শেষের পাতা
হারুনের জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টার
৩০ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার
গ্রাহকের অর্থ পাচার ও আত্মসাতের দায়ে কারাগারে থাকা ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে এ বোর্ড গঠন করে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে হারুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু ও আইনজীবী মাইনুল ইসলাম। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। হারুনের আইনজীবী মাইনুল ইসলাম বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুন অর-রশীদ ৭৫ বছরের একজন বৃদ্ধ মানুষ।
তিনি বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। এই অবস্থায় তার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য আমরা এই আবেদন করেছিলাম। আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানিকালে বলেন, ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে গেলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ’র প্রিজন সেলে আসেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যেন প্রিজন সেল রিসোর্টে পরিণত হয়েছে। এই চর্চা বন্ধ করতেই হবে। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রায় ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১শে জুলাই কলাবাগান থানায় মামলা করেছিল দুদক। ২০১৬ সালের ২৪শে আগস্ট অভিযোগ গঠন করে আদালত আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেন। গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে গত ১২ই মে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ১২ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই মামলায় কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
‘স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের’ কথা বিবেচনায় নিয়ে আদালত তার সাজা কমিয়ে দেন বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায়ে ৪৫ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন। ২০০০ সালে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড নামে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি দিয়ে এই গ্রুপের যাত্রা শুরু। পরের বছরে বিমান পরিবহন, আবাসন, মিডিয়া, পাটকল, কোল্ড স্টোরেজ, বনায়নসহ বিভিন্ন খাতে ৩৪টি কোম্পানিতে ডেসটিনির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়। পরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে এ কোম্পানির বিরুদ্ধে। এরমধ্যে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল ডেসটিনি। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। তাতে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন।