শরীর ও মন
টাক সমাধানে চুলের বুনন প্রক্রিয়া
ডা. জাহেদ পারভেজ বড় ভূঁইয়া
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবারচুল পড়া বা টাকের সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে চমকপ্রদ ও আধুনিক পদ্ধতিটি হলো চুল প্রতিস্থাপন। এখানে মাথার এক অংশ থেকে চুল নিয়ে অন্য অংশে লাগিয়ে দেয়া হয়। আমাদের মাথার চুলগুলো সাধারণত দুভাগে ভাগ। মাথার সামনের অংশকে বলা হয় টেম্পোরারি জোন। এ অংশের চুলগুলো স্থায়ী নয়। অর্থাৎ বয়সের সঙ্গে বা কোনো শারীরিক জটিলতায় এ চুলগুলো ঝরে যায়। মাথার পেছন সাইড ও কানের দু’পাশের অংশকে বলে পারমানেন্ট জোন। এই অংশের চুল স্থায়ী। এরা জেনেটিক বা হরমোনালের কারণে সময়ের সঙ্গে ঝরে পড়ে না। এ জন্যই হরমোনজনিত কারণে টাকের সমস্যা হলে মাথার সামনের দিকের চুলগুলোই ঝরে পড়তে দেখা যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রেও চুল কমে যেতে থাকে। সামনের দিক থেকে পারমানেন্ট জোনের যেখান থেকে চুল বা ফলিকল তুলে আনা হয় তখন তাকে বলা হয় ‘ডোনার এরিয়া’।
হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট কীভাবে করা হয়?
হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট একটি সূক্ষ্ম সার্জারি। অপারেশনের আগে সব সময়ই রোগীর ওপর লোকাল অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ করা হয়। হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ করা হয় মাথার ংপধষঢ়-এ।
এর তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। এফইউটি পদ্ধতিতে মাথার পেছন থেকে ঝঈঅখচ চওড়ায় প্রায় আধা ইঞ্চি পরিমাণ কেটে চামড়াসহ তুলে আনা হয়। সেখান থেকে ফলিকল কেটে বের করে আনা হয়
কৃত্রিমভাবে। সে ফলিকল ইনজেকশন পুশ করে লাগানো হয় মাথার সামনের অংশে। এ পদ্ধতিতে ৪ ঘণ্টায় প্রায় ২০০০ চুল লাগানো যায়। হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টে এফইউটি পদ্ধতিটি ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে। কারণ এ পদ্ধতিটিতে তুলনামূলক জটিলতা বেশি। মাথার পেছনে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয় সেটি সেলাই করা হয় এবং তা শুকাতে প্রায় ১০ দিন লেগে যায়। এফইউই (ঋটঊ) পদ্ধতিতে হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য ব্যবহার করা হয় একটি মাইক্রোমটর। এই মাইক্রোমটর দিয়ে ‘ডোনার এরিয়া’ থেকে প্রতিটি চুলকে আলাদা করে তুলে আনা হয়। এতে একটি পাঞ্চ থাকে, যা দিয়ে একটি একটি করে চুল তুলে আবার লাগিয়ে দেয়া হয়।
‘ডিএইচআই’ই হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের সবচেয়ে আধুনিক পদ্ধতি। চুল প্রতিস্থাপনে এ পদ্ধতিতে হ্যান্ড পাঞ্চ ব্যবহার করে প্রতিটি চুল হাত দিয়ে তোলা হয়। যদিও হাত দিয়ে করা হয় বলে সময় বেশি লাগে। তবে কোনো কাটাছেঁড়া বা মাইক্রোমটরের ব্যবহার নেই বলে এতে জটিলতা কম।
কতো দিনে ফল পাওয়া যাবে: প্রতিস্থাপিত চুল কিছুদিন পর ঝরে গিয়ে সেখানে পুনরায় চুল গজাতে শুরু করে। ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে চুল গজানো শুরু হয়। সে হিসেবে আপনি এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের সুবিধাগুলো পেতে শুরু করবেন। একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি, ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরবর্তী সাধারণত ১ বছরের জন্য ফিনেসটেরাইড জাতীয় খাবার ও ওষুধ ও মিনক্সিডিল জাতীয় লাগানোর ওষুধ দেয়া হয়! সঙ্গে পিআরপি থেরাপি অনেক বেশি ভালো ফল দেয়!
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, চর্ম, যৌন ও এলার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।
চেম্বার: ডা. জাহেদ’স হেয়ার অ্যান্ড স্কিনিক
সাবামুন টাওয়ার বিল্ডিং (ষষ্ঠতলা), পান্থপথ মোড়, ঢাকা। ০১৭৩০৭১৬০৬০