ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শেষের পাতা

ইবিতে নবীন ছাত্রকে উলঙ্গ করে নির্যাতন

ইবি প্রতিনিধি
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার
mzamin

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলে এক নবীন ছাত্রকে র‌্যাগিং ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নির্যাতনের সময় তাকে উলঙ্গ করে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা, বারংবার রড দিয়ে আঘাত, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নাকে খত দেয়া হয় বলে জানায় ভুক্তভোগী। ৭ই ফেব্রুয়ারি হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে (গণরুম) এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফী এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাগর। তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে। গত ৭ই ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নং কক্ষে পরিচয়পর্বের জন্য ডাকে অভিযুক্তরা। কক্ষে যাওয়ার পর তার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করে অভিযুক্ত সিনিয়র শিক্ষার্থীরা। এ সময় ভুক্তভোগীকে গালিগালাজ, রড দিয়ে আঘাত করা, জোরপূর্বক উলঙ্গ করে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা ও নাকে খত দেয়া এবং আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বারবার রুম থেকে বের করে দেয়া হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় নির্যাতন চালানো হয় তার ওপর। এ ছাড়াও ভয় দেখিয়ে বারবার বিছানাপত্র বাইরে ফেলে দেয়া হয় বলে জানান ভুক্তভোগী। 

এদিকে এ ঘটনার ৪ দিন পরও প্রশাসনের নিকট কোনো অভিযোগ দেয়নি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী বলেন, গত বুধবার আমার সঙ্গে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে পরে হলের ছাত্রলীগের সিনিয়র ভাইয়েরা বিষয়টা মীমাংসা করে দেয়। এরপর অভিযুক্তদের হলে তেমন একটা দেখা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগকর্মী জানান, ঘটনার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় সংলগ্ন এলাকায় ডেকে নিয়ে ভুক্তভোগীর নিকট অভিযুক্তদের ক্ষমা চাইতে বলেন ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী হাসান হাফিজ ও নাসিম আহমেদ মাসুম। এ সময় অভিযুক্তদের চড়-থাপ্পড় দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন তারা। পরে ওইদিন রাতে ফের ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের হলে ডেকে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বিষয়টি মীমাংসা করে দেন ছাত্রলীগ কর্মী শাহিন আলম, মাসুম ও লিখন।

এদিকে র‍্যাগিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সাগর। বলেন, এ রকম কোনোকিছু ঘটেনি। আমি ওইদিন হলে ছিলাম না। তবে কথার একপর্যায়ে হলের পাশের রুমে ছিলেন বলে জানান সাগর। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ব্যক্তিগতভাবে কেউ অপরাধ করলে দায় সংগঠন নেবে না। বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। ঘটনাটি শোনার পর আমরা ভুক্তভোগী ছাত্রের পাশে দাঁড়িয়েছি। তাকে গণরুম থেকে অন্য রুমে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও সার্বিক সহায়তায় ভুক্তভোগীর পাশে রয়েছেন বলে জানান তিনি।

ছাত্র উপদেষ্টা ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, বিষয়টি আমি শুনিনি। তবে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে ভয় না পেয়ে সংশ্লিট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, আমি আনঅফিসিয়ালি বিষয়টা শুনেছি। পরে নিজের থেকেও খোঁজখবর নিয়েছি, হলের নেতাদের ডেকে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি মিউচুয়াল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ না আসলে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া আমার পক্ষে কঠিন। আমি কোনোকিছুর পরোয়া করবো না, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

পাঠকের মতামত

ব্যর্থ প্রশাসনের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। কুলাঙ্গার নির্যাতনকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার সহ শাস্তি প্রদান করা হোক। এদের কারনে বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি বন্ধ করা হোক।

Osman
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার, ৩:০৫ পূর্বাহ্ন

তাদেরকে মীমাংসা করার দায়িত্ব দিয়েছে কে? এ ধরণের অমানবিক নির্যাতন করার পর আবার মীমাংসা কিসের? ওদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। ওগুলার ছাত্রত্ব বাতিল এবং হল থেকে বহিষ্কারের সাথে সাথে অন্যায়ের শাস্তি হওয়া দরকার। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যাতে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এধরণের ঘটনা ঘটানোর সাহস কেউ না করে।বিচার দিলে মহা বিপদ, না দিলে বিচার দেওয়া হয় নাই, কতৃপক্ষ বিচার করতে পারে না। এটাই ভাল প্রান হারানোর চেয়ে/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি বন্ধ করা হোক।

Osman
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার, ৩:০৩ পূর্বাহ্ন

ব্যর্থ প্রশাসনের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। কুলাঙ্গার নির্যাতনকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার সহ শাস্তি প্রদান করা হোক। এদের কারনে বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

shahidul islam
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ৮:২৩ অপরাহ্ন

আল ফিকহ অনুষদের ছাত্ররা এসব করে? ধিক শতধিক

রাফিন আহমেদ
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি বন্ধ করা হোক।

Rafiqul Islam
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঘটনা খুবই ভয়াবহ ঘটনা। যারা ছাত্র তারা সবাই ইসলামী আদর্শে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। তারা যদি একজন ছাত্রকে উলঙ্গ করে নির্যাতন করে তাহলে তারা কোন আদর্শ শিক্ষা লাভ করছে সেখানে। এই প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে রইল। আর ঘটনার সাথে জড়িত নির্যাতনকারীদেরকে ছাত্রত্ব বাতিল করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট সোপর্দ করা হোক।

প্রকৌশলী মোঃ হানিফ
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ১:১২ পূর্বাহ্ন

কে বা করা মীমাংসা করলো? তাদেরকে মীমাংসা করার দায়িত্ব দিয়েছে কে? এ ধরণের অমানবিক নির্যাতন করার পর আবার মীমাংসা কিসের? ওদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। ওগুলার ছাত্রত্ব বাতিল এবং হল থেকে বহিষ্কারের সাথে সাথে অন্যায়ের শাস্তি হওয়া দরকার। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যাতে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এধরণের ঘটনা ঘটানোর সাহস কেউ না করে। আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে এটাকি জাতি ভুলতে পারবে?

Rafiqul Islam
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন

ব্যর্থ প্রশাসনের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। কুলাঙ্গার নির্যাতনকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার সহ শাস্তি প্রদান করা হোক। এদের কারনে বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

Moshiur Rahman
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ৮:১২ অপরাহ্ন

বিচার দিলে মহা বিপদ, না দিলে বিচার দেওয়া হয় নাই, কতৃপক্ষ বিচার করতে পারে না। এটাই ভাল প্রান হারানোর চেয়ে,

শেখ ফরিদ
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ৮:০২ অপরাহ্ন

All senior concers are just stupid ... for this reason such things continued ...

Sami
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ৪:৩৬ অপরাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status