ঢাকা, ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

মলের রাস্তায় যন্ত্রণা বা এনাল ফিশার হলে

অধ্যাপক ডা. এসএমএ এরফান
৩০ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার
mzamin

এনাল ফিশার (Anal Fissure)  এনাল ফিশার হলো মলদ্বারে ছোট, সংকীর্ণ অনেকটা ডিম্বাকৃতির কাটা বা ঘা। পয়নালী হলো রেকটাম এবং মলদ্বারের মধ্যে অবস্থিত একরকম নলের আকারের অংশ। মলদ্বারে মোচড় দিয়ে ব্যথা এবং রক্তপাত হলো এই রোগের প্রধান উপসর্গ। সব বয়সেই এনাল ফিসার হতে পারে। সাধারণত, এগুলোকে হেমোরইডস (অর্শ) বা পাইলসের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা হয়। ফিশার অ্যাকিউট (তীব্র) বা ক্রনিক (দুরারোগ্য) হতে পারে। অ্যাকিউট ফিশারের ক্ষেত্রে মলদ্বার কাগজ কাটার মতো ফেটে যায়, কিন্তু ক্রনিক ফিশারের ক্ষেত্রে পায়ুনালীর দেওয়ালের ত্বকে পিণ্ডের মতো তৈরি হয়।  লক্ষণ বা উপসর্গসমূহ  এই রোগের কমন লক্ষণ হলো ব্যথা এবং রক্তপাত। সাধারণত, মলত্যাগ করার সময় ব্যথাটা উপলব্দি বা শুরু হয় এবং এই ব্যথা অনেক সময় প্রায় এক ঘণ্টার জন্য থাকতে পারে। এতে চুলকানি এবং ফোলাভাবও অনুভব করা যায়।

বিজ্ঞাপন
সাধারণত ব্যথার তীব্রতা সহ্য করা যায়, কিন্তু কখনো কখনো অসহ্য ব্যথাও হতে পারে। 

পায়খানায়, টিস্যু পেপারে, বা মলদ্বারের চারপাশে লাল রক্তের দাগ দেখা যায়। মলদ্বারের চামড়ায় একটি পাতলা ফাটল দেখা যায়। দুইবার মলত্যাগ করার মাঝে এই লক্ষণগুলো সাধারণত আর দেখা যায় না।  কারণ সমূহ  কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য পায়ুনালীর মাধ্যমে শক্ত বা আকারের মল নামার ফলে এনাল ফিশার হয়। ইনফ্লেমমেটরি বাওয়েল ডিজিজ, যেমন ক্রোহন’স ডিজিজ এর ফলেও এনাল ফিশার হতে পারে। গর্ভাবস্থায় এবং সন্তানের জন্মের সময় ফিশার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও পাতলা পায়খানা এবং ডায়রিয়াও এই রোগের কারণ হতে পারে।  নির্ণয় এবং চিকিৎসা  চিকিৎসকরা গ্লাভস পরা আঙ্গুল ঢুকিয়ে অথবা একটি এনোস্কোপ (শেষ প্রান্তে ক্যামেরা লাগানো একটি পাতলা নল) ঢুকিয়ে পায়ুনালী পরীক্ষা করে অনেক সময় এরোগ শনাক্ত করে। আবার ফিশারের অবস্থান দেখেও এর কারণ সম্বন্ধে জানা যেতে পারে। কিছু কিছু এনাল ফিশার পিছনে বা সামনের তুলনায় ধারের দিকে অবস্থিত ফিশারগুলি ক্রোহন’স ডিজিজের কারণে হতে পারে। 

বর্তমানে সর্বাধুনিক পদ্ধতি  কোলনোস্কোপির ব্যবহার করেও  নির্ণয় করা হয়। দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এনাল ফিশার সহজেই চিকিৎসার মাধ্যমে পরিত্রাণ করা হয় আবার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিজেই ঠিক হয়ে যেতে পারে। গুরুত্বের বিষয় হলো তবে এটা হওয়ার আসল বা প্রকৃত কারণসমূহের চিকিৎসা করা না হলে এই রোগটি আবার হতে পারে। সাধারণত, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার এবং প্রচুর পরিমাণে পানি খেলে তা মলকে নরম করতে পারে এবং তা বেশি পরিমানে হতে পারে, যার ফলে আর কোনো ক্ষতি হয় না এবং ফিশার ঠিক হতে থাকে। এই রোগের চিকিৎসার জন্য খুব কম অস্ত্রোপচার করা হয়। 

তবে যদি চিকিৎসক মনে করে অপারেশন করতে হবে তখন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসার মধ্যে বটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশন এবং স্ফিঙ্কটেরটমি (মলদ্বারের স্পিঙ্কটারের সার্জারি) রয়েছে।  লেখক, পথিকৃৎ কলোরেক্টাল ও হেপাটোবিলিয়ারি সার্জন,বাংলাদেশ।  

চেম্বার: পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি. (শ্যামলী শাখা), মিরপুর রোড, মোহাম্মদপুর (কিডনি হাসপাতালের বিপরীতে)। হেল্পলাইন: ০১৮ ৬৫ ৫৫ ৫৫ ১১, ০১৮ ৬৫ ৫৫ ৫৫ ০০,  ফেইসবুক: Prof. Dr. SMA Erfan।

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status