায়ীরা সমাবেশে যোগ দেবেন। উপ-প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, 'নারীরা আমাদের মা, বোন, আমরা তাদের খুব সম্মান করি। যখন তাদের ছেলেরা সমাবেশে উপস্থিত থাকে তখন এটি বোঝায় যে তারাও একই ভাবে সমাবেশে জড়িত। ''নারীরা অ্যাসেম্বলির অংশ হতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী হানাফি উত্তর দেন যে পুরুষ প্রতিনিধিরা তাদের হয়ে কথা বলবেন। খামা প্রেসের মতে, তালেবানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন যে ওলামাদের অনুরোধে সমাবেশটি ডাকা হয়েছিল এবং তালেবানরা এটির আয়োজন করেছিল যাতে তারা ইসলামী শাসন, জাতীয় ঐক্য এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে উন্নতির মতো বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে পারে। তবে সুশীল সমাজ এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেছে এবং নারীদের অনুপস্থিতিতে সমাবেশকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছে। খামা প্রেস রিপোর্ট করেছে, সমাবেশের আলোচ্যসূচিতে মেয়েদের স্কুল পুনরায় খোলার বিষয়টি এবং নারীদের অধিকারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তালেবান মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা স্থগিত করেছে এবং হিজাব পরার নির্দেশ দিয়েছে। তারা আফগান নারীদের রাজনৈতিক ও জনজীবনে অংশগ্রহণে কোনো সুযোগ দেয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আফগান নারীরা এত বছর ধরে দেশটিতে নিরবচ্ছিন্ন স্বাধীনতা উপভোগ করেছিল কিন্তু আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার দশ মাসের মধ্যে তালেবান শাসকদের দ্বারা তাদের জীবনের বিভিন্ন দিক দিয়ে আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে তাদের জীবন এখন অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে। কয়েকটি ব্যাংকে নারী কর্মচারীরা ইতিমধ্যে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এমনকি নারী পুলিশ কর্মকর্তাদেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। শহুরে এলাকা থেকে দূরে, নারী ও মেয়েরা তাদের সাথে পরিবারের পুরুষ সদস্য ছাড়া রাস্তায় বেরোতে বা ভ্রমণ করতে পারবেন না। নারীদের মেক-আপ পরিধানের পাশাপাশি তাদের প্রজনন অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতে, তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার নারীর মানবাধিকারকে অসম্মান করে চলেছে। গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর থেকে আফগান নারীদের বিরুদ্ধে তালেবানের নৃশংসতা অবিরাম বেড়েছে।
সূত্র : দা প্রিন্ট