অনলাইন
সহযোগীদের খবর
জুলাই অভ্যুত্থান: পুরনো বন্দোবস্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ
অনলাইন ডেস্ক
(৬ ঘন্টা আগে) ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:৩৬ পূর্বাহ্ন

বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘জুলাই অভ্যুত্থান: পুরনো বন্দোবস্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ’। খবরে বলা হয়, ১ জুলাই দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সাধারণত এদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা থাকেন উৎসবমুখর। কিন্তু গত বছর দিনটিতে শিক্ষার্থীদের মনে ছিল চাপা ক্ষোভ। কেননা ২০২৪ সালের ৫ জুন সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে সর্বোচ্চ আদালত কোটা বহালের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ রায়কে কেন্দ্র করেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বদলে টিএসসি এলাকায় জমায়েত হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
সেখান থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর একটি মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে, নীলক্ষেত-সায়েন্স ল্যাব ঘুরে শাহবাগে সমাবেশে মিলিত হয়। ওই সমাবেশে ঘোষিত চার দফার মধ্যে কোটা প্রথার বাইরে সবচেয়ে জোরালো দাবি ছিল ‘দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে’।
এক বছর আগের এই দিনে তরুণ শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে যে স্লোগান উঠেছিল, সেটিই পরবর্তী ৩৬ দিনে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার পতন ঘটায়, যে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে প্রাণ হারিয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ। হাত, পা, চোখ হারানোসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ হাজার ছাত্র-জনতা। এ আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে গত বছরের ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে এ তরুণ সেদিন বলেছিলেন, ‘মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এক দফাটি হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এ সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ।’ জাতিকে আশার আলো দেখিয়ে নাহিদ ইসলামের ঘোষণা ছিল, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে চাই, যেখানে আর কখনো কোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে।’
তরুণদের নেতৃত্বে ‘মার্চ টু ঢাকা’ ও গণভবন ঘেরাও কর্মসূচির মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বছর ঘুরে আবারো ফিরে এল জুলাই। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে তরুণরা গুলির মুখে দাঁড়িয়েছিলেন, গত এক বছরে তার কতটা বাস্তবায়ন হলো সেটি নিয়ে খোদ আন্দোলনকারীদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। বৈষম্য ও অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে তরুণরা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই গত এক বছরে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। এমনকি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী তরুণরা নানা গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্তও হয়ে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও এখনো বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা পুরনো বন্দোবস্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে আঁকড়ে থাকা ঘুস, দুর্নীতি ও আমলাতন্ত্রেরও অবসান হয়নি। শেখ হাসিনার দিয়ে যাওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট শেষ দিন পর্যন্ত টেনে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট ঘোষণা করেছে, সেটাও আগের সরকারের মতো গতানুগতিক বলে সমালোচনা রয়েছে। বাজেট প্রণয়নসহ অর্থনীতির নীতি কৌশল প্রণয়নে এখনো প্রাধান্য পাচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপিয়ে দেয়া শর্ত। এ শর্ত পূরণ করতে গিয়ে দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বেকারত্ব, বৈষম্য ও দারিদ্র্য আরো জেঁকে বসছে। আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়ার জন্য পতিত হাসিনা সরকারই বাছবিচার ছাড়া এসব শর্ত মেনে নিয়েছিল।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের একজন আখতার হোসেন। বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব পদে থাকা এ তরুণ রাজনৈতিক নেতা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী এক বছরে অর্জন আছে, তবে প্রত্যাশার এখনো অনেক বাকি। আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। নতুন রাজনৈতিক কাঠামো, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলেছিলাম। কিন্তু বৈষম্যহীন বাংলাদেশ এখনো অর্জিত হয়নি। নতুন বন্দোবস্তের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার নানা সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছে। যেগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।’
আখতার হোসেন বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পূর্ব বাংলাদেশে বিরোধী মতের রাজনীতিকে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছিল। গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল। মানবাধিকার হরণ, গুম, খুনের মতো যে ঘটনাগুলো ঘটত, সেগুলো থেকে গত এক বছরে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বিঘ্নে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে। মানুষ যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি বাকস্বাধীনতা উপভোগ করছে। মোটা দাগে অর্থ পাচারের মতো ঘটনাগুলো এ সময়ের মধ্যে সংঘটিত হয়নি। তবে মানুষ সরকারি অফিস-আদালতে এলে সহজে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবেন এবং সম্মানিত বোধ করবেন, এমন বাংলাদেশ এখনো তৈরি হয়নি।’
বাংলাদেশের মতোই তরুণদের নেতৃত্বে গণ-আন্দোলনের মুখে তিউনিসিয়া ও শ্রীলংকার কর্তৃত্ববাদী শাসকদের পতন ঘটেছিল। ২০১১ সালে জেসমিন বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তিউনিসিয়া ত্যাগ করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাইন আল আবেদিন বেন আলি। ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছেড়ে ২০২২ সালে শ্রীলংকা থেকে পালিয়েছিলেন রাজাপাকসে ভাইদের মধ্যে ‘স্ট্রংম্যান’ হিসেবে পরিচিত গোতাবায়া রাজাপাকসে। আর গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন দেড় দশক ধরে বাংলাদেশ শাসন করা শেখ হাসিনা। তিনটি অভ্যুত্থানের মধ্যেই মিল হলো পতিত এ তিন সরকারই ছিল ফ্যাসিস্ট চরিত্রের। নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তরুণদের দ্রোহের মধ্যে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এলে এসব স্বৈরশাসক দেশ ছেড়ে পালান।
তিউনিসিয়ায় অভ্যুত্থানের সময় পেরিয়েছে এক যুগেরও বেশি। এখনো অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ের অস্থিরতা থেকে বের হতে পারেনি দেশটি। আবার শ্রীলংকায় ২০২২ সালে ঘটা অভ্যুত্থানের দুই বছরের মধ্যেই শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে স্থিতিশীল জায়গায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।
গোতাবায়া রাজাপাকসে সরকারের পতনের সময় শ্রীলংকায় মূল্যস্ফীতির হার ছিল প্রায় ৬৭ শতাংশ। ডলার সংকটে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপদেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও তখন ৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে। যদিও দুই বছরের মধ্যেই তীব্র প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে সফলতার সঙ্গে ঘুরে দাঁড়ানোর এক বড় নজির হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রীলংকা। মূল্যস্ফীতি নয়, বরং গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত টানা ১০ মাস ধরে মূল্য সংকোচনের দেখা পেয়েছে দেশটি। অর্থাৎ শ্রীলংকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম এখন কমছে। অর্থনীতির পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও শ্রীলংকা এখন বেশ স্থিতিশীল। গত মাসে দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে আনুরা কুমারা দিশানায়েকের বামপন্থী জোট ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। নির্বাচনের পর সব রাজনৈতিক দলই দেশ গড়ার কাজে যুক্ত হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া তরুণ প্রজন্মও নিজ নিজ কাজে ফিরে গেছে।
মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে শ্রীলংকা ঘুরে দাঁড়াতে পারলেও গণ-অভ্যুত্থানের পর এক যুগেও ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরোতে পারেনি তিউনিসিয়া। বিপুল গণবিক্ষোভের মুখে ২০১১ সালের ১৪ জানুয়ারি দেশটির স্বৈরশাসক জাইন আল আবেদিন বেন আলির পতন ঘটে। ২৩ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা এ স্বৈরশাসক দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এ আন্দোলন পরিচিতি পেয়েছিল জেসমিন রেভল্যুশন বা জেসমিন বিপ্লব নামে। আরব বসন্তের সূচনাকারী সফল এ অভ্যুত্থানের এক দশকের বেশি সময় পেরোলেও তিউনিসিয়া এখনো দিশা খুঁজে পায়নি। অর্থনীতির পাশাপাশি রাজনীতিতেও স্থিতিশীলতা ফেরেনি। অর্থনৈতিক সংকোচন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ খরা, বেকারত্ব, দুর্বল রিজার্ভসহ নানামুখী চাপের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে তিউনিসিয়া। বেন আলির পতনের পর এখন পর্যন্ত দেশটির শাসনক্ষমতায় পরিবর্তন এসেছে চারবার। কিন্তু কোনো সরকারই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। এ কারণে জেসমিন বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয়া তিউনিসিয়ান তরুণরা দলে দলে দেশ ছেড়েছেন। দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পড়ালেখার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও তেমন সফলতা আসেনি। বিপ্লবের এক দশকের মাথায় সেখানে প্রতিবাদ বিক্ষোভও বেড়ে যায়। একই সঙ্গে তরুণদের মাঝে বেড়ে যায় আত্মহত্যার প্রবণতাও।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে তিউনিসিয়ার প্রায় কাছাকাছি চিত্র লক্ষ করা যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও। গত ১১ মাসে শ্রীলংকার মতো সফলতার কোনো লক্ষণ দেশে দৃশ্যমান হয়নি। বরং তিউনিসিয়ার মতো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর গত বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। প্রায় ১১ মাস হতে চললেও এখনো গণ-অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণের মতো দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন আসেনি। শিক্ষার্থীরা এখনো পুরোপুরি পড়ালেখার টেবিলে ফিরে যায়নি। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নিয়োগ পাওয়া দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদচ্যুত হয়েছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে প্রশাসনের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছেন। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ এখনো দেখা যায়নি। দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যায়নি স্বাস্থ্য খাতেও।
ডলারের বাজারের স্থিতিশীলতা, রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণে ভর করে রিজার্ভ কিছুটা বাড়লেও দেশের অর্থনীতি এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়নি। গত মে মাসেও দেশের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ শতাংশের বেশি। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হারও এখন মাত্র ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, যা মুদ্রানীতিতে ঘোষিত লক্ষ্যের তুলনায় অন্তত আড়াই শতাংশ কম। অর্থনীতির মতো বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে রাজনীতিও। জাতীয় নির্বাচন ও আগামীর রাষ্ট্রক্ষমতার ধরন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বিভাজন ক্রমশ বাড়ছে। সচিবালয়ে বিক্ষোভ, আন্দোলনের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেও (এনবিআর) নজিরবিহীন বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি দেখা গেছে।
লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে খুব নগণ্য পরিমাণে ধারণ করে এগিয়েছে। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘সংস্কারের জন্য ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের নানাবিধ সংস্কার করা অভ্যুত্থানের একটি বড় দাবি ছিল। কিন্তু দেখা গেল সরকার গঠনের পরদিন থেকেই অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো ভেঙে একে অপরের বিরুদ্ধে বক্তৃতা-বিবৃতি দিতে শুরু করেছে। এটি এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার কোনো সম্ভাবনা অদূরভবিষ্যতেও দেখা যাচ্ছে না। বৈষম্য কমানোর যে স্পিরিট ছিল, সেটিও বাজেটসহ সরকারের অন্যান্য কর্মকাণ্ডে দেখা যায়নি। ন্যায্য সমাজ গড়াও ছিল এ অভ্যুত্থানের অন্যতম একটি দাবি, কিন্তু সেটি হয়নি। অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নারীরা দূরে সরে যাওয়ায় অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠাও হয়ে ওঠেনি। কৃষক ও শ্রমিকদের ভাগ্য পরিবর্তনের কোনো পদক্ষেপও নিতে দেখা যায়নি।’
পুরনো সরকারের স্টাইলেই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী বাংলাদেশ চলেছে বলে মনে করেন আলতাফ পারভেজ। তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের একটি বড় আকাঙ্ক্ষা ছিল সচিবালয়কেন্দ্রিক রাষ্ট্রযন্ত্রের সংস্কার। কিন্তু অভ্যুত্থানের প্রধান শক্তিই সচিবালয়মুখী হয়ে গেছে, গত এক বছর সে কেন্দ্রিকই থেকে গেছে। প্রশাসনে বদলি ছাড়া কোনো ধরনের সংস্কার হয়নি। কাঠামোগত পরিবর্তন, বিকেন্দ্রীকরণ ও জনগণের কাছে জবাবদিহি বাড়ানোর মতো কিছুই প্রশাসনে দেখা যায়নি। পুলিশ বাহিনী কিংবা আমলাতন্ত্র সংস্কারের বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা এখন আর হচ্ছে না। বিশেষ ক্ষমতা আইনের মতো আইনও এখনো থেকে গেছে। এ আইনের ব্যবহারও আমরা এখনো দেখছি। সার্বিক বিচারে অভ্যুত্থানের চেতনায় এ সরকার চলছে বলে আমরা বলতে পারছি না। আর ভবিষ্যতের ভালো কিছুও আমি দেখি না। অভ্যুত্থান-পরবর্তী গত এক বছরে ন্যূনতম চাওয়া হলো একটি ভালো নির্বাচন। এটি হলেই ন্যূনতম সন্তুষ্টি হয়।’
অভ্যুত্থান-পরববর্তী সরকারের কাছে সবচেয়ে মৌলিক দাবি ছিল জুলাই আন্দোলনে নিহতদের তালিকা তৈরি, যথাযথ ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা ও পুর্নবাসন। কিন্তু মৌলিক এ দাবিও এখনো পূরণ করতে পারেনি সরকার। আন্দোলনের সময় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়েও নানা মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। এ বছরের ১৫ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারীকৃত গেজেট অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা ৮৩৪। আর জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে ৮২০ জন নিহতের কথা বলা হয়েছে। যদিও বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে এ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি।
গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য সচিব তারেকুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, সরকারি ও বেসরকারি নানা উৎস থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে তারা ১ হাজার ৪২৩ জন শহীদের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করতে পেরেছেন। আহতের সংখ্যা সেখানে দেখানো হয় ২২ হাজারের বেশি। এ আন্দোলনে ৫৮৭ জনের অঙ্গহানি ঘটেছে, ৬৮৫ জন দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, এমনকি গুলিতে ৯২ জনের দুই চোখই নষ্ট হয়ে গেছে বলেও জানানো হয়।
অবশ্য অনেক না পাওয়া সত্ত্বেও অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার জন-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে চলার চেষ্টা করেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার গণ-অভ্যুত্থানেরই সরকার। জন-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই অন্তর্বর্তী সরকার চলার চেষ্টা করেছে। চলার পথে জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার ক্যু, চারশর অধিক দাবিদাওয়া. আন্দোলনসহ নানা কারণে সে প্রচেষ্টা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আধিপত্যকামী শক্তিও ভিতর থেকে সরকারের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। এত কিছুর পরও আমি মনে করি, সরকার দুই হাজার নিহত এবং ২০ হাজার আহত মানুষকে ধারণ করতে পারলে জন-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও সরকারকে কয়েকটি কাজ নিশ্চিত করতে হবে। এর একটি হলো জুলাই বার্ষিকীতে জুলাই সনদ দেয়া। এছাড়া যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা এবং নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা।’
বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের পর সাধারণ মানুষ এখনো সরকারের তরফে স্বস্তির বার্তা পায়নি বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. ফাহমিদা খাতুন। বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এ নির্বাহী পরিচালক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ ছিল মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেয়া। কিন্তু এ কাজে সরকার এখন পর্যন্ত সফল হতে পারেনি। ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী সত্যিকার অর্থেই কষ্টে আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সুদহার বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তার সুফল মিলছে না। তার মানে এখানে সমস্যাটি সরবরাহজনিত। সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক করার পাশাপাশি চাঁদাবাজি বন্ধ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কার্যকর উন্নয়ন ঘটাতে হবে।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বিরাজমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট অতীতের লিগ্যাসি। কয়েক বছর ধরেই দেশের অর্থনীতিতে নানামুখী সংকট চলছিল। এখন যেসব সংকট প্রকট আকারে দেখা যাচ্ছে, সেগুলো অতীতের লিগ্যাসি। ডলার সংকট, রিজার্ভের ক্ষয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ খরা, রাজস্ব ঘাটতি, সরকারের ঋণের বোঝা, ব্যাংক খাতের দুর্দশা, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের লুটপাট, অব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সংকটে অর্থনীতি হাবুডুবু খাচ্ছিল। পাশাপাশি রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতাও শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল। এসব কারণেই জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। শ্রীলংকায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিপর্যয় হলেও সেখানে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী ছিল। কিন্তু গত ১৫ বছরে আমাদের সব প্রতিষ্ঠানই ধ্বংস হয়ে গেছে। এ কারণে এখানে সরকারের যেকোনো উদ্যোগের ফল পেতে সময় লাগবে।’
কালের কণ্ঠ
বিবিএসের জরিপ নিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর ‘বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের শঙ্কায় দেশের অর্ধেক নাগরিক’। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজীপুরের শ্রীপুরে মহাসড়কে ২০ জুন শুক্রবার ডাকাতির ঘটনায় দুজন নিহত হয়। এর দুই দিন পরই একই উপজেলার আনসার টেপিরবাড়ি এলাকায় চিকিৎসক দম্পতির বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রথমে মহাসড়ক, তারপর বাড়ি—অপরাধীরা বুঝিয়ে দিয়েছে কোনো স্থানেই তাদের থামানো যায় না। তাই স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরো বেড়েছে।
গত বছর আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি টালমাটাল অবস্থায় পড়ে। শুরুর দিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে, বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল হলেও জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা কাটেনি। সামপ্রতিক এক সরকারি জরিপ বলছে, দেশের অর্ধেক নাগরিক এখনো হামলা ও লুটপাটের ভয়ে দিন কাটাচ্ছে, বিশেষ করে নারীরা এবং শহরের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) ২০২৫’ অনুযায়ী, দেশের ৪১.৭৪ শতাংশ মানুষ বাড়িঘরে হামলার, আর ৪৭.১৭ শতাংশ মূল্যবান সম্পদ লুটপাট বা চুরির শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো, নারীদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ (৪৯.৮৮ শতাংশ) মূল্যবান সম্পদ হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘রাজনৈতিক প্রচারে এআইয়ের ভিডিও, রটানো হয় কুৎসাও’। প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়ানো ৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা শাড়ি পরা মধ্যবয়সী এক নারী বাজার থেকে ফিরছেন। তখন মাইক্রোফোন হাতে অন্য একজন নারী সাংবাদিক তাঁকে থামিয়ে প্রশ্ন করেন, ‘দিদি, এবার ভোট কোথায় দেবেন?’ জবাবে ওই নারী একটি দলকে ভোট দেওয়ার কথা বলেন।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিকিনি পরা এক নারী দৌড়ে এসে একটি দলকে ভোট দেওয়ার কথা বলছেন। এটা অবশ্য ওই দলের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।
দুটি ভিডিওই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি। তথ্য যাচাই বা ফ্যাক্ট চেক উদ্যোগ ডিসমিস ল্যাবের একটি গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে এআই দিয়ে তৈরি এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে রাজনৈতিক প্রচার চলছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতার নামে কুৎসা রটানো, অপপ্রচার ও ভাবমূর্তির ক্ষতি করার চেষ্টাও চলছে।
ডিসমিস ল্যাব তাদের গবেষণায় গত ১৮ থেকে ২৮ জুন সময়ে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপ থেকে ৭০টি ভিডিও সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেছে। এআই দিয়ে তৈরি রাজনৈতিক এসব ভিডিও বিশ্লেষণে তারা দেখেছে, কোনো ক্ষেত্রেই উল্লেখ করা হয়নি যে এগুলো এআই দিয়ে তৈরি। ভিডিওগুলো অনেকটা নিখুঁত। ফলে মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
যুগান্তর
‘রক্তাক্ত জুলাই জাগরণ’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, খুন, গুম-জুলুমে বিক্ষুব্ধ ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত বাংলাদেশ। স্বৈরাচারের নাগপাশে ঝলসে গেছে শত শত প্রতিবাদের মুখ। হাজার হাজার মানুষ বন্দি কারাগারে। বাড়ছে গোপন বন্দিশালা আয়নাঘর। দুর্নীতি, লুটপাট যেন মহোৎসব। একে একে ধসে পড়ছে ব্যাংক। তবু চারদিকে বাড়ছে ফ্যাসিস্টবন্দনা। সাধুবেশে শয়তানরা দিচ্ছে হাঁক। মরে মরুক সব, জঙ্গি-সন্ত্রাস। ‘আপা’ আপনি থাকছেন। আপনিই সব।
দিনের ভোট হয়ে যাচ্ছে রাতে। আমি-ডামি ভোটেও বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। ভোট থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় জনতা। ভোট কেড়ে নেওয়ার এই নগ্ন খেলায় একটি প্রজন্মই ছিটকে পড়ে ভোটের মাঠ থেকে।
এভাবে দিন গড়িয়ে মাস যায়, বছর ঘুরে বছর আসে। শেষ হয় না শাসকের শোষণ। ক্ষোভ-বিক্ষোভ, বুকফাটা আর্তনাদ, কান্নার ষোলো বছর ছুঁইছুঁই। মুক্তিকামী মানুষের আহাজারি আকাশে-বাতাসে। ঠিক তখন যেন ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে আসে অপ্রতিরোধ্য আবাবিল। জুলাই পদধ্বনির প্রহরে ততক্ষণে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগ। এবার বিপ্লবীরা জীবন দেবে। তাই টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া জেগে উঠল অন্য এক বাংলাদেশ।
সমকাল
‘১৪১ আরটি-পিসিআর ল্যাব সচল করতে এবার নতুন প্রকল্প’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্দেশনার প্রায় দুই মাস পর সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে করোনা শনাক্তের ২১টি আরটি-পিসিআর ল্যাব সচল হয়েছে। এখনও ১৪১টি আরটি-পিসিআর ল্যাব অচল। পরিকল্পনায় গলদ, অব্যবস্থাপনা, জনবল ও কিট সংকটে এসব ল্যাব ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ল্যাবগুলো চালু করতে এখন নতুন প্রকল্প নেওয়ার কথা ভাবছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এসব ল্যাবে করোনাসহ ২৫ ধরনের ভাইরাস শনাক্ত করার সুযোগ আছে। কিন্তু করোনা মহামারি শেষ হওয়ার পর এগুলো যথাযথভাবে ব্যবহার করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তখন কোনো পরিকল্পনা জানানো হয়নি মাঠ পর্যায়ে। ফলে আনুমানিক ২১১ কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্র অব্যহৃত থেকে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।
সারাদেশে সমকালের প্রতিনিধিরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, অনেক ল্যাব স্থাপনের পর চালু করা হয়নি। কয়েকটি ল্যাবের যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। ফলে একদিকে রোগীর ভোগান্তি বাড়ছে, অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে গিয়ে কয়েক গুণ টাকা গুনতে হচ্ছে।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর ‘সচল এনবিআর, নেতারা বদলি আতঙ্কে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ এক সপ্তাহের উত্তেজনা, কর্মবিরতি ও প্রশাসনিক টানাপোড়েন শেষে আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রাজস্ব সংগ্রহের শেষ দিনে একদিকে যেমন সচল হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের প্রধান কাস্টম হাউজগুলো, তেমনি দায়িত্বে ফিরেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এই প্রেক্ষাপটে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানালেন তার প্রত্যাশার কথা-আগামীর এনবিআর যেন আর কখনো এমন অচলাবস্থার মুখে না পড়ে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিলেন তিনি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করছি, ভবিষ্যতে এমন সমস্যায় আর পড়তে হবে না। সবাই যদি অতীতের মতো আন্তরিকতা ও দক্ষতা নিয়ে কাজ করে, তবে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব।’
তিনি জানান, সোমবার সকাল পর্যন্ত চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি। আরো কিছু রাজস্ব জমা হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত হিসাব পেতে ২-৩ সপ্তাহ সময় লাগবে, তবে আমরা আশাবাদী যে গত বছরের তুলনায় রাজস্ব আদায় বেশি হবে।’ তবে তিনি স্বীকার করেন, গত কয়েক দিনের অচলাবস্থার কারণে রাজস্ব সংগ্রহের গতি কিছুটা ধীর হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি, যা পরে সংশোধন করে ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘সবাই যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে, তাহলে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন নয়।’
নয়া দিগন্ত
‘জুলাই ঘোষণা শিগগিরই: স্থগিত হতে পারে সংবিধান, পরিবর্তন আসতে পারে সরকারে’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, জুলাই মাসের শুরুতেই ঘোষিত হতে পারে জুলাই ঘোষণা। এই ঘোষণায় ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সংবিধান পরিবর্তনের ওপর থাকবে বিশেষ গুরুত্ব। এর অংশ হিসেবে সংবিধান স্থগিত ঘোষণা হতে পারে। একই সাথে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পরিবর্তন ঘটতে পারে। সরকার ও কূটনৈতিক সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক পরিবর্তনে বিদ্যমান সংবিধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিবেচনায় ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনার বিদায়ের পরই সংবিধান স্থগিত করা প্রয়োজন ছিল। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ইমরান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক মনে করেন তখনই সংবিধান স্থগিত করে বিপ্লবী বা ঐকমত্যের সরকার গঠন করার ছিল মোক্ষম সময়। তবে জনগণের সর্বোচ্চ অভিপ্রায়ের ক্ষমতা সবসময় থাকে। আপাত দৃষ্টিতে সংবিধান স্থগিত করে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করা কঠিন মনে হলেও বৃহত্তর জনগণের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তা হতেই পারে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট এ বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষ একটা কনফিউশন বা দোটানার মধ্যে ছিল। যে কারণে আমরা এখনো সংবিধান মেনেই চলছি। বিপ্লব-উত্তর পরিবেশে তখন সংবিধান স্থগিত করে খুব সহজেই নতুন সরকার শপথ নিতে পারত। সেটি সম্ভবও ছিল। আমরা এখনো সংবিধান অনুসরণ করছি। সংবিধান স্থগিত বা স্ক্র্যাপ করা যায় না এটা যেমন ঠিক তেমনি জনগণের সহজাত ক্ষমতার অধীনে কোনো সরকার সংবিধান স্থগিত করতেই পারে। যেমন সিরিয়াতে হয়েছে। আসাদ সরকারের পরিবর্তনের পর বিপ্লবী সরকার গঠন হয়েছে।
সরকারের উচ্চপর্যায়ে পরিবর্তন হলে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বিদায় নিতে পারেন। ২০২৪ এর ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার স্বার্থে তাকে প্রেসিডেন্ট পদে রেখে দেয়া হয়। পরিবর্তনের ব্যাপারে দু’টি সম্ভাবনার কথা নানা সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে।
আজকের পত্রিকা
‘নির্বাচিত সরকারের জন্য অপেক্ষায় ভারত-চীন’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে শুরু করবে, এমন আশাবাদ ছিল সরকারের। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের সুযোগে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের পালে জোর হাওয়া লাগার আশা জাগে সরকারের অনেকের ভেতর। কিন্তু বাস্তবে দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির কারও সঙ্গেই সম্পর্ক তেমন এগোচ্ছে না।
তিন দেশের কূটনীতিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত শুরু থেকেই খুব প্রয়োজন না হলে দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল নেয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা আসার পর বাংলাদেশে সরকারের ভেতরে-বাইরে ধীরে হলেও নির্বাচনের হাওয়া বইছে। কয়েকটি দল এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারও শুরু করে দিয়েছে। এখন ভারতের পাশাপাশি চীনও নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা মনে করছেন, দিল্লি থেকে একের পর এক বিভ্রান্তিকর সংকেত আসছে। ভারতের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে ‘সম্পর্ক মেরামতের’ পরামর্শ দিচ্ছেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মাঝেমধ্যে ভালো ভালো কথা বলে। কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার উল্টো। পুশ ইন ও সীমান্ত হত্যা চলছে। নিয়মিত কিছু বৈঠক চেয়েও কোনো সাড়া মেলে না। এমন অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্পর্কের বরফ গলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘বহুমুখী চাপে ব্যবসায়ীরা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ-সংক্রান্ত কোনো সূচক বর্তমানে চালু নেই। ফলে দেশের সার্বিক ব্যবসার পরিবেশ কোন অবস্থায় আছে, তা মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্যবসার জন্য অনুকূল নয় বলেই ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন। শিল্প খাতে উৎপাদনের প্রধান উপকরণ গ্যাস ও বিদ্যুতে চরম সংকট বিরাজ করছে। ব্যাংকঋণের সুদহার বেড়ে গেছে। ভারতের সঙ্গে চলছে বাণিজ্যিক বিরোধ। মূল্যস্ফীতির কারণে স্থানীয় চাহিদাও সংকুচিত হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনের কারণে বাণিজ্য বিঘ্নিত হয়েছে। বহুমুখী চাপে রয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, টালমাটাল বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ বিশেষত ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, রপ্তানি, পণ্য সরবরাহ, মুদ্রা ও পুঁজিবাজার, জনজীবন এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বহুমুখী সমস্যা বিরাজ করছে। নাজুক বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। আন্দোলনের কারণে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ব্যবসা-বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর শুরু হয় আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত জটিলতা। শ্রমিক আন্দোলনের কারণে অনেকগুলো পোশাক কারখানা ও অন্যান্য কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়। আওয়ামী ঘরানার অনেক ব্যবসায়ীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আক্রমণ হয়। এতে অন্য ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এরপর ধীরে ধীরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। তবে অন্যান্য চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে থাকে। আওয়ামী লীগ সরকার সুদহারের ক্যাপ করে দিয়েছিল। বাণিজ্যিক ঋণের সুদহার ছিল ৯ শতাংশের মধ্যে। পরে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে নীতি সুদহার। এর সঙ্গে বেড়ে যায় বাণিজ্যিক ঋণের সুদহার।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘Police struggle as key top posts lie vacant’ অর্থাৎ ‘গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো খালি থাকায় হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১০ মাস ধরে ৪০০-এর বেশি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকায় অপরাধ দমন কার্যক্রমে পুলিশ চরম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, যা বাহিনীর কার্যক্ষমতাকে ব্যাহত করছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ৯টি এবং উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এর ৩৪টি পদসহ কমপক্ষে ৪২৪টি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া শূন্য পদের মধ্যে অতিরিক্ত ডিআইজি দুটি, অতিরিক্ত এসপির ৪৭টি এবং সহকারী এসপির ৩৩২টি পদ রয়েছে।
এছাড়া, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি এবং এসপি সহ ১১৯ জন শীর্ষ ও মধ্যম স্তরের কর্মকর্তাকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব ছাড়াই বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়েছে, যার অর্থ তাদের প্রধান কাজ হল অফিসে উপস্থিত হওয়া এবং নামেমাত্র কাজ করা।
আগের সরকারের আমলে দায়িত্বে থাকা অনেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্বিচারে গ্রেফতার, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক তুলে নেয়ার মাধ্যমে ভিন্নমত দমন চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
‘সংকট জুলাই সনদ নিয়ে’-এটি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, জুলাই সনদ নিয়ে নতুন করে সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঐক্য করার চেষ্টার ফল বৃহত্তর অনৈক্য সৃষ্টিও হতে পারে। এতে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণায় প্রভাব পড়তে পারে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তুত করা প্রস্তাব সব রাজনৈতিক দলের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হতে পারে। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে হওয়া ঐকমত্য কমিশনের অর্ধশতাধিক বৈঠক নিষ্ফল হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আলোচনার টেবিল সচল রয়েছে। তবে খোলা এই টেবিলে এখন তেমন আর আগ্রহ নেই রাজনৈতিক দলগুলোর। শুরুতে নির্ধারিত সময়ে সবাই সংলাপে অংশ নিলেও এখন কেউ আসছেন দেরিতে, আবার কেউ হাজিরা দিয়েই ছুটছেন বাইরে। ৩০টি রাজনৈতিক দল এ কমিশনের সংলাপে অংশ নিলেও মূলত তিন থেকে চারটি দলের মতের ওপর ফোকাসটাই বেশি। বলতে গেলে প্রায় সবাই তাকিয়ে রয়েছে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির ঐকমত্যের ওপর। কিন্তু মূল কয়েকটি ইস্যুতে তাদের মতপার্থক্য আকাশ-পাতালের মতো ফারাক।
শেষ কয়েকটি বৈঠকে ‘চাপ’ আর ‘বাধ্য’ এ দুটি শব্দ উচ্চারিত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। তাই শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে গুরুত্ব দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে কেউ কেউ রাজনৈতিক দলগুলোর কাউন্সিলের গল্প শোনাচ্ছেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাউন্সিল শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টায়। শুরুতে অনেক বক্তব্য শোনা যায়। দলীয় নেতারা মাইক নিয়ে ঝড় তুলে বলেন-এটা করব, সেটা করব। কিন্তু কাউন্সিল পাস হয় রাত আড়াইটায়। তখন কেউ ঘুমায়, কেউ ঝিমায়, আবার কেউ উধাও।